সমালোচনায় বিরক্ত সাকিব
প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিসিবি থেকে মাসিক বেতনে চুক্তিভূক্ত খেলোয়াড়ের দেশের হয়ে খেলা বড় নাকি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলাটা বেশি প্রয়োজন? জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরুতে না খেলে ঢাকা লিগ খেলবেন সাকিব আল হাসান, বিষয়টি সামনে আসার পর এমন আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। তাতে যারপরনাই বিরক্ত বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
আগামী ৩ মে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মাঠে গড়াবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি২০। অথচ সেই সময়ে শেখ জামালের হয়ে ডিপিএলের সুপার লিগে খেলবেন সাকিব আল হাসান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ রেখে ডিপিএলে কেন খেলবেন সাকিব, তাও আবার টি২০ বিশ্বকাপ দোরগোড়ায় রেখে- এমন প্রশ্ন তাই মুখে মুখে। যা কানে গেছে সাকিবেরও। তাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন সাকিব।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি২০ সিরিজ দিয়ে সাকিব আল হাসান যে বাংলাদেশের জার্সিতে সাদা বলের ক্রিকেটে ফিরছেন তা নিশ্চিতই। কিন্তু তিনি কয়টা ম্যাচে খেলবেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু জানিয়েছেন, জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকে খেলবেন না সাকিব। এ সময়ে তিনি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে ডিপিএলে খেলবেন। এই ঘোষণা থেকেই জন্ম ধোঁয়াশার।
জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলার ব্যাপারে নির্বাচক, কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাকিব। তিনি জানিয়েছেন, টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই পুরো বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সাকিব বলেন, 'জিম্বাবুয়ে সিরিজে অবশ্যই খেলব। দেশে হয়তো এ নিয়ে একটা কনফিউশন চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা নিয়ে কথা চলছে যে আমি জিম্বাবুয়ে সিরিজে শুরু থেকে খেলব না, ডিপিএল খেলব...আসলে কোচ, অধিনায়ক সবার সঙ্গে আগে কথা বলে রেখেছিলাম। কোচ বলেছিলেন দুটো ম্যাচ খেললেই হবে। এরপর অধিনায়ক ও নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলি, তারা বলেছে দুটো না তিনটা ম্যাচ খেলো, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়। আমি বলেছি সমস্যা নেই। এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, যেটা নিয়ে দেশে এত কনফিউশন দেখতে পাচ্ছি। খুবই অবান্তর আলোচনা।'
সাকিব আবার নিশ্চিত করেন যে, সবকিছু আলোচনার মাধ্যমেই হয়েছে, 'আসলে এগুলো আলোচনার মাধ্যমেই হয়, আমার ইচ্ছামতো হয় না। যেহেতু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দুটি ম্যাচ থাকবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ তিন ম্যাচ খেলার আগে। সেহেতু দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ থাকবে, এ ছাড়া প্রস্তুতিটাও ভালো হবে। সে কারণে আসলে এই দুইটা ম্যাচ খেলা। এখানে এর বেশি নাই।'
টি২০ সিরিজের শুরু থেকে সাকিবের না খেলা নিয়ে শোরগোল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে নানান আলোচনা। এসবে নাকি হাসি পায় সাকিবের। তিনি বলেন, 'আমেরিকা থাকলে ফেসবুকে বেশি সময় কাটানো হয়, দেশে থাকলে সময় পাই না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব দেখলে আমার একটু হাসিই পায় যে মানুষ কত রকম চিন্তা করতে পারে। যা হয়েছে বিসিবি আর আমার আলোচনার মধ্যেই হয়েছে। কারণ, আমাদের অন্যান্য খেলোয়াড়দেরও দেখা জরুরি। বিভিন্ন ধরনের কম্বিনেশন তৈরি করতে হলে আমাদের কী অবস্থায় থাকতে হবে, সে প্রস্তুতিটা নিতে পারি।'
গত টি২০ বিশ্বকাপের পর থেকেই বাংলাদেশ দল যাচ্ছে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। সময়ের সঙ্গে দলের পারফরম্যান্সেও আছে উন্নতির ছাপ। সবশেষ শ্রীলংকার বিপক্ষে টি২০ সিরিজ হারলেও দারুণ লড়াই করেছে টাইগাররা। জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাওয়া টি২০ বিশ্বকাপে কন্ডিশনের সঙ্গে মিল আছে বাংলাদেশের। এই টুর্নামেন্টে টাইগারদের কতটুকু সম্ভাবনা দেখছেন সাকিব? তিনি বলেন, 'বিশ্বকাপ পাওয়ার মতো অবস্থায় আসছি কি না, এটা বলাটা একটু মুশকিল। তবে টি২০তে যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে, বড় ছোট দল নেই। আমাদের বিশ্বাসটা দরকার, ওই বিশ্বাসটা নিয়ে যদি খেলতে পারি, আমরা ভালো করব। বলছি না, ট্রফি জিততে পারব কি পারব না। তবে আমাদের ভালো কিছুর সম্ভাবনা আছে।'
ওয়ানডে বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে শেষবার সাদা বলের ক্রিকেট খেলেছেন সাকিব। আর সর্বশেষ টি২০ খেলেছেন গত বছর জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। সাকিবের জন্য ফেরাটা তাই চ্যালেঞ্জেরও।