ঈদুল ফিতরের ছুটির পর মাঠে নেমেই সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ছুটেছে ঐতিহ্যবাহী আবাহনী লিমিটেডের রানের ফোয়ারা। তবে ম্যাচ ছাপিয়ে আলোচনায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দশম রাউন্ডে মুখোমুখি হয় আবাহনী-প্রাইম ব্যাংক। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৪ উইকেটে ৩৪১ রানের পাহাড় গড়ে আবাহনী। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সেই রানের ধারে-কাছেও যেতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরা মুশফিকুর রহিম সেঞ্চুরি (১১১) পেলেও তা বিফলেই যায়। তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দল প্রাইম ব্যাংককে ৫৮ রানে হারিয়ে টানা দশম জয় পেল আবাহনী। ১০ ম্যাচে ১০ জয়ে ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল আবাহনী।
সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮৩ রানের বেশি করতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ১ রান করা তামিমকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ৪৩ রানের ভেতর কাটা পড়েন জাকির হাসান (৮) ও শাহাদাৎ হোসেন দীপু (১২)। এরপর মুশফিকের সঙ্গে ৮৩ রানের জুটি গড়ে আশা জাগিয়েছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। কিন্তু ফিফটি ছোঁয়ার পর তাকেও ফিরতে হয়। ৭০ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ রানে আউট হন বাঁহাতি এই ওপেনার। বাকিটা সময় মুশফিককে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি আর কোনো ব্যাটার। আঙুলের চোট কাটিয়ে এটাই ছিল অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের প্রথম ম্যাচ। ১০৫ বলে ১৪ চারে ১১১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি।
আবাহনীর হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব। তাসকিন অবশ্য ইনিংসের শেষদিকে ফিল্ডিং করার সময় চোটে পড়ে। সতীর্থদের কাঁধে চড়ে মাঠ ছাড়তে দেখা যায় তাকে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা দলটির হয়ে সেঞ্চুরির দেখা পান নাঈম ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের চলতি মৌসুমে দুজনেরই এটি প্রথম সেঞ্চুরি। ব্যাটিংয়ে আবাহনীর শুরুটা হয় দারুণ। নাঈম শেখ-এনামুল হক বিজয়ের জুটি থেকে আসে ১১০ রান। বিজয় ৪৫ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। নতুন ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ৮৯ রানের জুটি গড়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন নাঈম।
৯৭ বলে শতকের দেখা পান এই বাঁহাতি ওপেনার। শেষ পর্যন্ত আউট হন ১০৪ বলে ১০৫ রান করে। ১২টি চার ও ৪টি ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এটি নাঈমের অষ্টম সেঞ্চুরি। চলতি আসরে এর আগে তিন ফিফটি পেলেও গতকালই প্রথম তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন নাঈম।
নাঈম ফিরলে শান্তর সঙ্গী হন তাওহিদ হৃদয়। দুজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ফুলে ফেঁপে উঠে আবাহনীর পুঁজি। অলক কাপালিকে কাভারে খেলে মাত্র ৭৭ বলে শতকের দেখা পান শান্ত। অন্য প্রান্তে থাকা তাওহিদের ব্যাট থেকে আসে ঝড়ো ফিফটি। দুজনে তৃতীয় উইকেটের জুটিতে যোগ করেন ১২৩ রান। শান্ত ৪৮.৩ ওভারে ১১৮ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। মাত্র ৮৫ বলে ১৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় এই রান করেন শান্ত। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে শান্তর এটি ১১তম সেঞ্চুরি। চলতি আসরে প্রথম। শ্রীলংকারন বিপক্ষে অফ-ফর্মে থাকা শান্তর জন্য এই সেঞ্চুরি টনিক হিসেবে কাজ করবে। শান্তর আউটের পর আফিফ হোসেন ফেরেন শূন্যরানে। নতুন ব্যাটার জাকের আলী অনিককে নিয়ে ইনিংস শেষ করে আসেন তাওহিদ। তিনি অপরাজিত ছিলেন মাত্র ৩৫ বলে ৬৫ রান করে।
প্রাইম ব্যাংকের হয়ে দুই পেসার হাসান মাহমুদ-রেজাউর রহমান রাজা রান দেন হাত খুলে। সমান ১০ ওভারে দুজনে দেন ৭৬ রান করে। হাসান ২ উইকেট পেলেও রাজার ঝুলিতে জমা হয় ১টি উইকেট।