শেখ মেহেদি হাসান-সানজামুল ইসলাম যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন মনে হচ্ছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের দেওয়া চ্যালেঞ্জ টপকে যাবে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। কিন্তু না, দুজনের আউটের পর তামিম ইকবাল-মুশফিকদের জয়ের স্বপ্ন মিইয়ে যায়।
শেষ পর্যন্ত উত্তেজনা ছড়ানো সুপার লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৩ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ঐতিহ্যবাহী সাদাকালো ক্লাবটি। সুপার লিগে দুই ম্যাচ খেলে দুটিতেই জয় পেয়েছে মোহামেডান। অন্যদিকে প্রাইম ব্যাংক সমান ম্যাচ খেলে একটিতেও জয় পায়নি। দ্বিতীয় ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ আউট প্রাইম ব্যাংকের ক্রিকেটাররা মেনে নিতে পারেননি। যার দরুণ ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়রা হাত মেলাননি একে অপরের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার মিরপুরে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৫ উইকেটে ৩১৭ রান করে মোহামেডান। ক্যারিয়ার সেরা সেঞ্চুরিতে একাই ১৪১ রান করেন রনি তালুকদার। তার হাতে ওঠে ম্যাচসেরার পুরস্কার। রনির সেঞ্চুরির সঙ্গে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ফিফটি আর মেহেদি হাসান মিরাজের ঝড়ে মোহামেডান ৩১৭ রানের বড় পুঁজি গড়ে। অঙ্কন ৭৭ বলে ৫০ রান করলেও মিরাজ মাত্র ২৯ বলে খেলেন ৫৩ রানের ইনিংস। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন শেখ মেহেদী হাসান।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৪ রানে ফেরেন তামিম। শাহদাত হোসেন দিপু-পারভেজ হোসেন ইমন ৬০ রানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামলান। ৩৮ রানে ইমন আউট হলে ভাঙে জুটি। দিপুর ফেরেন ৫১ রানে। জাকের দারুণ খেললেও ৪১ রানের বেশি করতে পারেননি। মাঝে মুশফিকুর রহিম ১০ ও নাঈম ইসলাম ২ রানে ফিরলে বিপদ বাড়ে।
নাঈমকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে রনির দুর্দান্ত ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। যদিও ডাইভ দিতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে পা লাগে রনির, কিন্তু তবুও তাকে আউট ঘোষণা করা হয়। এর রেশ দেখা যায় ম্যাচ শেষেও।
প্রাইম ব্যাংক ইনিংসের ৩৪তম ওভারে ব্যক্তিগত ১০ রানে নাঈম হাসানকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন প্রাইম ব্যাংকের মুশফিক। তবে ব্যাটে-বলে সংযোগ ঠিক মতো হয়নি।
এ সময় বাউন্ডারি লাইনে থাকা ফিল্ডার আবু হায়দার রনি দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে বল তালুবন্দী করেন। কিন্তু ডাইভ দিয়ে উঠতে গিয়ে রনির পা স্পর্শ করে বাউন্ডারি রশিতে। তবুও মুশফিককে আউট ঘোষণা করেন আম্পায়ার!
মুশফিকের ক্যাচ নিয়েই ভোঁ দৌড় দেন রনি। উলস্নাসে মেতে ওঠেন সতীর্থদের সঙ্গে। ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটা ধরেন মুশফিক। যেতে গিয়েও গেলেন না মুশি। প্রাইম ব্যাংক এটি ছয়ের আবেদন জানায়। প্রায় মিনিট পনেরোর মতো সময় বন্ধ থাকে খেলা।
রিপেস্ন'তে দেখা যায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ নেয়ার পর রনি ভারসাম্য হারিয়ে মাঠে গড়ান দেন। বল হাত থেকে না ফসকালেও ওঠার সময় বাঁধে বিপত্তি। পা লেগে যায় বাউন্ডারি লাইনে। আম্পায়াররা শেষ পর্যন্ত এটিকে আউট ঘোষণা করেন।
অবশ্য একটা পর্যায়ে আম্পায়ার সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেন মোহামেডানের ওপর। তারা যদি নট আউট মেনে নেয় তাহলে মুশফিক মাঠে থাকতে পারবেন। তবে মোহামেডানের অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের নারাজিতে শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়তে হয় মুশফিককে। মুশফিক সাজঘরে ফিরলে সানজামুল ইসলাম-শেখ মেহেদী এগিয়ে নিতে থাকেন। ৩৫ বলে ৪৯ রান করে ফেরেন সানজামুল। তখনও ক্রিজে মেহেদী থাকলেও সঙ্গীর অভাবে বেশি দূর এগোতে পারেননি তিনি। ৪৫ বলে ৬৪ রান করেন এই অলরাউন্ডার। মোহামেডানের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন আবু হায়দার রনি, মুশফিক হাসান ও নাসুম আহমেদ।