বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে জয়ের দেখা পেয়েছে পুলিশ ফুটবল ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। শনিবার রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে ফর্টিস এফসিকে ২-১ গোলে হারায় শেখ রাসেল। একই দিনে ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে পুলিশ ফুটবল ক্লাব ২-০ গোলে হারায় রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে।
শনিবার রাজশাহীতে শেখ রাসেল-ফর্টিসের লড়াইটা হয়েছে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ম্যাচের ৮ মিনিটে প্রথম কর্নার পায় শেখ রাসেল। তবে সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ১৯ মিনিটে বক্সের মাথা থেকে ফর্টিসের ইউক্রেনের মিডফিল্ডার ভ্যালেরির শট ফিরিয়ে দেন শেখ রাসেলের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক মিতুল মার্মা। ২৫ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে আক্রমণের শুরু হয় ফর্টিসের। বক্সের কাছেই বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন পা ওমর বাবু। তবে তার দুর্বল শট সহজেই আয়ত্তে নেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক। ম্যাচের ৩২ মিনিটে ভ্যালেরির জোগান দেওয়া বলে বক্সের মাথা থেকে বাঁ পায়ের দারুণ শটে লক্ষ্য ভেদ করে ফর্টিসকে এগিয়ে দেন গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড পা ওমর বাবু (১-০)। তবে গোল হজমের মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যেই তা শোধ করতে সক্ষম হয় শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। বক্সের বেশ কাছেই ডান প্রান্তে ফ্রি কিক পায় রাসেল। জাপানি মিডফিল্ডার কোদাই লিদার ফ্রি কিক বক্সে পেয়ে হেড করে ফর্টিসের জাল কাঁপান রাসেলের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড গানিও আতান্দা (১-১)। ৪২ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে কোদাই লিদার কর্নার বক্সে পেয়ে হেড নেন সতীর্থ ফুটবলার। তবে বল জালে পাঠাতে পারেননি। ৪৫ মিনিটে বক্সের মাথা থেকে দিদারুল আচমকা শট নেন। কিন্তু প্রস্তুত ছিলেন মিতুল, তাই কোনো বিপদ ঘটেনি রাসেলের। দুই দলই অসংখ্য গোলের সুযোগ সৃষ্টি করলেও প্রথমার্ধ শেষ হয়েছে সমতাতেই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দারুণ একটা সুযোগ পেয়েছিল ফর্টিস। বক্সে বল পেয়ে হেড নিয়েছিলেন গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড ওমর সার। তবে অল্পের জন্য গোল হয়নি। ৫২ মিনিটে বল নিয়ে ফর্টিসের বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন কোদাই লিদা। তবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের বাধার মুখে শট করে সফল হতে পারেননি। ৬২ মিনিটে পর পর দু'টি কর্নার পেয়েও গোল আদায় করতে পারেনি ফর্টিস। ৬৫ মিনিটে রাসেলের আক্রমণ রুখে দিতে গিয়ে নিজেদের জালেই ঠেলে দেন ফর্টিস এফসির ডিফেন্ডার আব্দুলস্নাহ ওমর (২-১) (আত্মঘাতী)। ইনজুরি টাইমে আক্রমণের বন্যা বইয়ে দিয়েও শেষ পর্যন্ত আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ফর্টিস। তাই প্রথম পর্বে এই দুই দলের লড়াইটি গোলশূন্য (০-০) ড্র হলেও দ্বিতীয় পর্বে ম্যাচ জিতে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। এই জয়ে অবশ্য পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানেই থাকল রাসেল।
অন্যদিকে ময়মনসিংহে পুলিশ ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে প্রায় পুরো ম্যাচ ভালো খেলেও শেষের ২০ মিনিটে দুই গোল হজম করে হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রহমতগঞ্জ। পুলিশকে ৭১ মিনিট পর্যন্ত আটকে রেখেছিল জায়ান্ট কিলারখ্যাত দলটি। ৭২ মিনিটে মিডফিল্ডার শাহেদ হোসেন মিয়ার গোলে লিড নেয় পুলিশ (১-০)। ৮৩ মিনিট ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পুলিশের ভ্যানিজুয়েলার ফরোয়ার্ড অ্যাডওয়ার্ড মরিলেস্না (২-০)। মাত্র দশ মিনিটের ব্যবধানেই দুই গোল হজম করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একটি গোলও শোধ করতে পারেনি রহমতগঞ্জ। তাই প্রথম পর্বে পুলিশের সঙ্গে গোলশূন্য (০-০) ড্র করলেও দ্বিতীয় পর্বে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে পুরান ঢাকার দলটিকে।