ডিপিএলের শেষ দিনে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের রেজাউর রহমান রাজা। দেশের লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এক ম্যাচে সর্বাধিক উইকেট নেওয়ার নজির গড়েছেন এই তরুণ।
রোববার ফতুলস্নার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে আগুন ঝরানো বোলিং করেন রাজা। ৬.৩ ওভার বল করেই ২৩ রানের খরচায় নিয়েছেন ৮টি উইকেট। এই বোলিং ফিগার দেশের লিস্ট 'এ' ক্রিকেটের ইতিহাসের সেরা। তার রেকর্ডগড়া বোলিংয়ে মাত্র ৭১ রানে গুটিয়ে যায় শেখ জামাল। ফলে ১৯৯ রানের বিশাল জয় পায় প্রাইম ব্যাংক।
লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এটিই বাংলাদেশি কোনো বোলারের সেরা বোলিং ফিগার। অবশ্য ১৪ রান কম দিলে বিশ্বরেকর্ডও গড়ে ফেলতে পারতেন প্রাইম ব্যাংকের এই পেসার। লিস্ট 'এ'তে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ডটি ভারতের শাহবাজ নাদিমের দখলে।
এর আগে এতদিন এই রেকর্ডটি ছিল ইয়াসিন আরাফাতের। ২০১৮ সালে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে গাজী গ্রম্নপ ক্রিকেটার্সের হয়ে খেলতে নেমে ৪০ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন এই পেসার। এদিন তাকে ছাপিয়ে নতুন কীর্তি গড়েন রাজা। সব মিলিয়ে লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এক ম্যাচে ৮ উইকেট নেওয়া ১৭তম বোলার তিনি।
প্রাইম ব্যাংকের রাজার তোপে ২৭১ রান তাড়ায় স্রেফ ৭১ রানে গুটিয়ে গেছে সাকিবের শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। তামিম-জাকিরদের জয় ১৯৯ রানের বড় ব্যবধানে।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) সুপার লিগের ম্যাচে ফতুলস্নায় টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় প্রাইম ব্যাংক। দলীয় ৫০ রানের মধ্যেই দুই ওপেনার শাহাদাত হোসেন দিপু ও তামিম ইকবালকে হারিয়ে কিছুটা বিপদেই পড়েছিল তারা। তবে এরপরই দলের হাল ধরেন অধিনায়ক জাকির হাসান ও মুশফিকুর রহিম। দুজনে মিলে ৩য় উইকেটে ১৩৩ রানের জুটি গড়েন। অবশ্য দুজনই অল্পের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন।
সাকিবের বলে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে ৯৫ বল মোকাবিলায় ৮৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন জাকির। ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস। এ ছাড়া ৯৪ বলে ৭৮ রান করা মুশফিক হাঁকান ৭টি চার ও ২টি ছক্কা। শেষদিকে ১০ বলে ২২ রানের ক্যামিও খেলেন হাসান মাহমুদ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে সবক'টি উইকেট হারিয়ে প্রাইম ব্যাংকের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭০ রান।
অন্যদিকে ১০ ওভার বল করে ৪২ রান খরচায় দুই উইকেট শিকার করেন সাকিব। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট শিকার করেন শফিকুল ইসলাম, আরিফ আহমেদ ও তাইবুর রহমানও।
দ্বিতীয় ইনিংসে শেখ জামালের দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৈকত আলিকে ফিরিয়ে প্রাইম ব্যাংককে দারুণ শুরু এনে দেন হাসান মাহমুদ। তবে এরপর রাজত্ব করেন কেবলই রাজা।
আক্রমণে এসে প্রথম বলেই ফজলে মাহমুদ রাব্বিকে ফেরান রাজা। ওই ওভারের শেষ বলে গোল্ডেন ডাক হয়ে ফেরেন সাকিব আল হাসান। পরের ওভারে এসে ফের দুই উইকেট তুলে নেন রাজা। প্রথমে বলে ক্যাচ দেন নুরুল হাসান সোহান। এক বল পর তাইবুর রহমানকে বোল্ড করেন রাজা। পরে রিপন মন্ডলকে ফিরিয়ে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন রাজা। এরপর শেখ জামালের বাকি তিন ব্যাটারকেও সাজঘরে পাঠিয়েছেন।
দিনের অপর ম্যাচে গাজী গ্রম্নপ ক্রিকেটার্সকে ৩ রানে হারিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ৪৭.৩ ওভারে ১৭৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা। তবে বোলারদের সৌজন্যে ৩২.১ ওভারেই গাজী গ্রম্নপকে অলআউট করে দেয় মোহামেডান।