ফেডারেশন কাপ ফুটবল
রোমাঞ্চকর ম্যাচে রাসেলকে কাঁদিয়ে সেমিতে মোহামেডান
প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনীকে হারিয়ে গত মৌসুমে ফেডারেশন কাপে নিজেদের ১১তম শিরোপাটি ঘরে তুলেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। সেমিফাইনালে নাম লেখানোর লক্ষ্যে মঙ্গলবার কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের মুখোমুখি হয় সাদা-কালোরা। তবে ম্যাচ জুড়েই ছিল রোমাঞ্চ। প্রথমে পিছিয়ে গিয়েও দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরে মোহামেডান। নির্ধারিত ৯০ মিনিটেও ছিল ১-১ এর সমতা। তবে ইনজুরি টাইমের শুরুতেই আরও এক গোল করে ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়ে শেষ চারে নাম লিখিয়েছে আলফাজ আহমেদের শিষ্যরা।
নিঃসন্দেহেই রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ। বল মাঠে গড়ানোর মাত্র ২৬ সেকেন্ডেই প্রথম গোলটি আদায় করে নেয় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে লক্ষ্যভেদ করেন রাসেলের গিনির ফরোয়ার্ড সেকু সিলস্নাহ (১-০)। ৪ মিনিটে শাহরিয়ার ইমনের ক্রসে বক্সে হেড নেন সুলেমান দিয়াবাতে। তবে পোস্টে রাখতে পারেননি। ৬ মিনিটে সমতায় ফেরার আরও একটি সুযোগ এসেছিল মোহামেডানের। বক্সের বা প্রান্ত থেকে বাকানো ক্রস করেন মিডফিল্ডার আরিফ হোসেন। পোস্টের কাছে ডান পায়ে শট নিয়েছিলেন ইমানুয়েল। তবে গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি। ৮ মিনিটে বক্সের মাথা থেকে উজবেক ফরোয়ার্ড মোজাফফারভের নিচু শট রাসেলের হিউম্যান ওয়ালে লেগে ফেরত আসে। ২৩ মিনিটে আরও একবার সুযোগ হাতছাড়া হয় আলফাজ আহমেদের শিষ্যদের। বক্সের বা প্রান্ত থেকে ইমানুয়েলের বাড়িয়ে দেওয়া বল পেয়ে পোস্টের কাছ থেকে দারুণ শট নিয়েছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক মালির ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে। দারুণ দক্ষতায় বল ক্লিয়ার করে মোহামেডানকে গোলবঞ্চিত করেন রাসেলের গোলরক্ষক মিতুল মার্মা। ৩৭ মিনিটে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার শাহীনকে ডস দিয়ে বক্সে ঢুকে পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন আরিফ। তবে বল অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। প্রথমার্ধ এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে যায় শেখ রাসেল।
৬২ মিনিটে মোহামেডানের ডিফেন্ডার হাসান মুরাদের শট চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। পরের মিনিটেই ডান প্রান্ত থেকে ইমানুয়েলের ক্রস পোস্টের কাছ থেকে সুলেমান দিয়াবাতে শট নিলেও সুবিধা করতে পারেননি। কারণ আগেই তাকে বস্নক করে রেখেছিলেন রাসেলের নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার গানিও আতান্দা। ৬৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন সেকু সিলস্নাহ। বক্সের বাইরে থেকে করা তার শট চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। ৬৭ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে আরিফের কর্নার বক্সে জটলার মধ্যে পেয়ে লাফিয়ে হেড নিয়েছিলেন ইমানুয়েল টনি। তবে গোল আদায় করে নিতে পারেননি। ৭১ মিনিটে আচমকা ডান পায়ের শটে মিতুল মার্মাকে পরাস্ত করেন মোজাফফারভ (১-১)। ৭৩ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে মোজাফফারভের শট অল্পের জন্য চলে গেছে বা পোস্ট ঘেঁষে। ৮৮ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে মোজাফফারভের কর্নার ফিস্ট করেন মিতুল মার্মা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের সমতায় ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর সঙ্কায়। ঠিক কয়েক মুহূর্তে পরেই সব সঙ্কা দূর করে দিলেন মোহামেডানের ফরোয়ার্ড জাফর ইকবাল। ইনজুরি টাইমের শুরুতেই (৯০+১ মিনিটে) বক্সের বাইরে থেকে বল বাড়ান মোজাফফারভ। বক্সে বল পেয়ে দর্শনীয় পাস করেন আরিফ। পোস্টের কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা জাফর ইকবাল প্রথমে ডান পায়ে শট নিলেও প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে ফেরত আসে। তবে হল ছাড়েননি জাফর। দ্বিতীয় চেষ্টায় বাঁ পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন (২-১)। জাফরের এই গোলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায় সাদা-কালোদের।