ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে দ্বিতীয় দল হিসেবে নাম লেখাল বসুন্ধরা কিংস। মঙ্গলবার গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা ২-০ গোলে হারায় রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে। সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খুব বেশি ঘাম ঝরাতে হয়নি বসুন্ধরার। গোল করেন মিডফিল্ডার সিনিয়র সোহেল রানা ও নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমফন সানডে উদোহ। এর আগে ২ এপ্রিল প্রথম কোয়ার্টারে জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
হারলেই বিদায়! এমন ম্যাচে জয়ের বিকল্প ভাবেনি শিরোপাতে চোখ রাখা বসুন্ধরা কিংস। তবে সহজ প্রতিপক্ষ হলেও খুব বড় ব্যবধানে জয় পায়নি কিংস। যদিও একটি গোলও করতে পারেনি রহমতগঞ্জ। তবে তারা বেশ কিছু গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল। ম্যাচের ৩ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল রহমতগঞ্জের। ডান প্রান্ত থেকে মিশরীয় মিডফিল্ডার মোস্তফা খারাবার বাড়িয়ে দেওয়া বল পেয়ে বক্সের কাছেই বা প্রান্ত থেকে দাউদা সিসে বা পায়ে জোড়ালো যে শটটি নেন সেটি ফিস্ট করেন কিংসের গোলরক্ষক মেহদী হাসান শ্রাবণ। ৬ মিনিটে বসুন্ধরার ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন রবিনহোর শট ভাঙতে পারেনি প্রতিপক্ষের রক্ষণ দুর্গ। ১৯ মিনিটে মিডফিল্ডার সোহেল রানার (জুনিয়র) শট চলে যায় রহমতগঞ্জের বারের উপর দিয়ে। তবে জুনিয়র ব্যর্থ হলেও সাফল্য পেয়েছেন সিনিয়র সোহেল রানা। ২৫ মিনিটে রহমতগঞ্জের বক্সে বল পেয়ে শট নিতে গিয়েছিলেন কিংস অধিনায়ক রবিনহো। তবে তাকে কড়া পাহারায় রেখেছিলেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা। সুবিধা করতে পারবেন না বুঝতে পেরে রবিনহো বলটা পাস করে দেন সতীর্থ সোহেল রানাকে। বক্সের মাথা থেকে বা পায়ের জোড়ালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন সোহেল রানা (সিনিয়র)। ম্যাচে লিড নেয় বসুন্ধরা (১-০)।
২৭ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিনের শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক। বা প্রান্ত থেকে রবিনহোর কর্নারে জটলায় বল পেয়ে ক্রস করেন তপু বর্মণ। পোস্টের কাছ থেকে উড়ন্ত বলে হেড নিয়েছিলেন উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার ববুর বেগ। বল চলে গেছে বারের উপর দিয়ে। ৩৭ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে রবিনহোর শট কর্নার কিক রিসিভ করে আবারও তাকেই বল দেন ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন। রবিনহোর শট ক্লিয়ার করেন সুশান্ত ত্রিপুরা। ৪০ মিনিটে রবিনহোর জোগান দেওয়া বলে বক্সের বা প্রান্ত থেকে শট নেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমফন উদোহ। দারুণ দক্ষতায় বল ক্লিয়ার করেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক মামুন আলিফ। আবারও কর্নার পায় বসুন্ধরা। তবে এবারও সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেনি তারা। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে (৯০+২ মিনিটে) বা প্রান্ত থেকে আসা ক্রসে বা পায়ে শট নেন দাউদা সিসে। বল ফিরিয়ে দেন শ্রাবণ। পোস্টের কাছেই সেই বল পেয়েও সুযোগ হাতছাড়া করেন ফরোয়ার্ড ইমন হোসেন। তার শটও ফিরিয়ে দেন শ্রাবণ। কর্নার পায় রহমতগঞ্জ। সোয়েব মিয়ার কর্নার ক্লিয়ার হয় জটলাতে। ১-০-তে এগিয়ে থাকার স্বস্তি নিয়েই বিশ্রামে যায় গত আসরের সেমিফাইনালিস্ট বসুন্ধরা কিংস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে কিংসকে কিছুটা চাপের মুখে ফেলেছিল রহমতগঞ্জ। তবে সবকিছু ছাপিয়ে ৬২ মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটিও আদায় করে নেয় বসুন্ধরা। বক্সের বাইরে থেকে সতীর্থকে উদ্দেশ্য করে বল বাড়িয়ে দেন অধিনায়ক রবসন। বিপদ আঁচ করতে পেরে পোস্ট ছেড়ে সামনে এগিয়ে এসেছিলেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক। তাকে পেছনে ফেলে দর্শনীয় শটে লক্ষ্যভেদ করেন এমফন উদোহ (২-০)। দুই গোলে সেমি অনেকটাই নিশ্চিত হওয়ার আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে বসুন্ধরা। ৮৬ মিনিটে ফ্রি কিক পায় রহমতগঞ্জ। বক্সের প্রায় দশ গজ দূর থেকে সুশান্ত ত্রিপুরার স্পট কিক গস্নাভস বন্দি করেন মেহদী হাসান শ্রাবণ। অনেক চেষ্টায়ও গোল শোধ করতে পারেনি রহমতগঞ্জ। তাই ২-০ গোলের জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে বসুন্ধরা। পরবর্তী কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটিও একই ভেনু্যতে হবে আগামী ২৩ এপ্রিল। যেখানে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের প্রতিপক্ষ পুলিশ ফুটবল ক্লাব।