সৌদি আরবে দিন যত গড়াচ্ছে, বাংলাদেশের প্রস্তুতি হচ্ছে তত আঁটসাঁট। টেকনিক্যাল দিক নিয়ে কাজ চলছে। রক্ষণভাগের দৃঢ়তা বৃদ্ধি নিয়ে কাজের পাশাপাশি শুরু হয়েছে ভিডিও সেশন। সেখানে ফিলিস্তিনের শক্তি, সামর্থ্যের নানা দিক খেলোয়াড়দের বুঝিয়ে দিচ্ছেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। আসছে ম্যাচের কৌশলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি জিকো-তপু-রাকিবরা বুঝতে পারছেন নিজেদের করণীয়ও।
ক্যাবরেরার কৌশল বরাবরের মতোই- রক্ষণ সামলে পাল্টা আক্রমণে ওঠা। সৌদির কিং ফাহাদ স্পোর্টস সিটি গ্রাউন্ডে বুধবার চতুর্থ দিনের প্রস্তুতিতে কোচ দেখিয়েছেন ডিফেন্সিভ বস্নক তৈরির কৌশল; পাশাপাশি মাঝমাঠ প্রতিপক্ষের তাল কীভাবে কেটে দিতে হবে এবং আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের অবস্থান হবে মাঠের কোথায়। ২০২৬ বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের প্রথম লেগের ম্যাচে আগামী ২১ মার্চ ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ফিলিস্তিন ম্যাচটি খেলবে নিরপেক্ষ ভেনু্য কুয়েতে। সৌদি আরবে ক্যাম্প করার ফলে কুয়েতের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ হচ্ছে জামাল-জিকোদের জন্য।
বাফুফের মাধ্যমে পাঠানো ভিডিও বার্তায় সহকারী কোচ হাসান আল মামুনও জানালেন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি খেলোয়াড়রা কোচের কৌশলও রপ্ত করতে পারছেন ভালোভাবেই, 'ফিলিস্তিন কীভাবে আক্রমণে যায়, আমরা এই চার দিনের সেশনে সেসব নিয়ে কাজ করেছি। ব্যক্তিগত বা দলীয় মিটিংয়ে ভিডিও সেশন এবং মাঠের অনুশীলনের মাধমে আমরা ফুটবলারদের ধারণা দিয়েছি। ডিফেন্সে বস্নক কীভাবে করব, মাঝমাঠ কতটুকু প্রতিপক্ষের জন্য সঙ্কুচিত করব, উপরে যারা স্ট্রাইকিংয়ে খেলবে তাদের করণীয়, কার কি দায়িত্ব থাকবে, মূলত এই বেসিকটা নিয়ে এই চার দিন কাজ করেছি। পরের সপ্তাহে যদি আমরা সুদানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলি, তাহলে দল নিয়ে আরও ধারণা পাবো। এ সপ্তাহে আমরা যে কাজগুলো করেছি, ছেলেরা সেটা কতটুকু মাঠে বাস্তবায়ন করবে, সেটা বুঝতে পারব।'
'আমি আশাবাদী যে, ফুটবলাররা নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে গেছে। পজিশনাল ডিফেন্ডিংয়ে কে কোথায় থাকবে, মাঝমাঠ কতটা সঙ্কুচিত করা হবে, আক্রমণভাগে কে কতটুকু উঁচুতে থাকবে, আমার মনে হয়, ছেলেরা এগুলো আয়ত্ত করে ফেলেছে। ছেলেরা স্মার্ট, বুদ্ধিমান। কোচিং স্টাফরা যা চাচ্ছে, তারা সেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছে। দিন শেষে দল কীভাবে সম্মিলিতভাবে ডিফেন্ড করবে, সেটা তারা বুঝে ফেলেছে। এটা আরও সহজ হবে, যখন আমরা একটা ম্যাচ খেলতে পারব।' যোগ করেন মামুন।
ক্যাবরেরার কৌশলের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বনাথ ঘোষ, তপু বর্মন, রহমত মিয়ারা। ফিলিস্তিনের শক্তিশালী আক্রমণভাগের সামনে রক্ষণ জমাট রাখার দায়িত্ব এই অভিজ্ঞদের কাঁধেই থাকবে বেশি। দলের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং বোঝপাড়া থাকায় এ ভার বয়ে নিতে আশাবাদী ৩৯ বছর বয়সি বিশ্বনাথ, 'প্রথম দিন রিকভারি করেছি, এরপর হালকা ট্রেনিং করেছি। আজকে আমরা প্রতিপক্ষ দলের শক্তি কেমন হবে, সেটা নিয়ে কাজ করেছি। কোচ আমাদের ধারণা দিয়েছেন। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে কীভাবে বস্নক করব, কতটা উপরে উঠে খেলব বা নিচের দিকে থাকব, এসব বুঝিয়ে দিয়েছেন।'
'সিনিয়র বলতে, বিষয়টা তেমন কিছু নয়। যখনই যে দলে আসে, পারফরম করেই আসে। দেশের শীর্ষ পর্যায়ের খেলোয়াড়রাই জাতীয় দলে আসে, সুযোগ পায়। বিগত দিনে আমাদের যে দলটা ছিল, তার সাথে আমার মনে হয়, বর্তমান দলটা তেমন পার্থক্য নেই। যারা এসেছে, তারা লিগে সর্বোচ্চটা দেখিয়েই এসেছে। সবাই সবার জায়গা থেকে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি দেখছি, সিনিয়র, জুনিয়র মিলে দলে সবার মধ্যে সম্মান শ্রদ্ধা আছে, বোঝাপড়া ভালো। যদি এরকম চলতে থাকে, আমাদের পক্ষে ভালো কিছু করা সম্ভব।'