এবার সময়টা একটু বেশিই নিলেন মুমিনুল হক। অভিষেকের পর থেকে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে যে ধারাবাহিকতা ছিল মুমিনুলের শেষ দুই বছরে তাতে বাধ সেধেছে। মুমিনুল হক চতুর্থ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে সোমবার চার হাজার রান পেরিয়েছেন। মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানের পর এলিট ক্লাবে প্রবেশ করেছেন বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ ১২ সেঞ্চুরি পাওয়া মুমিনুল।
মাইলফলক ছোঁয়ার পরপরই তার পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শূন্য থেকে হাজার রানে পৌঁছাতে মুমিনুল কেবল ২০ ইনিংস নিয়েছিলেন। হাজার রান থেকে দুই হাজারে যেতে খেলেছেন ২৭ ইনিংস। পরের হাজার রানে পৌঁছাতে নেন আরও ২৯ ইনিংস। অথচ এবার তিন হাজার থেকে চার হাজার রানে পৌঁছাতে তার লাগল ৩৭ ইনিংস। এই মাইলফলক ছুঁতেও অন্যদের চেয়ে বেশি সময় নিয়েছেন মুমিনুল।
তামিম ১০৬ ইনিংসে চার হাজার রান পেয়েছিলেন। সাকিবের লেগেছিল ১০৮ ইনিংস। মুমিনুলের লাগল ১১৩ ইনিংস। সবার প্রথমে চার হাজার রান করা মুশফিকের লেগেছিল ১২২ ইনিংস।
দেশের ক্রিকেটে প্রলয়ঙ্করী ঝড় হয়েছিল সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞায়। ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করায় আইসিসি তাকে এক বছর সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করে। টেস্ট ক্রিকেটের নেতৃত্ব তখন তার কাঁধে। এ ফরম্যাটে তখন নিয়মিত খেলছেন কেবল মুমিনুল। তাকেই বিসিবি বেছে নেয় অধিনায়ক হিসেবে। অপ্রস্তুত সেই অধিনায়কের জন্য অধিনায়কত্ব গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। দুই বছরের ব্যবধানে মুমিনুল হয়ে উঠেন 'খলনায়ক'।
দলকে ঠিকঠাক মতো পরিচালনা করতে না পারার পাশাপাশি নিজের পারফরম্যান্সও সন্তোষজনক না হাওয়ায় দ্বিমুখী চাপে প্রবলভাবে পিষ্ট হন মুমিনুল। বাধ্য হয়ে তাই অধিনায়কত্বও ত্যাগ করেন। অধিনায়কত্ব মুমিনুলের পারফরম্যান্সে কতটা প্রভাব ফেলেছে তা এ পরিসংখ্যানে স্পষ্ট হবে। অধিনায়ক হিসেবে ১৭ ম্যাচে মুমিনুলের রান ৯১২। ব্যাটিং গড় ৩১.৪৪। পেয়েছেন ৩ সেঞ্চুরি।
অধিনায়কত্বের আগে ৩৬ টেস্টে ৪১.৪৭ গড়ে রান করেছেন ২৬১৩। সেঞ্চুরি ছিল ৮টি। অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর নিজেকে নতুন করে গড়ছেন মুমিনুল। ৮ ম্যাচে এখন পর্যন্ত করেছেন ৪৮৩ রান। গড় ৪০.২৫। ১ সেঞ্চুরির সঙ্গে রয়েছে ২ ফিফটি। তবে তার থেকে প্রত্যাশাটা আরও অনেক বড়, অনেক উঁচুতে। ২২ গজে সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে সামনে তাকে দায়িত্ব বাড়াতে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।