২০২১ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমন হওয়া ব্রাদার্স ইউনিয়ন দুই মৌসুম পর ফিরেছিল ঘরোয়া ফুটবলের শীর্ষ লিগে। তবে উঠেই আবার নেমে যাওয়ার সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে তারা। কাগজ-কলমে ব্রাদার্সের নিভু নিভু আশা বেঁচে থাকলেও বাস্তবে টিকে থাকা কঠিন। শুক্রবারই গোপীবাগের দলটির অবনমন নিশ্চিত হতো যদি মোহামেডানের বিপক্ষে জিতে যেত রহমতগঞ্জ। শেষ মুহূর্তে সোলেমান দিয়াবাতের গোলে ম্যাচ ড্র হওয়ায় অবনমন বিলম্ব হলো কমলা জার্সিধারীদের।
ঘরোয়া ফুটবলে এক সময় তৃতীয় শক্তি ছিল ব্রাদার্স। মোহামেডান-আবাহনীর রাজত্বের দিনে কেবল ব্রাদার্সই ছিল তাদের হুমকি। সেই ব্রাদার্স এখন নিজেদের ছায়া। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে নেমে যাওয়ার লজ্জা কাটিয়ে আবার ফিরলেও হুঁস ফেরেনি ক্লাবটির কর্মকর্তাদের। এই ক্লাবের একাধিক কর্মকর্তা বাফুফে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। অথচ তাদের ক্লাব খাবি খাচ্ছে মাঠে। বিন্দুমাত্র অনুশোচনার ছাপ নেই এসব কর্মকর্তার চোখেমুখে। তাঁরা নির্বিকার। ব্রাদার্স হারিয়ে ফেলছে তাদের সব ঐতিহ্য।
ব্রাদার্সের হাতে দুটি ম্যাচ-শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র আর পুলিশের বিপক্ষে। এই দুই ম্যাচ জিতলেও তারা টিকে থাকতে পারবে না যদি রহমতগঞ্জ বাকি দুই ম্যাচের একটি জিতে যায়। ব্রাদার্স আরও ৬ পয়েন্ট পেলে এবং রহমতগঞ্জ না জিতলেই কেবল টিকে যাওয়ার সুযোগ তাদের। ১৬ ম্যাচ শেষে সবার নিচে থাকা ব্রাদার্সের পয়েন্ট ৭, তাদের ওপরে থাকা রহমতগঞ্জের পয়েন্ট ১২।
১৬ ম্যাচে ব্রাদার্স গোল হজম করেছে ৬১টি। ব্যক্তিগত গোল বাড়ানোর জন্য ফরোয়ার্ডরা সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করছেন ব্রাদার্সকে। ১৬ গোল করে শীর্ষে থাকা আবাহনীর গ্রানাডিয়ান ফরোয়ার্ড স্টুয়ার্ট কর্নেলিয়াস ও ১৫ গোল নিয়ে তাঁর পেছনে থাকা মোহামেডানের মালির ফরোয়ার্ড সোলেমান দিয়াবাতে তো ব্রাদার্সকে দিয়েই গোলের ঝুলি মোটা করেছেন। স্টুয়ার্ট প্রথম পর্বে ব্রাদার্সের বিপক্ষে করেছিলেন ১ গোল, ফিরতি লেগে ৪ গোল। এ পর্যন্ত ১৬ গোলের ৫টিই এসেছে ব্রাদার্সের বিপক্ষে।
মোহামেডানের সোলেমান দিয়াবাতে গোল করেছেন ১৫টি। তাঁর জন্যও গোলের খনি এই ব্রাদার্স। ৭ গোলই তিনি দিয়েছেন কমলা জার্সিধারীদের পোস্টে। প্রথম পর্বে করেছিলেন ২টি, ফিরতি লেগে ৫টি। ১৩ গোল নিয়ে তিনে থাকা বসুন্ধরা কিংসের ডরিয়েলটনেরও জোড়া লক্ষ্যভেদ আছে ব্রাদার্সের বিপক্ষে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত হ্যাটট্রিক হয়েছে চারটি। সবগুলোই হয়েছে ব্রাদার্সের বিপক্ষে। প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের বুরুন্ডির ফরোয়ার্ড ল্যান্ড্রি, দ্বিতীয়টি বাংলাদেশ পুলিশ এফসির কলোম্বিয়ান ফরোয়ার্ড এডিস গার্সিয়া, তৃতীয়টি মোহামেডানের মালির ফরোয়ার্ড সোলেমান দিয়াবাতে ও সবশেষ শুক্রবার আবাহনীর গ্রানাডিয়ান ফরোয়ার্ড স্টুয়ার্ট কর্নেলিয়াস।