স্টুয়ার্টের হ্যাটট্রিকে আবাহনীর অবিশ্বাস্য জয়! নেমেই গেল ব্রাদার্স ইউনিয়ন

প্রকাশ | ২৬ মে ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে রানার্স আপ হওয়ার দৌড়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডানের মধ্যে। শনিবার গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মণি স্টেডিয়ামে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৩-১ গোলে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে হারিয়ে দিয়েছে। তবে মুন্সীগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে অবিশ্বাস্য এক জয় পেয়েছে ঢাকা আবাহনী। তারা চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচটি শেষের দশ মিনিটে হ্যাটট্রিক করে ঢাকা আবাহনীকে ৩-২ গোলে জিতিয়ে দেন কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। এতে আবাহনী-মোহামেডানের ৩২ পয়েন্ট করে হলো। দুই দলেরই একটি করে ম্যাচ বাকি রয়েছে। অন্যদিকে শনিবার রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। আর এই হারে ব্রাদার্সের অবনমন নিশ্চিত হয়ে গেল। তারা নেমে গেল চ্যাম্পিয়ন্সশিপ লিগে। কারণ ১৩ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে থাকা রহমতগঞ্জকে কোনোমতেই আর পেছনে ফেলা সম্ভব নয় ব্রাদার্সের পক্ষে। শনিবার গোপালগঞ্জে ম্যাচের ১৮ মিনিটে জায়েদের দূরপালস্নার শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বল ফিক্সড করেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন। ২০ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে রাজিবের ক্রসে বক্সে বল পেয়ে মাথা ছুইয়েছিলেন সতীর্থ ফুটবলার। বল অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। ২৬ মিনিটে জামালের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার হিগরলেটের জোড়ালো শট বার ছুঁয়ে বাইরে চলে যায়। ৩৩ মিনিটে মোজাফফারভের জোড়ালো শট প্রতিহত করেন প্রীতম। ৩৫ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে বল নিয়ে মোহামেডানের বক্সে ঢুকে শট নিয়েছিলেন মিডফিল্ডার কৌশিক বড়ুয়া। তবে গোল করতে পারেননি। ৩৬ মিনিটে ম্যাচে লিড নেয় মোহামেডান। ডানপ্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন মালীর ফরোয়ার্ড মোহামেডান অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতে (১-০)। প্রথমার্ধে আর সেই গোলটি শোধ করতে পারেনি শেখ জামাল। তাই এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে গেছে সাদা-কালোরা। ৫৩ মিনিটে দারুণ এক গোল উপভোগ করেছে গোপালগঞ্জের দর্শকরা। ডানপ্রান্ত থেকে ছোট করে বল বাড়ান শাহরিয়ার ইমন। বল বুঝে পেয়ে বক্সের ডানপ্রান্ত থেকে দর্শনীয় ক্রস উপহার দেন সুলেমান দিয়াবাতে। চলন্ত বলে পা ছুঁইয়ে দেন নাইজেরিয়ান ইমানুয়েল সানডে। বল ডান পোস্টে লেগে বাঁক খেয়ে ঢুকে যায় জামালের জালে (২-০)। ৫৮ মিনিটে জামালের মিডফিল্ডার আবদুলস্নাহর দূরপালস্নার শট চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। ৬৪ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে জামালের বক্সে ঢুকে পড়েন সুলেমান দিয়াবাতে। গোলের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। তবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের বাধার মুখে শট নিতে পারেননি। ৭০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে হিগর লেটে বল বাড়িয়েছিলেন সতীর্থ উজবেক মিডফিল্ডার সায়মনভের উদ্দেশে। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ৯০ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে জামালের বক্সে ঢুকে লক্ষ্যভেদ করেন সুলেমান দিয়াবাতে (৩-০)। ৯০+১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমান জামালের খোলমাতভ (৩-১)। এই গোলেই শেষ হয় ম্যাচ। মুন্সীগঞ্জে দুই আবাহনীর লড়াইয়ে ম্যাচের ২০ মিনিটে মান্নাফ রাব্বির গোলে লিড নেয় চট্টগ্রাম আবাহনী (১-০)। ৬৭ মিনিটে রায়হান হাসানের পাসে বল পেয়ে গোল করেন চট্টলার ফরোয়ার্ড রিয়াজ উদ্দিন সাগর (২-০)। ৮০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কিছুটা কমান ঢাকা আবাহনীর সেন্ট ভিনসেন্টের ফরোয়ার্ড কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট (২-১)। ৯০ মিনিটে স্টুয়ার্ট আরও একটি গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন। ইনজুরি টাইমে ৯০+৩ মিনিটে গোল করে নিজের হ্যাট্রিক পূর্ণ করে আবাহনীকে চাপমুক্ত করেন স্টুয়ার্ট। অবিশ্বাস্য এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আকাশি-নীলরা। রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর মাত্র ৬ মিনিটের মাথাতেই এলিটা কিংসলের গোলে লিড নেয় ব্রাদার্স ইউনিয়ন (১-০)। ৯ মিনিটে বালাভনিচের জোগান দেওয়া বলে গোল করে শেখ রাসেলকে সমতায় ফেরান ফরোয়ার্ড সুমন রেজা (১-১)। ১১ মিনিটে উজবেক মিডফিল্ডার উমরজানভ গোল করলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় শেখ রাসেল। ১৮ মিনিটে এলিটা কিংসলে গোল করে আবারও ব্রাদার্সকে সমতাতে ফেরান (২-২)। তবে ৩১ মিনিটে রাসেলের ওমরজানভের পাসে মিডফিল্ডার চন্দন রায় গোল করাতে আবারও পিছিয়ে পড়ে ব্রাদার্স (৩-২)। এ ব্যবধানেই জয় পায় রাসেল।