মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
টেস্ট ক্রিকেটে বিরল রেকর্ড

দুই ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরিতে ধনাঞ্জয়া-কামিন্দুর ইতিহাস

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
দুই সেঞ্চুরিয়ান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস

কোনো দলের নির্দিষ্ট দুইজন ব্যাটার এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন এমন ঘটনা লাল বলের ইতিহাসে বিরল। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে এমন বিরল কীর্তি গড়েছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। দুই ব্যাটসম্যানের রেকর্ড রানের ফলে ৫১১ রানের লিড নেয় শ্রীলংকা।

সিলেট টেস্টের নিয়িন্ত্রণ এখন পুরোপুরি শ্রীলংকার হাতে। সফরকারীদের ড্রাইভিং সিটে বসানোর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান কামিন্দু-ধনাঞ্জয়ার। প্রথম ইনিংসে ৫৭ রানে টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটারকে হারিয়েছিল শ্রীলংকা। সেখান থেকে দুইশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দেন এই দুই ব্যাটার।

একটা সময় বলা হতো, কুমার সাঙ্গাকারা বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামলেই সেঞ্চুরির বন্যা বইয়ে দিতেন। পরিসংখ্যান সেই কথাই তো বলছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে পরপর দুই বছর দুই পৃথক টেস্টে দুই ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি সাঙ্গাকারার। ২০১৩ সালে গলে ১৪২ ও ১০৫ রান। ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে ৩১৯ ও ১০৫। এর মধ্যে একই ম্যাচে ট্রিপল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরির একমাত্র রেকর্ডটি তারই দখলে। সাঙ্গাকারা এখন নেই। তবে উত্তরসূরি ঠিকই তৈরি করে গেছেন। যারা পূর্বসূরির চেয়েও একধাপ এগিয়ে।

ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের কথাই চিন্তা করুন। সিলেট টেস্ট দুইজন রাঙালেন জোড়া সেঞ্চুরিতে। প্রথম ইনিংসে ১০২ রান রানের দুটি ইনিংস খেলেন ধনঞ্জয়া ও কামিন্দু। দ্বিতীয় ইনিংসেও তাদের ব্যাটে এসেছে সেঞ্চুরি। ধনঞ্জয়া ১০৮ রানের পর কামিন্দু ১৬৪ রান করলেন। এতেই ইতিহাস।

টেস্ট ক্রিকেটে এ নিয়ে তৃতীয়বার দুই ব্যাটসম্যান দুই ইনিংসে

জোড়া সেঞ্চুরি করলেন। ১৯৭৪ সালে চ্যাপেল ব্রাদার্স দুই ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি করেছিলেন। ইয়ান চ্যাপেল প্রথম ইনিংসে ১৪৫ ও গ্রেগ চ্যাপেল ২৪৭ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে আবার তাদের ব্যাটে সেঞ্চুরি। নিউজিল্যান্ড বোলারদের নাস্তানাবুদ করে ইয়ান চ্যাপেল ১২১, গ্রেগ চ্যাপেল ১৩৩ রান করেন।

ঠিক ৪০ বছর পর ২০১৪ সালে পাকিস্তানের মিজবাহ উল হক ও আজহার আলী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি করেন। প্রথম ইনিংসে আজহার আলী ১০৯, মিজবাহ উল হক ১০১ রান করেন। পরের ইনিংসে আজহার আলী ১০০ ও মিজবাহ উল হক ১০১ রান করেন।

১০ বছর এলিট এই ক্লাবে নাম লিখালেন ধনঞ্জয়া ও কামিন্দু। প্রথম ইনিংসে ২০২ রানের জুটি গড়ে দলকে খাদের কিনারা থেকে তুলেছিলেন। ৫৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর তাদের জুটিতেই বাংলাদেশকে কঠিন জবাব দেয় অতিথিরা। এবার দ্বিতীয় ইনিংসেও তাদের ব্যাটে বিশাল লিড। রোববার ৫ উইকেটে ১১৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে শ্রীলংকা। স্কোর বোর্ডে ৭ রান যোগ করতে বিশ্ব ফার্নান্দো আউট হন।

সেখান থেকে ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দুর লড়াই শুরু হয়। বাংলাদেশ ব্যাকফুটে পাঠিয়ে ব্যাট হাতে দু্যতি ছড়িয়ে দুইজন তরতরিয়ে রান তোলেন। উইকেটের চারপাশে শট খেলে যেভাবে রান তুলছিলেন, এতে মনে হচ্ছে রান করা অতি সহজ কাজ।

প্রথমে ধনাঞ্জয়া সেঞ্চুরি তুলে নেন। তার আউটের পর কামিন্দু হতাশ করেননি। চোখের পলকে তিনিও পৌঁছে যান তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগারে ১৬৪। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে কুমার সাঙ্গাকারা (২০১৩ ও ২০১৪) ও তিলকারত্নে দিলশান (২০০৯) এক টেস্টে দুই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। সেই তালিকায় ধনঞ্জয়া ও কামিন্দু নাম তুললেন অতি সহজে। ধনাঞ্জয়া ইতিহাসের পাতায় কিছুটা এগিয়ে থাকবেন। অধিনায়ক হিসেবে তার কীর্তিই যে প্রথম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে