যুক্তরাষ্ট্রে শুরু, গায়ানায় উদ্বোধন

প্রকাশ | ০২ জুন ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
অপেক্ষার প্রহর শেষ। এবার মাঠে লড়াইয়ের পালা। দুই বছর পর আবার টি২০ আনন্দে মেতে উঠছে ক্রিকেট বিশ্ব। বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে টেক্সাসে সহ-আয়োজক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে টি২০ বিশ্বকাপ। আর বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাপুয়া নিউগিনি। যুক্তরাষ্ট্র এবার ধুম-ধারাক্কা টি২০ বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক। মূল আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যুক্তরাষ্ট্র সহ-আয়োজক হলেও প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে তাদের নামটিই সবার মুখে মুখে। মনে হবে যুক্তরাষ্ট্রই একক কিংবা মূল আয়োজক, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সহ-আয়োজক। এ-ই প্রথমবারের মতো ক্রিকেটের কোনো বৈশ্বিক আসর অনুষ্ঠিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। সেখানকার টাইম জোনের সঙ্গে এই উপমহাদেশের টাইম জোনের বিশাল পার্থক্য রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের যেদিন বিশ্বকাপের পর্দা উঠছে বাংলাদেশে সেটা হয়ে যাচ্ছে পরদিন। একই সঙ্গে বিশ্বকাপ চলবে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ফলে দেখা যাবে কোনো ম্যাচ বাংলাদেশ সময় রাত এমনকি মধ্যরাতেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশ্বকাপের উদ্বোধন যুক্তরাষ্ট্রে হচ্ছে না। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে টেক্সাস থেকে ৩ হাজার ২৩৯ মাইল দূরের শহর ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানায়। যেখানে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিট) নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনির মুখোমুখি হবে উইন্ডিজ। এই ম্যাচের আগে হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে স্টেডিয়ামের গেট খুলে দেওয়া হবে। আর ম্যাচ শুরু হওয়ার আধাঘণ্টা আগ পর্যন্ত চলবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আকর্ষণীয় কিছু থাকছে না। পোস্টার দেখে যা মনে হচ্ছে তাতে কয়েকজন ডিজের গান গাওয়া ছাড়া আর কিছুই সম্ভবত হচ্ছে না উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। গত বছর ভারতের মাটিতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে ছিল না উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও কম হয়নি। বছর পেরিয়ে এবার যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে হতে চলেছে টি২০ বিশ্বকাপের নবম আসর। এবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থাকছে, তবে সেটি এক ম্যাচ পর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জানা না গেলেও কারা কারা পারফর্ম করবেন সেটা জানা গেছে। উইন্ডিজের ম্যাচের আগে পারফর্ম করবেন একাধিক ডিজে। তাদের মধ্যে ডেভিড রাডার, রবি বি, এরফান আলভেস ও আল্ট্রা। টি২০ বিশ্বকাপের অফিসিয়াল ব্রডকাস্টারের তালিকাভুক্ত টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে দেখা যাবে। বিশেষ করে স্টার স্পোর্টস-১, স্টার স্পোর্টস-১ এইচডি, পিটিভি স্পোর্টস ও টেন স্পোর্টস। এছাড়া আইসিসি টিভিতেও দেখা যাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্র্রচার। আগের বার অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া ২০২২ টি২০ বিশ্বকাপ জিতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আসর শুরু করছে ইংল্যান্ড। তবে এবার তাদের এক উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে, কারণ এবারের আসরে অংশ নিতে যাচ্ছে রেকর্ড সংখ্যক দল। প্রথমে গ্রম্নপ পর্বের খেলা যা চলবে ১৮ জুন পর্যন্ত। এ সময় প্রতিদিন অন্তত একটি ও কখনো কখনো দুই বা তিনটি করে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচগুলো সাধারণত শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৫টা, সাড়ে ৬টা, রাত সাড়ে ৮টা, সাড়ে ৯টা, রাত ১১টা ও রাত ১টা থেকে। আলাদা টাইম জোন বলে কথা। এরপর সুপার এইট পর্ব, যা চলবে ২৫ জুন পর্যন্ত। এ সময়ও বেশির ভাগ দিন দু'টি করে ম্যাচ। তবে খেলার সময়সূচি ভোর সাড়ে ৬টা আর রাত সাড়ে ৮টাতেই নির্দিষ্ট থাকবে। দু'টি সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে একই দিন ২৭ জুন। আর ফাইনাল হবে শনিবার, ২৯ জুন বার্বাডোজে সকাল সাড়ে ১০টায়, যা বাংলাদেশ সময় আসলে রাত সাড়ে ৮টা। যুক্তরাষ্ট্রে এ-ই প্রথম ক্রিকেটের কোনো আইসিসি ইভেন্ট হচ্ছে। মোট ৫৫টি ম্যাচের মধ্যে ১৬টি অনুষ্ঠিত হবে এখানকার তিনটি শহরে। ফ্লোরিডার সেন্ট্রাল ব্রোওয়ার্ড পার্ক ও ব্রোওয়ার্ড কাউন্টি স্টেডিয়াম (৪০ হাজার ধারণক্ষমতা), নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশন্যাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম (৩৪ হাজার ধারণ ক্ষমতা) ও টেক্সাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে (১৫ হাজার ধারণক্ষমতা) হবে ম্যাচগুলো। এর মধ্যে নিউইয়র্কের স্টেডিয়ামটা বিশ্বকাপের জন্য তৈরি করা, যেখানে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড থেকে পিচ এনে বসানো হয়েছে ও অস্থায়ী কিছু আসন বসানো হয়েছে গ্যালারিতে। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছয়টি ভেনু্যতে অনুষ্ঠিত হবে বেশির ভাগ ম্যাচ। অ্যান্টিগা ও বারবুডা, স্যার ভিভিয়ান রিচার্ড স্টেডিয়াম (১০ হাজার ধারণক্ষমতা), কেনসিংটন ওভাল (২৮ হাজার ধারণক্ষমতা), প্রভিডেন্স স্টেডিয়াম (২০ হাজার ধারণক্ষমতা), ড্যারেন স্যামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম (১৫ হাজার ধারণক্ষমতা), সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড প্রানাডাইন্স, অ্যারন্স ভেল পেস্নয়িং ফিল্ড (১৮ হাজার ধারণক্ষমতা) ও ব্রায়ান লারা ক্রিকেট একাডেমি (১৫ হাজার ধারণক্ষমতা)।