সকালটা শুরু হয় জেমস অ্যান্ডাসরনের ৭০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করা দিয়ে। অ্যান্ডারসনের ওই মাইলফলক ছাড়া বাকি সময় ইংল্যান্ডের আনন্দের উপলক্ষ আর আসেনি। বরং শততম টেস্ট খেলতে নেমে সফরকারীদের চেপে বিপুল উদ্যাপনে মাতোয়ারা হয়েছেন ভারতীয় স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্টে ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশিবার পাঁচ উইকেট শিকারের ইতিহাস গড়েছেন তিনি।এতে ইংল্যান্ড হেরেছে তিন দিনেই।
ধর্মশালা টেস্টে শনিবার তৃতীয় দিনেই এসে গেছে ফল। ভারতের কাছে ইনিংস ও ৬৪ রানে বিধ্বস্ত হয়েছে ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ২১৮ রান করা সফরকারীরা দ্বিতীয় ইনিংসে থামে ১৯৫ রানে। ভারতের একবার ব্যাট করে করা ৪৭৭ রান সফরকারীদের জন্য যে অনেক বেশি হয়ে গেছে, তা বোঝা গেছে খেলার ধরনে। পাঁচ টেস্টের সিরিজের প্রথমটি জিতে শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত ৪-১ ব্যবধানে হেরে সিরিজ শেষ করল বেন স্টোকসের দল ইংল্যান্ড।
ক্যারিয়ারের শততম টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচটিসহ ম্যাচে ১২৮ রানে ৯ উইকেট নেন অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। শততম টেস্টে কোনো ক্রিকেটারের সেরা বোলিং এটিই। আগের সেরা ছিল শ্রীলংকার স্পিনার মুত্তিয়াহ মুরালিদারানের ১৪১ রানে ৯ উইকেট, ২০০৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে। ম্যাচের সেরা যদিও অশ্বিন নন, পুরস্কারটি পান কুলদিপ যাদব। বাঁহাতি এই রিস্ট স্পিনার প্রথম ইনিংসে পাঁচটিসহ ম্যাচে নেন ৭ উইকেট। ব্যাট হাতে খেলেন ৩০ রানের ইনিংস।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার অশ্বিন, সিরিজের সবচেয়ে সফলও তিনি। এই অফ স্পিনার প্রথম ইনিংসেও নেন ৪ উইকেট। শততম টেস্টে ৯ উইকেট নিয়ে বসেন মুত্তিয়া মুরালিধরনের পাশে। ২৫৯ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ওভারেই হারায় উইকেট। অশ্বিনের বলে অহেতুক বেরিয়ে এসে এলোপাতাড়ি শটের চেষ্টায় বোল্ড হন বেন ডাকেট। ষষ্ঠ ওভারে আরেক ওপেনার জ্যাক ক্রলি অশ্বিনের বলেই ফেরেন খালি হাতে। দশম ওভারে ওলি পোপও অশ্বিনের শিকার।
৩৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ইংল্যান্ডকে টানতে পাল্টা আক্রমণের মেজাজ দেখাচ্ছিলেন জনি বেয়ারস্টো। কিন্তু তার আগ্রাসন খুব বেশি স্থায়ী হয়নি। কুলদীপ যাদবের ক্ল্যাসিক্যাল রিষ্ট স্পিন বুঝতে না পেরে এলবিডবিস্নউ হয়ে ফেরেন ৩১ বলে ৩৯ করে। সিরিজজুড়ে হতাশাময় পারফরম্যান্স করা বেন স্টোকস এদিনও ব্যর্থ। অশ্বিন তাকে বোল্ড করে ধরেন চতুর্থ শিকার।
৫ উইকেটে ১০৩ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড। লাঞ্চ সেরে ফিরেই ফের অশ্বিনের আঘাত। বেন ফোকসকে বোল্ড করে টেস্টে ৩৬তম পাঁচ উইকেট তুলে নেন অশ্বিন। অনিল কুম্বলেকে টপকে তিনিই এখন ভারতের সবচেয়ে বেশি পাঁচ উইকেট নেওয়া বোলার।
এক পাশে জোর রুট টিকে দলের রান বাড়াচ্ছিলেন। টম হার্টলিকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন তিনি। সপ্তম উইকেট জুটিতে ২৮ রান যোগ করেন তারা। ছোট্ট এই প্রতিরোধ ভেঙে জোড়া আঘাত হানেন জাসপ্রিত বুমরাহ। হার্টলি ও মার্ক উডকে পরপর দারুণ দুই ইয়র্কারে এলবিডবিস্নউতে ফেরান তিনি। এরপর শোয়েব বশিরের সঙ্গে নবম উইকেট ৬৮ বলে ৪৮ রানের জুটি গড়ে হারের ব্যবধান কমান রুট। নিজের সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন, তা আর হয়নি। শেষ ব্যাটার হিসেবে কুলদীপের বলে ছক্কার চেষ্টায় ৮৪ রানে থামেন রুট। ১২৮ বলের ইনিংসে ১২ চারে একা লড়াই চালান ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটসম্যান।