ফিলিস্তিনের বিপক্ষে রক্ষণ দৃঢ় করার চেষ্টা বাংলাদেশের

প্রকাশ | ০৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ম্যাচ উপলক্ষে সৌদি আরবের তায়েফে কঠোর অনুশীলনে ব্যস্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফুটবলাররা -বাফুফে
এশিয়ান কাপে ফিলিস্তিন দারুণ ফুটবল খেলেছে। তাদের আক্রমণভাগ সমীহ জাগানো। ২১ ও ২৬ মার্চ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচের আগে ফিলিস্তিনের আক্রমণভাগকে কীভাবে সামলাতে হবে তা নিয়ে সৌদি আরবের তায়েফে কাজ করছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। সামেহ মারাবা, তামের সেয়াম, ওদে দাব্বাঘের মতো ধারালো ফরোয়ার্ড আছে ফিলিস্তিনের আক্রমণভাগে। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ম্যাচে তাই বাংলাদেশের ডিফেন্ডারদের জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন পরীক্ষা। বিষয়গুলো মাথায় রেখে সৌদি আরবে চলমান ক্যাম্পে রক্ষণের দৃঢ়তা বাড়াতে কাজ শুরু করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৪৩ ম্যাচে ১১ গোল সামেহর। সেয়াম ও দাব্বাঘের নামের পাশে গোল আছে ১৩টি করে। গত এশিয়ান কাপে ইরানের বিপক্ষে সেয়াম আর হংকংয়ের বিপক্ষে দাব্বাঘ গোলের দেখা পেয়েছিলেন। ওই আসরে নকআউট পর্বে ওঠার পথে ফিলিস্তিন হারিয়েছিল হংকংকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে করেছিল ড্র আর হেরেছিল ইরানের বিপক্ষে। শেষ ষোলোয় তারা কাতারকে কাঁপিয়ে দিয়ে হেরেছিল ২-১ গোলে। পরে এশিয়ান কাপের শিরোপা জিতেছিল কাতার। ফিলিস্তিনের আক্রমণভাগের শক্তি-সামর্থ্যের প্রশংসা দেশে থাকতেও করেছেন ক্যাবরেরা। এখন চলছে তাদের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রস্তুতি। সৌদি আরবের কিং ফাহাদ স্পোর্টস সিটি গ্রাউন্ডে তৃতীয় দিনের অনুশীলনে রক্ষণভাগ নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছেন এই স্প্যানিশ কোচ। সিনিয়র ও জুনিয়রদের দারুণ বোঝাপড়ায় মুগ্ধ ক্যাবরেরা,'সবকিছুই খুব ইতিবাচকভাবে চলছে। দলও সবকিছুর সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে নিচ্ছে, যেমনটা প্রত্যাশা করেছিলাম আমরা। ফিলিস্তিনের আক্রমণভাগ সামলাতে আজ আমরা বিশেষ করে রক্ষণ নিয়ে কাজ করেছি। আক্রমণ প্রতিহত করা নিয়ে কাজ করেছি। সবকিছুই ভীষণ ইতিবাচক। কেবল সিনিয়র নয়, জুনিয়ররাও সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে, এখন পর্যন্ত যে প্রক্রিয়ায় সবকিছু চলছে, প্রথম সপ্তাহের জন্য আমাদের যে পরিকল্পনা, তাতে আমি ভীষণ খুশি।' গত বছর বিমানবন্দরের সেই আলোচিত 'মদ-কান্ডের পর জাতীয় দলে ফিরেছেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। তার অনুপস্থিতিতে পোস্ট সামলেছিলেন মিতুল মারমা। ফিলিস্তিন ম্যাচে রক্ষণভাগের পর গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে যাবে মূল ঝড়।  জিকো, মিতুল, মেহেদী হাসান শ্রাবন- এই তিনজনের মধ্যে ক্যাবরেরা ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ২১ মার্চের প্রথম লেগের ম্যাচে কাকে দেবেন পোস্ট সামলানোর দায়িত্ব, তা সময়ই বলে দেবে। তবে বাফুফের মাধ্যমে পাঠানো ভিডিও বার্তায় মিতুল জানালেন, কাবরেরার আস্থা অর্জনের জন্য গোলকিপার কোচ মিগেল আনহেল আনিদোর অধীনে অনুশীলনে শতভাগ নিংড়ে দিচ্ছেন তারা। 'আমরা এখানে অনুশীলন অনেক উপভোগ করছি। কোচ নতুন নতুন টেকনিক নিয়ে কাজ করছে। আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি এবং সবকিছু উপভোগ করছি। জাতীয় দলে সব পজিশন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, এখানেও (জায়গা পাওয়ার) লড়াইটা বেশি। সবশেষ যে ম্যাচগুলোয় আমি খেলেছি, সেসময় জিকো ভাই ছিলেন না। উনি ফিরেছেন। সে হিসেবে এখানে আমাদের সামনে অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। আমি চেষ্টা করব, নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে টিমে জায়গা করে নেওয়ার।' 'এখানে (সৌদিতে) অনেক ভালো ফ্যাসিলিটিজ পাচ্ছি, ট্রেনিং ক্যাম্প, মাঠ, হোটেল সবকিছু ভালো। ওই হিসেবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে ফিলিস্তিন ম্যাচে ভালো কিছু করার। প্রতিটি টু্যরেই আমরা নিজেদের যে দুর্বল দিক আছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করি। মিগেল অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ মানসিকতার। যার যে দুর্বল দিক, সেগুলো নিয়ে সে কাজ করে। এই বিষয়গুলো নিয়ে ও কাজ করতে পছন্দ করে।' যোগ করেন মিতুল। আরেক গোলরক্ষক মাহফুজ হাসান প্রীতম বলেন,'আগের থেকে অনেক বেশি নতুন ফুটবলার আছে এবারের ক্যাম্পে। সবাই খেলার জন্য মরিয়া। যে কারণে আগের ক্যাম্পগুলো থেকে এবার প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। সবাই পারফর্ম করতে চায় এবং সবার পারফর্ম করার মতো সক্ষমতা আছে। প্রত্যেকটা ফুটবলার এই কম্পিটিশনটা উপভোগ করছে। যেহেতু একই পজিশনের জন্য অনেক ফুটবলার লড়াই করছে, কোচরাও এটা উপভোগ করছেন।' জাতীয় দলের আগের ক্যাম্পগুলো থেকে এবারের ক্যাম্পের আরও একটি পার্থক্যের কথা জানালেন এই ফুটবলার,'আগের থেকে আরেকটা পার্থক্য হলো এখনকার পেস্নয়ারদের মধ্যে উইনিং মেন্টালিটি অনেক বেশি। এই জিনিসটা আসলে খুবই পজেটিভ, হার না মানার যে মানসিকতা। এটা দলের জন্য খুবই পজেটিভ।'