শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বিশ্বকাপ প্রাক ও বাছাই পর্বের আগের চারটি ম্যাচ খেলতে পারেননি অভিজ্ঞ গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো। অনেক আশা করেছিলেন ঘরের মাঠে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে খেলবেন। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু বিধিবাম, ভাবলে কী হবে। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার প্রথম পছন্দ যে মিতুল মারমা। এমনকি মিতুল যখন চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন, তখন জিকো আশাবাদী ছিলেন নামতে পারবেন। এবারও দুর্ভাগ্য। শ্রাবণকে খেলিয়ে জিকোকে তিন নম্বর গোলরক্ষক করে রাখলেন ক্যাবরেরা। তাতেই হৃদয় ভেঙে গেছে জিকোর। তবে জাতীয় দলে তিন নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে খেলতে হবে, তা মানতে পারছেন না কক্সবাজার থেকে ওঠে আসা অভিজ্ঞ গোলরক্ষক।
ফিলিস্তিনের বিপক্ষে লড়াকু ম্যাচ খেলে এক গোলে হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে তিন পয়েন্ট হাতছাড়া হয়েছে। জিকো হতাশার সুরে বলেছেন, 'সৌদি আরবে ঘাম ঝরিয়েছি। যেভাবে কোচিং করিয়েছে, সেভাবেই সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি মনে করেছি কুয়েতে খেলতে পারব। সেখানে নিজেকে না দেখে খারাপ লেগেছে। ঢাকায় আশা বেড়ে গিয়েছিল। একাদশে নাম না দেখে আবারও হতাশ হই। এমনকি মিতুলের মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরও যখন দেখলাম আমি না, শ্রাবণ নামছে, তখন চূড়ান্ত হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছিলাম।'
এখন মিতুলের পর শ্রাবণ, এরপর জিকো। জাতীয় দলে তেকাঠির নিচে ক্রমটা এমনই। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে এক থেকে তিন নম্বরে নেমে গেছেন জিকো! যা এখনো মানতে পারছেন না, 'আমার মনে হয় না, আমি জাতীয় দলে তিন নম্বর গোলরক্ষক। আমার পারফরম্যান্স কেমন, অনুশীলনে কেমন করেছি সবাই দেখেছে। এছাড়া লিগে মোহামেডানসহ একাধিক দলের বিপক্ষে খেলে নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করেছি। তারপরও যদি জাতীয় দলে তিন নম্বর গোলরক্ষক হয়ে থাকতে হয় তাহলে কিছু বলার নেই।'
মিতুল ও শ্রাবণ সম্পর্কে জিকো ভালোবাসাই জানালেন, 'ওরা তরুণ। অভিজ্ঞতা কম। মিতুল ভালো খেলেছে। তবে অভিজ্ঞতা কম বিধায় শেষ দিকে এসে চাপের মুখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। আর শ্রাবণের বেলাতেও তাই। তা নাহলে ফ্লাইটটা মিস হতো বলে মনে হয় না। আমি তো মনে করেছিলাম আমি শেষ কয়েক মিনিট খেলতে পারব। কারণ আমার জাতীয় দলে ৩০টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এছাড়া এএফসি কাপসহ লিগে প্রচুর ম্যাচ খেলেছি। আমি কতটুকুু কী করতে পারি, তা সবাই জানে। সতীর্থদের সঙ্গে বিশেষ করে রক্ষণের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমার সমন্বয়টা বেশ ভালো। এখন কোচ কেন নামালেন না তিনিই ভালো বলতে পারবেন।'
আপাতত জাতীয় দলে আর খেলা নেই। জুনে অস্ট্রেলিয়া ঢাকায় আসবে। এছাড়া লেবাননের বিপক্ষে দেশের বাইরে ম্যাচ রয়েছে। জিকো চাইছেন তার আগে লিগে ভালো খেলে কোচের দৃষ্টি কাড়বেন, 'ফিলিস্তিন ম্যাচে খেলতে না পেরে আমি হতাশ হয়েছি। তবে হতাশা নিয়ে থাকলে তো হবে না। শনিবার থেকে লিগের ম্যাচ রয়েছে। নিজেকে নতুন করে গড়তে হবে। প্রমাণ করতে হবে, আমি আবারও এক নম্বর গোলরক্ষক হয়ে জাতীয় দলে ফিরতে চাই। এর জন্য নিজের সর্বোচ্চটা দিতে চাই।'