ডিপিএলের সুপার লিগের শেষ ম্যাচ খেলতে নারায়ণগঞ্জে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেখানেই ঘটে গেছে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এক ভক্ত সেলফি তুলতে আসলে তার ওপরে ফুঁসে উঠেছেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য। অবশ্য তার পেছনে কারণও রয়েছে।
সোমবার সকাল ৯টায় খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে মাঠে নামে শেখ জামাল ও প্রাইম ব্যাংক। ভেজা আউটফিল্ডের কারণে ম্যাচটি শুরু হতে ৪০ মিনিট দেরি হয়।
ম্যাচ শুরুর আগে শেখ জামালের কোচ সোহেল ইসলাম ও প্রাইম কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলছিলেন সাকিব। সে সময়ে এক ভক্ত সাকিবের সঙ্গে সেলফি তোলার আবদার করলে তাকে নিষেধ করেন তিনি। কিন্তু সেই ভক্ত নিষেধ না শুনলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এ সময় হঠাৎ করেই এক দর্শক সেখানে ছবি তোলার আবদার নিয়ে আসেন সাকিবের কাছে। সাকিব কয়েকবার নিষেধ করেন ছবি তুলতে, কিন্তু নাছোড় বান্দা দর্শক তাতে পাত্তা দেননি। আবদার করতেই থাকেন। তখনই বাধে বিপত্তি।
এ সময় অনেকটা বাধ্য হয়েই তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন সাকিব। এক পর্যায়ে ওই ভক্তের মোবাইল কেড়ে নিয়ে চড় মারতে উদ্যত হন তিনি। অবশ্য নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারাননি সাকিব। চড় মারতে গিয়েও থেমে যান তারকা ক্রিকেটার। পরে সেই ভক্তকে অবশ্য মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়। সাকিবের এমন কান্ডের ভিডিও এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে সাকিবের সমালোচনা শুরু করেছেন। এর আগে সকালে স্টেডিয়ামের প্রবেশের সময়ও একবার মেজাজ হারান সাকিব। তখনো এক ভক্ত সেলফি তোলার জন্য ফোন নিয়ে এগিয়ে এলে সাকিব ফোন কেড়ে নিতে উদ্যত হন। শেষ পর্যন্ত যদিও সেখানে অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।
এদিকে পুরো ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা নিয়ে। জাতীয় দলের একাধিক তারকা আছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের খেলায়। তাদের ঠিক সামনে ভক্তদের এমন অবাধ বিচরণ নিয়ে প্রশ্ন আছে। চলতি ডিপিএলেই ফতুলস্নার মাঠে দর্শক ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকবার।
দর্শকরা জার্সি পরিহিত অবস্থায় এলে নিরাপত্তা কর্মীরাও চিন্তায় পড়ে যান তিনি আসলে খেলোয়াড় নাকি ভক্ত। মূলত সাকিব নিষেধ করা সত্ত্বেও সেই দর্শকের ছবি তুলতে চাওয়ায় চটে গিয়েছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার।
এ দিকে ভক্তদের ওপরে এভাবে ফুঁসে ওঠার ঘটনা এই প্রথম ঘটালেন না সাকিব। এর আগে একাধিকবার এমন কান্ডে খবরের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার কাজে ফরিদপুর গিয়েও এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন বাংলাদেশের পোস্টার বয়। তবে সাকিবকে দেখে নিজেদের যেন সংযত করতে ভুলে যান ভক্তরা। তাতে এই ক্রিকেটারের অবস্থা কিংবা পরিবেশ না বুঝেই অনেকেই ছবি তুলতে চান, কাছে আসেন। আর তাতেই বাধে বিপত্তি।
তবে ভক্তের ওপর মেজাজ হারানোর বিতর্কের ম্যাচেই আব্দুর রাজ্জাক ও মাশরাফি বিন মর্তুজার পর তৃতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে ৪০০ উইকেটের কীর্তিতে নাম লিখিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
সবার আগে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে ৪০০ উইকেট স্পর্শ করতে রাজ্জাকের লেগেছিল ২৬৯ ম্যাচ। এছাড়া মাশরাফির লেগেছিল ২৮৭ ম্যাচ। ম্যাচের হিসাবে সময়টা একটু বেশি লেগেছে সাকিবের। ৪০০ উইকেটের ক্লাবে নাম লেখাতে টাইগার অলরাউন্ডার খেলেছেন ৩০৮ ম্যাচ।