সালামের অপসারণ চান সাবেক ফুটবলাররা

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
জাতীয় প্রেস ক্লাবে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগ দাবি করে বক্তব্য রাখছেন সাবেক ফুটবলার আব্দুল গাফফার -ওয়েবসাইট
গত বছরের ১৪ এপ্রিল বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ফিফা। এরপর সাবেক ফুটবলাররা বাফুফের শীর্ষ কর্মকর্তা সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগ দাবি করেছিলেন। এক বছর পর ফিফা আবার সোহাগের নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোসহ বাফুফের কয়েকজন স্টাফ এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে জরিমানা করেছে। তাই আবারও সাবেক ফুটবলাররা বাফুফে থেকে সালাউদ্দিন-সালাম মুর্শেদীর অপসারণ চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি তোলেন সাবেক তারকা খেলোয়াড়রা।  'ঘোর অমানিশায় দেশের ফুটবল, দুর্নীতিবাজ ও ব্যর্থ বাফুফে কর্মকর্তাদের অপসারণ চাই' নামক ব্যানারে সাবেক ফুটবলাররা একত্রিত হয়েছিলেন। আব্দুল গাফফারের সঞ্চালনায় সেখানে উপস্থিত ছিলেন শামসুল আলম মঞ্জু, আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, আবু ইউসুফ, মো. সুলতান, কাজী আনোয়ার, সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির, আরমান মিয়া ও বিপস্নব ভট্টাচার্য। উপস্থিত প্রায় সবাই বাফুফের নানা অসঙ্গতি ও সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফিফা রিপোর্টে ফেডারেশন কর্মকর্তাদের ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরেছেন। সাবেক জাতীয় ফুটবলার আব্দুল গাফফারই মূলত এই সম্মেলনের আয়োজক। এমন আয়োজনের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমরা এখন অনেকে ব্যবসায়ী, কেউ রাজনীতিবিদ আবার কেউ প্রবাসী। সবার পরিচয়ই ফুটবলার হিসেবে। ফুটবল ফেডারেশনের দুই শীর্ষ ব্যক্তি সাবেক ফুটবলার, অথচ আমাদের ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তা ফিফার জরিমানায় পড়ছে এবং স্টাফরা নিষিদ্ধ হচ্ছে, যা অত্যন্ত লজ্জার ও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। আমরা এর প্রতিবাদস্বরূপ এখানে একত্রিত হয়েছি। তারা নৈতিকভাবে পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। ফুটবলের স্বার্থে তাদের সরে যাওয়া উচিশ, এটাই আমাদের দাবি।' ফিফার অর্থে কেনাকাটায় অনিয়ম নিয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। একই ঘটনায় সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর শুধু জরিমানা হওয়ায় খানিকটা বিস্মিত সাবেক তারকা ফুটবলাররা।' সালাম মুর্শেদীর ফিফার রিপোর্টে ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের নামও এসেছে। তাই সালাউদ্দিনের এক সময়ের সতীর্থ আশরাফ উদ্দিন চুন্নুর কাঠগড়ায় সভাপতিও, 'ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে তাকেও এর দায় নিতে হবে। দায় হিসেবে পদত্যাগ করা উচিত।' সালাউদ্দিন-সালামের সতীর্থ ফুটবলার ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী প্রজন্মের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সাবেক জাতীয় তারকা ফুটবলার আরমান মিয়া বলেন, 'আমরা গত বেশ কয়েক বছর ধরেই বাফুফের অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলছি। আমাদের কথা কেউ কর্ণপাত করেনি। এখন স্বয়ং ফিফাই বলছে বাফুফের অনিয়মের বিষয়গুলো। এটা আমাদের ফুটবল সমাজ ও দেশের জন্য খুবই লজ্জার।' সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির এর সঙ্গে যোগ করে বলেন, 'আমরা যখন খেলতাম তখন বাংলাদেশেরর্ যাংকিং অনেক ভালো ছিল। সালাউদ্দিন ভাইয়ের নেতৃত্বে ১৬ বছর দেশের ফুটবলে অবস্থা ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। এখন ১৮৪ নম্বরে, এক সময় দু'শোর কাছাকাছি ছিল। ফলে ফুটবল দিনকে দিন নিচে নামছে, তারা উন্নয়ন করতে ব্যর্থ। তাদের হাতে ফুটবল আর নিরাপদ নয়।'  ফুটবলসহ অনেক ফেডারেশনের নির্বাচনের ফলাফলের নিয়ন্ত্রক জেলা-বিভাগীয় সংগঠক পরিষদ ফোরাম। এরা যাদের পক্ষে থাকে তারাই নির্বাচনে জয়লাভ করে। অনেক জেলায় ফুটবল হয় না এবং জাতীয় পর্যায়েও অনেক জেলা অংশগ্রহণ করে না। এরপরও ভোটের সময় ঠিকই থাকে, এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে। ফুটবলাররা জানান, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো জেলা যদি দুই বছর জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ না করে তাহলে তারা ভোটাধিকার পাবে না। গঠনতন্ত্রে থাকলেও প্রয়োগ নেই। ফুটবল ফেডারেশন ২১ জনের নির্বাহী কমিটি হলেও সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের হাতেই মূল ক্ষমতা। তার ঘনিষ্ঠ দুই-তিনজন ফেডারেশনের নীতি-নির্ধারক হিসেবে কাজ করেন। বাকিরা থাকেন একেবারে অজ্ঞাত। এদের নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন গাফফার, 'ফেডারেশন সালাউদ্দিন ও তার দুই একজন লোকই চালায়। কমিটির অনেকে অনেক কিছু জানে না। আমাদের ফুটবলার ইলিয়াস, রুপু অনেকেই আছেন তারা কিছু বলতে পারেন না, তাও থাকেন। মুন একমাত্র প্রতিবাদ করে সরে এসেছে।'