মোহামেডানকে রুখে দিল পুলিশ
প্রকাশ | ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের (বিপিএল) দ্বিতীয় পর্বে টানা তিন ম্যাচে জয়ের পর পয়েন্ট হারালো মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। শনিবার ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে সাদা-কালোদের সঙ্গে গোলশূন্য (০-০) ড্র করেছে পুলিশ ফুটবল ক্লাব। একই দিনে রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে হেরেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। এই ম্যাচে জোড়া গোল করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড পল সেন।
প্রথম পর্বেও পুলিশ-মোহামেডানের লড়াইটা হয়েছিল দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। ঐ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে পুলিশকে হারিয়েছিল সাদা-কালোরা। শনিবার ময়মনসিংহে এই দুই দলের দ্বিতীয় দেখা হয়। যে ম্যাচটিতেও হয়েছে দারুণ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। ম্যাচের ১২ মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে দারুণ একটা পাস বাড়িয়ে দেন মোহামেডানের অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতে। বাঁ প্রান্তে বল নিয়ে পুলিশের বক্সে ঢুকতেও যাচ্ছিলেন শাহরিয়ার ইমন। তবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের বাধার মুখে আর সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ১৩ মিনিটে সুযোগ এসেছিল পুলিশেরও, ভেনেজুয়েলার ফরোয়ার্ড অ্যাডওয়ার্ড মরিলেস্নার শট চলে যায় বারের উপর দিয়ে। ১৯ মিনিটে আবারও গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট হয় পুলিশের। তিন দফা পোস্ট লক্ষ্য করে শট নিয়েও গোল পায়নি তারা। ২২ মিনিটে শাহেদ মিয়ার দূরপালস্নার শট চলে যায় মোহামেডানের বারের উপর দিয়ে। পরের মিনিটেই কিরমানি বক্সে বল পেয়ে শট নিলেও ভাঙতে পারেননি মোহামেডানের রক্ষণ। ৪১ মিনিটে বক্সের কয়েক গজ দূরেই ফ্রিকিক পায় মোহামেডান। উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফফারভের স্পট কিক ফিরে আসে পুলিশের মানব দেয়ালে লেগে। ৪৫ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে পোস্ট লক্ষ্য করে দারুণ শট নিয়েছিলেন পুলিশের বদলি খেলোয়াড় ইমন। তবে বল সরাসরি গ্রিপ করেন মোহামেডানের গোলরক্ষক। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে বক্সের বাইরে বাঁ প্রান্ত থেকে পুলিশের ফুটবলার শাহ কাজেম কিরমানির শট ছিল নিশ্চিতই গোল। তবে তিনিও পরাস্ত করতে পারেননি সাদা-কালোদের গোলরক্ষককে। কর্নার পায় পুলিশ। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল বক্সে পেয়ে হেড নেন পুলিশের এক ফুটবলার। তবে লাফিয়ে উঠে এবারও বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন মোহামেডান গোলরক্ষক সুজন হোসাইন।
৫৬ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে বল উঠিয়ে মেরেছিলেন মোহামেডানের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ইমানুয়েল সানডে। কিন্তু বক্সে বল রিসিভ করতে পারেননি সতীর্থ ফুটবলার। একই রকমভাবে পরের মিনিটেই বক্সের ডান প্রান্ত থেকে বল বাড়িয়েছিলেন সুলেমান দিয়াবাতে। সেই বলও কাজে লাগাতে পারেননি মোহামেডানের কোনো ফুটবলার। ৫৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে মোহামেডানের বদলি খেলোয়াড় রাকিব যে শটটি নেন তা চলে যায় বারের অনেক উপর দিয়ে। ৮৬ মিনিটে বক্সের ভেতর ডান প্রান্ত থেকে আরিফের বাড়িয়ে দেয়া বল পেয়েও গোলের নিশ্চিত সুযোগ হাতছাড়া করেন তার সতীর্থ ফুটবলার। শেষ পর্যন্ত গোলমুখ খুলতে পারেনি দু'দলের কেউই। তাই গোলশূন্য ড্রতেই শেষ হয়েছে মোহামেডান-পুলিশের লড়াই। আগামী ৭ মে ফেডারেশনকাপের সেমিফাইনালেও দেখা হতে যাচ্ছে এই দুই দলের।
একই দিনে রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে আরও একটি বড় হারের মুখ দেখেছে গোপীবাগের ঐতিহ্যবাহী দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। গত রাউন্ডেই মোহামেডানের কাছে ৮-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছিল ব্রাদার্স। লিগের ১৩তম রাউন্ডে এসেও হারের বৃত্ত ভাঙতে পারেনি দলটি। শনিবার ম্যাচের ১৮ মিনিটে ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরীর গোলে লিড নেয় চট্টগ্রাম আবাহনী (১-০)। ৩২ মিনিটে নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার ওয়াসিও সিমুর পাস থেকে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তারই স্বদেশি ফরোয়ার্ড পল সেন (২-০)। এই ব্যবধানেই প্রথমার্ধ এগিয়ে থেকে বিশ্রামে যায় বন্দর নগরীর দলটি। ৬০ মিনিটে ফরোয়ার্ড রিয়াজ উদ্দিন সাগরের গোলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৩-০তে। ৭৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ডেভিড ওযুখু (৪-০)। ইনজুরি টাইমে (৯০+৩ মিনিটে) পল সেনের দ্বিতীয় গোলে ৫-০ তে এগিয়ে যায় চট্টলা। এই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় চট্টগ্রাম আবাহনীর। প্রথম পর্বে চট্টলার সঙ্গে ২-২ গোলের ড্র করেছিল ব্রাদার্স।