এবারের পর আরেকটি টি২০ বিশ্বকাপ হবে ২০২৬ সালে। ততদিন পর্যন্ত মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ আর সাকিব আল হাসানের খেলা চালিয়ে যাওয়া কঠিন। অনেকের মতে, এবারই শেষ বিশ্বকাপ খেলতে চলেছেন এই দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। গোধূলী বেলায় এই দুই অভিজ্ঞ তারকাকে সুন্দর কিছু স্মৃতি উপহার দিতে চান বাংলাদেশশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
২০০৭ সালে একদম প্রথম বিশ্বকাপ থেকে এবার টানা ৯টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন সাকিব। গত বিশ্বকাপে জায়গা না পাওয়া মাহমুদউলস্নাহর এটি অষ্ঠম বিশ্বকাপ। ৩৭ পেরুনো সাকিব ও ৩৮ পেরুনো মাহমুদউলস্নাহর হয়ত এটাই শেষ কোনো বৈশ্বিক আসর।
মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার বিশ্বকাপের আগে হয় অফিসিয়াল ফটোসেশন। পরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে আসেন অধিনায়ক শান্ত ও প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সেখানে দুই অভিজ্ঞ তারকার শেষটা রাঙানো নিয়ে জানতে চাওয়া হয় শান্তর কাছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক জানান, দু'জনকে ভালো কিছু উপহার দিতে চান তারা। 'জানি না এটাই তাদের শেষ বিশ্বকাপ কিনা। এটা একটা ধারণা। আমরা যারা আছি, অপেক্ষাকৃত তরুণ, আমরা অবশ্যই চাইব, ওনারা এত লম্বা সময় ধরে খেলছেন, তাদের একটা ভালো স্মৃতি উপহার দিতে। ভালো একটা বিশ্বকাপ তাদের আমরা উপহার দিলাম, এটা অবশ্যই আমাদের দায়িত্ব।'
বাংলাদেশকে ভালো করতে হলে সাকিব-মাহমুদউলস্নাহর ভূমিকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। শান্তর অবশ্য দু'জনের কাছে বাড়তি কিছু চাওয়ার নেই। তিনি চান তারা যেন মেলে ধরেন নিজেদের অভিজ্ঞতার ভান্ডার, 'সাকিব ভাই, রিয়াদ ভাইয়ের (মাহমুদউলস্নাহ) কাছে বাড়তি কিছু চাই না। ওনারা যেভাবে পারফর্ম করছেন, তদের যার যে ভূমিকাটা আছে, সেটা যদি ওনারা করতে পারেন, তাহলেই দল অনেক উপকৃত হবে। আমি চাইব, ওনাদের যে অভিজ্ঞতা আছে, সেটা তারা দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে ছড়িয়ে দিন। আমাদের দলের যে ছোট ছোট জায়গাগুলোতে উন্নতির দরকার আছে, তাহলেই সেগুলোতে আমরা খুব ভালো করতে পারব।'
২০২১ বিশ্বকাপের অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ যখন ঘরে বসে দেখছিলেন বাংলাদেশকে, ক্যারিয়ারের শেষ বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। সেখান থেকেই যেভাবে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এবার ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপের দলে জায়গা করে নিলেন, তার ফিরে আসার সেই গল্প থেকে এখনকার অধিনায়ক শান্ত তরুণদের অনুপ্রেরণা নিতেই বললেন।
টি২০ বিশ্বকাপের সবগুলো আসরে খেলা মাত্র দু'জন ক্রিকেটারকেই দেখা যাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যারিবিয়ানে। রোহিত শর্মা ও সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদেরও নাম থাকতে পারত। কিন্তু এর আগে সব আসরে অংশ নেওয়া মাহমুদউলস্নাহর যে জায়গাই হয়নি ২০২২ টি২০ বিশ্বকাপে। ২০২১ বিশ্বকাপের অধিনায়ক যখন ঘরে বসে দেখছিলেন বাংলাদেশকে, ক্যারিয়ারের শেষ বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। সেখান থেকেই যেভাবে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এবার ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপের দলে জায়গা করে নিলেন।
শান্ত বলেন, 'রিয়াদ ভাই যেভাবে ফিরে এলেন এবং সব থেকে বড় কথা উনি এখন যেভাবে খেলছেন। উনার যে দায়িত্ব আছে, তা যেভাবে তিনি পালন করছেন, দল অনেক দূরে এগিয়ে যাচ্ছে। ৫, ৬ নম্বরে ব্যাটিং করছেন। ফিনিশিংয়ের দায়িত্ব পালন করছেন, এটা অবশ্যই আমাদের জন্য বাড়তি একটা সুযোগ যে আমরা ভালো স্কোর দাঁড় করাব। তরুণদের জন্য অবশ্যই অনুপ্রেরণার জায়গা এটা, যে কীভাবে এ রকম একটা পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসা যায়।'
ফিরে আসার পর মাহমুদউলস্নাহর ব্যাটিংয়ের ধরনেও পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। আগ্রাসনের মাত্রা বাড়িয়ে খেলতে দেখা যাচ্ছে তাকে। ২০২২ সালের এশিয়া কাপের পর দীর্ঘদিন টি২০ দলের বাইরে ছিলেন মাহমুদউলস্নাহ। এ বছরের মার্চে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই ফিরেছিলেন আবার। এরপর ৫ ইনিংসে ব্যাট করে ১৪৩ রান করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান, স্ট্রাইক রেট ছিল তার প্রায় ১৪৯। ব্যাটিং অ্যাপ্রোচও বদলে ফেলেছেন।