রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে বার্সাকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে পিএসজি

ক্রীড়া ডেস্ক
  ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
বার্সেলোনার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয়ের পর পিএসজির খেলোয়াড়দের বাঁধভাঙা উদযাপন -ওয়েবসাইট

সাত বছর আগে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছিল বার্সেলোনা, এই প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) বিপক্ষে। শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে ৬-১ গোলে সেই হারের প্রতিশোধ এবার নিল ফরাসি ক্লাবটি। গত সপ্তাহে ঘরের মাঠে ৩-২ গোলে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগ হেরেছিল পিএসজি। মঙ্গলবার রাতে ১০ জনের বার্সার বিপক্ষে অলিম্পিক লুইস কোম্পানিস স্টেডিয়ামে তারা ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় লেগ জিতল ৪-১ গোলে। তাতে ৬-৪ গোলের অগ্রগামিতায় সেমিফাইনালে উঠল পিএসজি।

বার্সা শহর যেন রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল। ২০১৯ সালের পর প্রথমবার দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে খেলতে দেখবেন, এই স্বপ্ন ভক্ত-সমর্থকদের চোখে চিকচিক করছিল। সমর্থনে যেন কোনো কমতি না থাকে, সেই চেষ্টা ছিল সর্বোচ্চ। তাদের উন্মাদনা এতটাই চরমে পৌঁছেছিল যে, পিএসজির টিম বাস ভেবে নিজেদের টিম বাসেই ভুল করে আক্রমণ করে বসে।

আনন্দের সীমালঙ্ঘন হয়েছিল বটে। তা আরও আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে ১২ মিনিটে রাফিনহার গোলে। লামিনের ইয়ামালের ক্ষিপ্রতায় পিএসজির জাল কাঁপিয়ে বার্সার ভক্তদের হৃদয়ে আলোড়ন তোলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। বক্সের ডান প্রান্ত থেকে ইয়ামালের শক্তিশালী শট রাফিনহাকে অবাক করে দিয়ে তার ঊরুতে লেগে বল জালে জড়ায়।

কিছুক্ষণ পর ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ এসেছিল বার্সার। রবার্তো লেভানডোভস্কির শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। তারপর দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় ডানদিকে ঝাঁপিয়ে কিলিয়ান এমবাপের শট ঠেকিয়ে বার্সা শিবিরে স্বস্তি এনে দেন গোলকিপার মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন।

কিন্তু হুট করেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় বার্সা, ২৯ মিনিটে যখন রোনাল্ড আরাউজো লাল কার্ড দেখেন। বারকোলা বল নিয়ে বার্সার বক্সে ঢুকতে চেষ্টা করেন, তার সামনে ছিলেন শুধু টের স্টেগেন। বক্সে ঢোকার আগ মুহূর্তে তাকে ফাউল করার শাস্তি পান আরাউজো, ফ্রি কিক দেন রেফারি। পেনাল্টির একটা সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছিল তার মনে। তবে রিপেস্ন দেখার পর ফ্রি কিকের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।

১০ জন হয়েই বার্সা যেন ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। পুরোটা সময় সাবেক ক্লাবের ভক্তদের কাছে উত্ত্যক্তের শিকার উসমান দেম্বেলে তাদের নিস্তব্ধ করে দেন। ৪০ মিনিটে বারকোলার দুর্দান্ত পাস ধরে কাছের পোস্ট দিয়ে জাল কাঁপান তিনি। ফরাসি ফরোয়ার্ডের গোলে দুই লেগের অগ্রগামিতায় ব্যবধান কমে দাঁড়ায় এক গোলে।

বিরতির পর ছন্নছাড়া বার্সা। ৫৪ মিনিটে দেম্বেলের পাস ধরে ২২ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটে স্কোর সমান করেন ভিতিনহা। জোয়াও কানসেলোর কারণে কাতালানদের ম্যাচে টিকে থাকার সব আশা শেষ হয়ে যায়। অনর্থকভাবে দেম্বেলেকে ট্যাকল করে ফেলে দেন তিনি। রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। ৬১ মিনিটে এমবাপে পেনাল্টি থেকে ডান পায়ের উঁচু শটে গোল করেন।

মাঝে ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠের পাশে অবস্থিত ক্যামেরার সামনে কুশনে লাথি দিয়ে লাল কার্ড দেখেন কোচ জাভি হার্নান্দেজ। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে এমবাপে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন। এবারও নিজেদের ভুলে গোল হজম করে কাতালানরা। একটি গোল করতে পারলেই ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিতে পারত বার্সা। এজন্য শেষ দিকে কর্নার পেয়ে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে বক্সে ভিড় জমান তাদের খেলোয়াড়রা।

বল দ্রম্নত লুফে নেন পিএসজি গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা। বার্সা প্রান্তে এমবাপের দিকে দ্রম্নত বল বাড়ান তিনি। ফরাসি ফরোয়ার্ড সুযোগের সদ্ব্যবহার করে একক চেষ্টায় ৮৯ মিনিটে দ্বিতীয়বার বার্সার জালে বল ঠেলে দেন। যদিও কাউন্টার অ্যাটাক থেকে এমবাপের প্রথম শট ঠেকিয়েছিলেন টের স্টেগেন। দ্বিতীয় দফায় ফেরান মার্কো আসেনসিওর শটও। কিন্তু তৃতীয় দফায় আর এমবাপেকে আটকাতে পারেননি তিনি। ফলে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় ফরাসি ক্লাবটির।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে