বাঁহাতি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের শেখার অধ্যায় শেষ হয়ে গেছে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলে তার আর শেখার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস। মুস্তাফিজের কাছ থেকে বরং আইপিএলের খেলোয়াড়রা শিখতে পারেন বলে মত তার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ সামনে রেখে আইপিএল থেকে মুস্তাফিজকে ফেরানো ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্টের অংশ বলে জানিয়েছেন তিনি।
আইপিএলে এবার চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলছেন মুস্তাফিজ। শুরু থেকে ভালো খেলে বাঁহাতি পেসার ৫ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তবে পুরো আইপিএল তাকে খেলার অনুমতি দিচ্ছে না বিসিবি। ১ মে পর্যন্ত খেলে দেশে ফিরবেন ২ মে। ৩ মে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে খেলার কথা তার।
টি২০ বিশ্বকাপ না খেলা জিম্বাবুয়ের থেকে আইপিএল খেলা ভালো হতো কিনা এই প্রশ্ন উঠছে। বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে জালাল ইউনুস ঝাঁজালো কণ্ঠে দেন প্রতিক্রিয়া, 'মুস্তাফিজের আইপিএলে খেলে শেখার কিছু নেই। মুস্তাফিজের শেখার সময় পার হয়ে গেছে। বরং মুস্তাফিজের থেকে শিখতে পারে আইপিএল খেলোয়াড়রা। এতে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না। মুস্তাফিজের কাছে পেলে অন্যদের সুবিধা হবে।'
আইপিএলের সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ততা থাকে একদমই কম। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড এই সময়ে টি২০ সিরিজ খেলবে। কিন্তু সিরিজটিতে নিউজিল্যান্ডের প্রথম সারির তারকারা খেলবেন না আইপিএলের কারণেই। ট্রেন্ট বোল্ট, কেইন উইলিয়ামসন, ড্যারেল মিচেলসহ ৯ ক্রিকেটারকে ছাড়া বাকিদের নিয়ে দল দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চিন্তা এক্ষেত্রে ভিন্ন। বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও পুরো শক্তির দলই খেলাবে বিসিবি। জালাল ইউনুস অবশ্য মনে করেন, আইপিএলে খেলার যে ধকল আছে সেটা একজন ক্রিকেটারকে ক্লান্ত করে তুলে। মুস্তাফিজকে সেই ক্লান্তি থেকে বাঁচাতে চাইছেন তারা, 'আইপিএল আপনাদের কাছে মনে হয় শুধুমাত্র ৪ ওভারের খেলা। কিন্তু এটা কি জানেন কতটা ধকল নিতে হয়? খেলা শেষে রাত ১টায় এয়ারপোর্টে ঘুমিয়ে থেকে তাদের ট্রাভেল করতে হয়, এটা অনেক কষ্ট। তারা চাইল মুস্তাফিজ থেকে শতভাগ নেওয়ার জন্য। মুস্তাফিজের ফিটনেস, স্বাস্থ্য এসব নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই, কিন্তু আমাদের আছে। মুস্তাফিজকে এখানে ফেরানোর কারণ শুধু জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য নয়। জিম্বাবুয়ে সিরিজে আমরা তাকে ওয়ার্ক লোড ঠিক রেখে খেলাব। আইপিএলে থাকলে সেই পরিকল্পনা হবে না।'
ক্রিকেট বোর্ডের প্রভাবশালী এই পরিচালকের মতে মুস্তাফিজের শেখার আর কিছুই বাকি নেই,' মুস্তাফিজের শেখার অধ্যায় শেষ। মুস্তাফিজকে শেখানোর আর কোনো দরকার নেই। সে সাত-আট বছর ধরে ক্রিকেট খেলে। আইপিএলে খেলে। তো লাভবান তারা হবে, আমরা হবো না।'
দেশে ফেরানোর পর মুস্তাফিজকে জিম্বাবুয়ে সিরিজের খেলানো নাও হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি, 'মুস্তাফিজকে দেশে ফিরিয়ে আনা মানেই যে আমরা তাকে জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলাব তা নয়। আমরা তাকে ওয়ার্ক লোড (ম্যানেজমেন্ট) দিব, চাপ কমাব, দলের সঙ্গে থাকবে, বোঝাপড়া বাড়বে। বিশ্বকাপের মতো একটা বড় ইভেন্টে যাচ্ছে, যাওয়ার আগে তো এডজাস্ট করতে হবে। ফিট থাকতে হবে। আমাদের তাকে দরকার। সতেজ মুস্তফিজকে চাই।'