জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষা

অনুপস্থিত সাকিব সৌম্য মুস্তাফিজ তাসকিন তাইজুল

প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে শনিবার জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষার অংশ হিসেবে অ্যাথলেটিক ট্র্যাকে ১৬০০ মিটার দৌড়ানোর একটি মুহূর্ত -ওয়েবসাইট
পাঁচ ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলতে চলতি মাসের ২৮ তারিখ বাংলাদেশ সফরে আসবে জিম্বাবুয়ে। যদিও সেই সিরিজের জন্য এখনো দল ঘোষণা করেনি বিসিবি। জিম্বাবুয়ে সিরিজ এবং আসন্ন বিশ্বকাপকে সামনে রেখে শনিবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সম্ভাব্য ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরখ করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ৩৯ ক্রিকেটারের নাম থাকলেও ইনজুরিসহ ভিন্ন ভিন্ন কারণে এদিন অনুপস্থিত ছিলেন পাঁচ ক্রিকেটার। শুধু বিশ্বকাপ বিবেচনায় থাকা ক্রিকেটাররাই নন, এদিন ছিলেন টেস্ট ও ওয়ানডে দলের বিবেচনায় থাকা সদস্যরাও। ৩ মে থেকে শুরু জিম্বাবুয়ে সিরিজ। আর বিশ্বকাপ খেলতে ১৬ মে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে টাইগাররা। এদিন সকাল ৬টায় শুরু এই ফিটনেস টেস্ট চলে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। প্রথমে হালকা ওয়ার্মআপ করেন ক্রিকেটাররা। করেন হালকা স্ট্রেচিংও। সবশেষে দুই ভাগে ভাগ হয়ে দৌড়ান ১৬০০ মিটার স্প্রিন্টে। দৌড়েছেন জাতীয় দলের বিবেচনায় থাকা প্রায় ৩৫ ক্রিকেটার। বিসিবির ফিজিক্যাল পারফরম্যান্স অ্যাসেসমেন্টের রানিং প্রতিযোগিতায় দুই গ্রম্নপ থেকে সেরা হয়েছেন দুই পেসার। এক গ্রম্নপে প্রথম হয়েছেন তরুণ পেসার নাহিদ রানা। আরেক গ্রম্নপে সবার আগে দৌড় শেষ করেন তানজিম হাসান সাকিব। চমক দেখিয়েছেন বর্তমান দলের অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। সিনিয়র ক্রিকেটার হয়েও তরুণদের সঙ্গে সমানতালে পালস্না দিয়ে এক গ্রম্নপের দ্বিতীয় হয়েছেন তিনি। বর্তমান দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার সিনিয়র ৩৮ পেরুনো মাহমুদউলস্নাহ দৌড় শেষ করেছেন সবার শেষে। নিয়মিত ক্রিকেটারদের মধ্যে আইপিএলে থাকায় মুস্তাফিজুর রহমান, চোট থেকে ফেরার পথে থাকায় সৌম্য সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় উপস্থিত ছিলেন না সাকিব আল হাসান। এছাড়া চোটের কারণে তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলামকেও দেখা যায়নি ১৬০০ মিটার দৌড়ে। পরে এসব ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকছে। যেকোনো সিরিজের আগে প্রস্তুতির শুরুটা অবশ্য এভাবেই হয়। সেটা এতদিন হয়েছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। এবার সেটা হলো বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। কারণ শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টানা খেলা থাকার কারণে মাঠের ঘাস বড় হয়েছে, মাঠও হয়েছে ভারী। স্বাভাবিকভাবে সেখানে দৌড়ানো ক্রিকেটারদের জন্য কষ্টের। তাই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিকস ট্র্যাককে বেছে নিয়েছে বিসিবি। টাইগারদের নতুন ট্রেইনার নাথান কেলি চেয়েছেন এ রকম একটা জায়গায় ক্রিকেটারদের স্প্রিন্ট দেখে কার ফিটনেসের কী অবস্থা বুঝতে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রস্তুতির প্রথম পর্ব সেরে আবারও মিরপুর শেরেবাংলায় ফিরে যাবেন ক্রিকেটাররা। সেখানে হবে প্রস্তুতির বাকি অংশ। ফিটনেস সেশন শেষে ট্রেনার ইফতেখার ইসলাম ইফতি জানান, ডিপিএল-বিপিএলের পর ক্রিকেটারদের ফিটনেসের অবস্থা বুঝার জন্যই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'এই পরীক্ষার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের অবস্থাটা কেমন সেটা বুঝলাম। এটার মধ্যে পাস-ফেলের কিছু নেই। ডিপিএল গিয়েছে, বিপিএল গিয়েছে এরপরে ওদের ফিটনেসের অবস্থা কি সেটা জানার জন্য এই উদ্যোগ। এটা জানার পর খেলোয়াড়দের কাকে কি অনুশীলন করাতে হবে এটা খুঁজে বের করব। ওদের জানিয়ে দেব, ওভাবে আমরা প্রয়োগ করব।' ইফতেখার ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, 'অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক বেছে নেওয়ার কারণ আসলে টাইমিংয়ের একটা বিষয় আছে। আমরা যদি আন্তর্জাতিকভাবে অনুসরণ করি তাহলে বেশ কিছু টেস্টিং মেথড আছে, আমরা আজ ১৬শ মিটার টাইম-ট্রায়াল নিলাম। অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে যদি নেই তাহলে প্রপার টাইমিংটা হয়। কারণ ওইভাবেই হিসাব করা হয়। এটা ওদের কাছে নতুন মনে হয়েছে। সব মিলিয়ে ভালো।' ক্রিকেটারদের এই বিশেষ সেশনে উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার ও সাবেক ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফীস। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ক্রিকেট জীবন শুরু করা নাফীস করেন স্মৃতি রোমন্থন, 'আমাদের খেলার প্রতি আগ্রহ তৈরি হওয়া, খেলা দেখে শেখা সব এই স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করেই। এখনো মনে আছে খুব সম্ভবত ১৯৯৩ বা ১৯৯৪ সালে প্রথম এই মাঠে এসেছিলাম খেলা দেখতে। কাজিনরা যেহেতু খেলতেন, ফারুক ভাই (ফারুক আহমেদ) জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। পাশাপাশি আইকনিক যত খেলোয়াড় ছিলেন তাদের দেখে খেলা শুরু। আমার বাংলাদেশে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা এখানে শুরু। আমার প্রথম যে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটা আন্ডার নাইনটিতে একটা অনুশীলন ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে, সেটা এই মাঠে। জাতীয় দলে আমি এখানে কোনো খেলা পাইনি, এটা আমার একটা আক্ষেপ। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন মানেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। এখানে আসলে আপনার ভালো না লেগে ফেরার কোনো সুযোগই নেই।'