দুই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে এখন আরও গোছানো দল বাংলাদেশ
প্রকাশ | ১৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৪, ০০:২৮
ক্রীড়া প্রতিবেদক
সৌদি আরবে দারুণ প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। দুই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে জামাল-মুরাদদের মধ্যে বুঝাপড়াটা খুব ভালো হয়েছে। তাই আগের থেকে দল আরও বেশি গোছানো। প্রস্তুতি ম্যাচের পর শনিবার এক ভিডিও বার্তায় দলের তিন ফুটবলার জানিয়েছেন সৌদিতে নিজেদের ক্যাম্পিংয়ের অভিজ্ঞতা।
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ডিফেন্ডার মুরাদ হাসান বলেন, 'ফিলিস্তিন আর সুদান প্রায় সমমানের দল। আমরা চেষ্টা করব ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ভালো খেলার। আমি যেহেতু একজন সৈনিক। আমি মনে করি এখানে একটা যুদ্ধতে এসেছি। যাতে আমরা এখান থেকে কিছু একটা নিয়ে যেতে পারি বাংলাদেশে, সেভাবেই চেষ্টা করব আমরা। আমাদের রক্ষণ নিয়ে কাজ করা হয়েছে। কোচ আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন আমার ডিফেন্ডিং অনেক ভালো। শুধু বিল্ডআপে ফোকাস করতে বলেছেন। আমি এটায় উন্নতি করেছি।'
'আমরা সৌদিতে এসেছি, যেহেতু আমাদের মূল খেলা কুয়েতে। সৌদি আর কুয়েতের আবহাওয়া একই রকম। শুরু থেকে কোচ যে অনুশীলন করিয়েছেন সব কিছু মিলে বেশ ভালো হচ্ছে।' যোগ করেন এই ফুটবলার।
মিডফিল্ডার জায়েদ হাসান বলেন, 'যেহেতু আমরা লিগ খেলে সৌদি আরবে এসেছি। সবাই অনুশীলনের মধ্যেই ছিল, খেলার মধ্যেই ছিল। যখন এখানে প্রথম এসেছি। শুরুর দু'একদিন ঠান্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটু কষ্ট হয়েছে। কারণ সৌদিতে একটু বাতাস আছে আর তায়েফ সিটিতে একটু ঠান্ডা বেশি। সবাই ধীরে ধীরে আলস্নাহর রহমতে আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী সব কিছু আলহামদুলিলস্নাহ ভালো চলছে।'
জায়েদ মনে করেন জাতীয় দলে খেললে সবাই নিজের তাগিদেই দেশের জন্য নিজের উন্নতি করতে চায়, 'জাতীয় দল সব সময়ই একটা স্পেশাল জায়গা। এখানে সবাই চায় উন্নতি, সেটা ব্যক্তিগত হোক বা দলের পারফরম্যান্স। সবাই চায় নিজের শতভাগ দিতে। কারণ নিজে যদি শতভাগ দিতে পারে, তাহলে দলও এর সুফল পাবে। নিজের পারফরম্যান্সেরও উন্নতি হবে। এখন ফিলিস্তিনের ম্যাচ নিয়ে পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন কোচ। আমরা দু'টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি সুদানের সঙ্গে।'
জায়েদ জানান জাতীয় দলে ডাক পাওয়াতে তার এলাকার মানুষজন খুব খুশি,'যখন আমার শহর থেকে জাতীয় দলে যাই। তখন আমার এলাকার মানুষ নিজে থেকে একটা আনন্দ বোধ করে,যে এই জায়গা থেকে আমরা জাতীয় দলে খেলতে পারছি। আগে সাদ ভাই, মতিন ভাইরা ছিল। তাদের দেখে সব সময় নিজের ভেতর একটা অনুভূতি কাজ করতো, যে কখন জাতীয় দলে সুযোগ পাব, খেলতে পারব। সাদ ভাইয়ের সঙ্গে আমরা খেলতে পারছি আমাদের এলাকার মানুষ সবাই তাই অনেক খুশি।'
ফরোয়ার্ড রফিকুল ইসলাম জানালেন জাতীয় দলে তার প্রথম খেলার অনুভূতির কথা, 'আমি জাতীয় দলে যখন প্রথম ডাক পাই তখন এতোটা খুশি হয়েছি যেটা প্রকাশ করার মতো না। আমি ক্লাবে খেলতাম,ফর্টিস ছিল প্রথম দল। তখন মনে হতো যদি জাতীয় দলে যদি এ বছর সুযোগ পেতাম খুব ভালো হতো। আমাদের টাঙ্গাইলের বড় ভাইরা আছে তিন-চারজন, সব সময়ই থাকে, তাদের সঙ্গে ক্যাম্প করতে পারলে আমি জাতীয় দলে থাকতে পারলে ভালো কিছু হবে আমার জন্য। কিন্তু এই জায়গায় আসার পর আমি দেখেছি ক্লাব ক্লাবের জায়গায়,জাতীয় দল জাতীয় দলের জায়গায়। মানে দেশের হয়ে খেলা। এই জায়গায় আসাটা খুবই গর্বের বিষয়। যে বছর প্রথম জাতীয় দলে ডাক পাই আমার বাবা-মা খুবই খুশি হয়েছিলেন।'
'আমি দেশের জন্য প্রথম অনূর্ধ্ব ২৩ দলের হয়ে খেলেছি। যে বছর ভারতে খেলা হয়েছিল। তখন আমি ভাবতে পারিনি যে সেরা একাদশে খেলতে পারব। কিন্তু ঐখানে যেয়ে খেলতে পেরেছি। প্রথম যখন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলতে নেমেছি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে, সেখানে আমি ভালো পারফরম্যান্স করি। সেখান থেকেই শুরু। এরপর আমি সাফের দলে ডাক পাই। সাফে ডাক পাবার পর প্রথম বছরই কোচ আমাকে সুযোগ দিয়েছেন। আমিও চেষ্টা করেছি দেশের জন্য নিজের সর্বোচ্চটাই দিতে।' যোগ করেন রফিকুল।
গত কয়েক দিনের ক্যাম্পিং আর দুই প্রস্তুতি ম্যাচ দলটাকে এখন দারুণ গোছানো অবস্থায় নিয়ে গেছে বলে জানালেন রফিকুল, 'প্রথমদিকে দলের বোঝাপড়ায় একটু ঘাটতি ছিল। তবে এর মধ্যে আমাদের দু'টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পর দলের সবার মধ্যে দারুণ বোঝাপড়া হয়েছে। গোছানো টিম হয়েছে এখন আমাদের,আশা করা যায় ভালো কিছুই হবে। আমি যদি সুযোগ পাই সেটা সেরা একদশ বা বদলি হিসেবেই হোক, দেশের জন্য যে কোন কিছু করতে আমি প্রস্তুত। হয়তো গোল করতে পারি বা গোল করাতে পারি, এটাই আমার কাজ থাকবে। ক্লাবে এক ধরনের মজা। এখানে অন্যরকম মজা। সব ক্লাব থেকে এখানে ফুটবলার আসে। আর এখানে সবাই ভালো মানুষ। বিশেষ করে রবিউল ভাই, বিশ্বনাথ ভাই উনারা এতো মজা করেন, এই বিষয়টা আরও বেশি ভালো লাগে।'