পূর্ণাঙ্গ ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব পেলেও ব্যাটে রান খরায় অস্বস্তিতে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিপিএলে চরম ব্যর্থতার পর শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম টি২০তেও নিষ্প্রভ ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি করে দলকে জেতানোর পর বেশ নির্ভার এখন বাঁ হাতি ব্যাটার। দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যাচসেরা হয়ে জানিয়েছেন ব্যাটিংয়ের ঘাটতি পূরণের জন্য একটা টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে কাজ করছিলেন তিনি।
২০২৩ সালটা দারুণ কেটেছিল শান্তর। ঐ বছর বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে বেশ কিছু রেকর্ডও ভেঙেছিলেন তিনি। কিন্তু এ বছর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি শান্ত। লিগ পর্বে সিলেটের শেষ ম্যাচে নিজের সর্বোচ্চ ৩৯ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন শান্ত। পারফরম্যান্স এতটাই হতাশাজনক ছিল যে পুরো টুর্নামেন্টে একটি ছক্কাও মারতে পারেননি তিনি।
বিপিএলে টানা ১২ ম্যাচ খেলে মাত্র ১৪.৫৮ গড় আর স্রেফ ৯৩.৫৮ স্ট্রাইকরেটে মোটে ১৭৫ রান করেন শান্ত। একটাই ফিফটি আসেনি তার ব্যাটে। আন্তর্জাতিক টি২০-তেও ফিফটি পাননি ১১ ম্যাচ। এর আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপও ভুলে যাওয়ার মতন হয়ে যায় শান্তর।
গত বুধবার শ্রীলংকাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের ১৬৫ রান টপকাতে ৩৮ বলে অপরাজিত ৫৩ রান করেন শান্ত। জানালেন ঘাটতি নিয়ে কাজ করে নিজেকে ফিরে পাচ্ছেন তিনি, 'হঁ্যা বিপিএলটা ভালো যায়নি। চেষ্টা করছি ব্যাটিংয়ে যে ঘাটতি ছিল সেটা নিয়ে কাজ করার। একটু ভালো হয়েছে, আলহামদুলিলস্নাহ। চেষ্টা করব সামনে এটা ধরে রাখার।'
শান্ত বলেন, 'আমি ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছিলাম। কী নিয়ে কাজ করছিলাম তা বলতে চাই না টেকনিক্যাল বিষয়। কাজ করাতে যে ম্যাচে ফল এসেছে এমন কিছু না। অনেক দিন থেকেই একটা জিনিস ঠিক করার চেষ্টা করছি। আরও একটু ভালো করতে হবে।'
আন্তর্জাতিক টি২০-তে ১১ ম্যাচ পর ফিফটি পান শান্ত। পুরো বিপিএলে ফিফটি তো দূরে থাক, মারতে পারেননি একটি ছক্কাও। চরম রান খরা কাটার দিনে ফিফটি ও দুই ছক্কা এসেছে। তবে শান্ত মনে করেন দলের চাহিদা পূরণ করতে পারাই তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, '১১ ম্যাচ পরে করলাম। ৫০ করাটা গুরুত্বপূর্ণ না, আমার কাছে মনে হয় দলের জন্য যে রানটা করেছি তা কতটা ইফেক্টিভ। করতে পেরেছি খুবই ভালো লাগছে। ভালো লেগেছে যে খেলাটা শেষ করতে পেরেছি। চেষ্টা করব সামনে এটা ধরে রাখার।'
'আপনাদের মাধ্যমেই জেনেছি (বিপিএলে একটাও ছক্কা না মারা)। নিজেও জানতাম না। অনেক সময় আসলে কখন ব্যাট করছি, কত স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করছি তা জরুরি। বিপিএলে আমি সংগ্রাম করেছি, স্ট্রাইকরেট ভালো ছিল না।'
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২২ বলে ২০ করেন শান্ত। নিজের সেরাটা দিতে আবারও ব্যর্থ হওয়ায় তাকে নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন এবং নিজের কথাও রেখেছেন শান্ত। দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের জন্য সতীর্থদের কৃতিত্ব দিয়েছেন শান্ত। তৃতীয় এবং শেষ টি২০ অলিখিত ফাইনালে রূপ নিয়েছে।
দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে শান্ত বলেন, 'আমি মনে করি, যেভাবে ফিরে এসেছি, এটি আমাদের চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছে। এই কন্ডিশনে যেভাবে আমরা বোলিং করেছি, তাতে সত্যিই খুশি। আমি কোনো বোলারকে বিশেষভাবে কৃতিত্ব দিচ্ছি না, তারা সবাই খুব ভালো বোলিং করেছে। বিপিএলেও ভালো বোলিং করেছিল শরিফুল। এজন্য সে তার ফর্ম খুঁজে পেয়েছে এবং আমি তার পারফরম্যান্সে খুশি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি মনে করি লিটন এবং সৌম্য খুব ভালো শুরু করেছে এবং পরে হৃদয়ও ভালো ব্যাটিং করেছে। এটি পুরোপুরি দলগত পারফরম্যান্স ছিল। অবশ্যই ব্যাটার হিসেবে আপনি প্রতি ম্যাচেই রান করতে চান। আশা করছি আমার ফর্ম অব্যাহত থাকবে।'