প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নির্ধারণী দৌড়ে টিকে আছে তিনটি ক্লাব- আর্সেনাল, লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার সিটি। প্রতিটি ক্লাবের সামনে মৌসুম শেষ হতে বাকি আর মাত্র ১০টি ম্যাচ। গোল ব্যবধানে পিছিয়ে টেবিলের শীর্ষে থাকা লিভারপুলের পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আর্সেনাল। এক পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটি। এবারের মৌসুমে শিরোপা নির্ধারণ করে দিতে পারে এমন পাঁচটি ম্যাচ।
ম্যানচেস্টার সিটি বনাম আর্সেনাল, ৩১ মার্চ :
আন্তর্জাতিক বিরতির ঠিক পরপরই ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে শিরোপা দৌড়ে সবচেয়ে বড় ম্যাচটি রোববার অনুষ্ঠিত হবে। মৌসুমে গানার্সদের তৃতীয় পরাজয় সিটির শিরোপা ধরে রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। এর মাধ্যমে টানা চতুর্থবারের মতো সিটি শিরোপা জয়ও সম্ভব।
অক্টোবরে এমিরেটস স্টেডিয়ামে পেপ গার্দিলার দলকে ১-০ গোলে পরাজিত করেছিল আর্সেনাল। শেষ মুহূর্তে গাব্রিয়েল মার্টিনেলির গোলে মিকেল আর্তেতার দলের জয় নিশ্চিত হয়। এছাড়া আগস্টে কমিউনিটি শিল্ডে পেনাল্টিতে তাদের পরাজিত করে আর্সেনাল। এসবই আজকের ম্যাচের জন্য বাড়তি অনুপ্রেরণা হতে পারে। আর্তেতার দল শেষ আট লিগ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে। বিপরীতে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ২২ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে সিটি। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ঘরের মাঠে অপরাজিত রয়েছে সিটিজেনরা।
ম্যানচেস্টার সিটি বনাম অ্যাস্টন ভিলা, ৩ এপ্রিল :
সিটি যদি আর্সেনালের বিপক্ষে আজ জিততে পারে তারপরও তাদের জয়ের উৎসব খুব বেশি ক্ষণ স্থায়ী হতে দেবে না শীর্ষ চারের লড়াইয়ে থাকা অ্যাস্টন ভিলা। তিন দিন পরেই উজ্জীবিত ভিলার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে সিটি। প্রিমিয়ার লিগে হঠাৎ করেই এবার নিজেদের প্রমাণ করে সবাইকে হতবাক কয়ে দিয়েছে সাবেক ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ভিলা। এই মুহূর্তে টেবিলের চতুর্থ স্থানে থাকা ভিলার এখন একটাই লক্ষ্য প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নেওয়া। ডিসেম্বরে উনাই এমেরির দল সিটিকে পরাজিত করে অঘটন ঘটিয়েছিল। ৭৪ মিনিটে লিও বেইলির গোলে ভিলার ১-০ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত হয়। ওই সময় থেকে সিটি এখন পর্যন্ত অপরাজিত রয়েছে। টটেনহ্যামের সঙ্গে চতুর্থ স্থানে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ভিলাও সঠিক পথেই রয়েছে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বনাম লিভারপুল, ৭ এপ্রিল:
এফএ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ৪-৩ গোলের হতাশাজনক পরাজয়ের পর চির প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে খেলতে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে যাবে লিভারপুল। জার্গেন ক্লপের দল নিয়মিত সময় ও অতিরিক্ত সময়ে যথাক্রমে ২-১ ও ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকলেও আমাড ডিয়ালোর শেষ মুহূর্তের গোলে রেডসদের কোয়াড্রাপল জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয়।
ফেব্রম্নয়ারিতে লিগ কাপ জয়ের পর এখনো লিভারপুলের সামনে সুযোগ আছে প্রিমিয়ার লিগ ও ইউরোপা লিগ জয়ের মাধ্যমে ক্লপের বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখার। ২০২১ সালের পর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে রেডসদের প্রথম জয় ইউনাইটেডের সঙ্গে সমান ২০ লিগ শিরোপা জয়ের রেকর্ডের সম্ভাবনাকে টিকিয়ে রাখতে পারে।
টটেনহ্যাম বনাম আর্সেনাল, ২৮ এপ্রিল:
পুরনো এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে সবসময়ই একটি বাড়তি উত্তেজনা বিরাজ করে। নর্থ লন্ডন ডার্বির এবারের ম্যাচটিও তার ব্যতিক্রম নয়। এর আগে হোয়াইট হার্ট লেনেই ১৯৭১ ও ২০০৪ সালে লিগ শিরোপা জয় করেছিল আর্সেনাল। আরও একবার এই মাঠে জয়ের মাধ্যমে তৃতীয় শিরোপা জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারে গানার্সরা। সর্বশেষ ২০ বছর আগে লিগ শিরোপা জয় করা আর্সেনাল এবার আর পুরোনো ভুল করতে চায়না। সর্বশেষ ছয়টি নর্থ লন্ডন ডার্বিতে মাত্র একটিতে পরাজিত হয়ছে আর্সেনাল। সেপ্টেম্বরে এমিরেট স্টেডিয়ামে আগের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। আনগে পোস্তেকোগস্নুর অধীনে প্রথম মৌসুমে খেলতে নেমে নিজেদের ফিরে পাওয়া আগ্রাসী টটেনহ্যামও অবশ্য ছেড়ে কথা বলবে না। শীর্ষ চারে থেকে মৌসুম শেষ করার লক্ষ্য স্থির করা দলটি যেকোনো মূল্যে তাদের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে চায়।
অ্যাস্টন ভিলা বনাম লিভারপুল, ১১ মে:
সেপ্টেম্বরে অ্যানফিল্ডে ভিলাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল লিভারপুল। কিন্তু তারপরও ফিরতি লেগে কঠিন লড়াইয়ের আশা করছে রেডসরা। লিভারপুর বস হিসেবে এটাই হতে যাচ্ছে লিগে ক্লপের সর্বশেষ অ্যাওয়ে ম্যাচ। ভিলা পার্কে তাই টানা চতুর্থ জয়ের দিকেই তাকিয়ে আছেন ক্লপ। ২০২০ সালে সর্বশেষ লিভারপুলকে পরাজিত করেছিল ভিলা। ওই ম্যাচে ৭-২ গোলের বিধ্বস্ত হবার দুঃসহ স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেন না লিভারপুল বস। চার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো লিগ শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা এবার আর হাতছাড়া করতে চাইছে না লিভারপুল।
এই ম্যাচগুলোর ফলাফল যদি শিরোপা নির্ধারণে কোনো পার্থক্য গড়তে না পারে তবে আগামী ১৯ মে লিগের শেষ দিন আর্সেনাল-এভারটন, ম্যানচেস্টার সিটি-ওয়েস্ট হ্যাম ও লিভারপুল-উল্ফসের ম্যাচগুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।