আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে কেউই হারেনি
প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনী-মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। শুক্রবার এই দুই দলের মৌসুমের দ্বিতীয় দেখাটিও হলো দারুণ উপভোগ্য। লাল কার্ড, দুই পেনাল্টি আর চার গোল। কোনো কিছুরই কমতি ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আবাহনী-মোহামেডানের লড়াইটা শেষ হলো ২-২ গোলের ড্র'তে।
জোড়া গোল করেন মোহামেডানের সুলেমান দিয়াবাতে। আর এই ড্রয়ে ৯ ম্যাচ থেকে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানটি ধরে রাখল মোহামেডান। সমান ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানেই থাকল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। একই দিনে গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ২-১ গোলে হারায় জায়ান্ট কিলার খ্যাত পুরানো ঢাকার দল রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে।
ময়মনসিংহে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে ম্যাচ শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই লিড নেয় ঢাকা আবাহনী। প্রথম মিনিটে বল নিয়ে মোহামেডানের অর্ধে ঢুকে পড়েন আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ব্রম্ননো রোকা গঞ্জালভেজ। তাকে আটকে দিতে গিয়ে ফাউল করে বসেন মোহামেডানের আরিফ। ফ্রি কিক পায় আবাহনী। বা-প্রান্ত থেকে ব্রম্ননো গঞ্জালভেজের ডান পায়ের ফ্রি কিক সরাসরি আশ্রয় নেয় মোহামেডানের জালে (১-০)। ৩ মিনিটে বা-প্রান্ত ধরে বক্সে ঢুকে শট নেন মোহামেডান অধিনায়ক মালীর ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি বল। তবে গোল না পেলেও কর্ণার আদায় করে নেয় সাদা-কালোরা। ডান প্রান্ত থেকে উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফফারভের কর্ণার থেকে বল পৌছায় বক্সে। তবে তেমন কোনো সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। ১১ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে মোজাফফারভের ফ্রি কিক অল্পের জন্য খুঁজে পায়নি আবাহনীর জাল। ১৪ মিনিটে বক্সের বা প্রান্ত থেকে ব্রম্ননো রোকার শট চলে যায় বারের কাছ দিয়ে। ১৯ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে দূরপালস্নার শট নিয়েছিলেন মোহামেডানের এক ফুটবলার। বল গ্রিপ করেন আবাহনীর গোলরক্ষক। ২৫ মিনিটে বক্সের বেশ কাছেই ফ্রি কিক পায় মোহামেডান। মোজাফ্ফারভের ফ্রি কিক চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৩০ মিনিটে বা-প্রান্ত থেকে মোহামেডানের কামরুলের কর্ণার তেমন কোনো সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। তবে ফিরতি বলে শট নেন মিনহাজ রাকিব। তিনিও বল পোস্টে রাখতে পারেননি। ৩৩ মিনিটে বা-প্রান্ত থেকে ব্রম্ননো রোকার কর্ণার প্রথমে ফিস্ট করেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন। বল পেয়েও ঠিকমতো মাথা ছোঁয়াতে পারেননি হৃদয়। দৌড়ে এসে বল গ্রিপ করেন সুজন। এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে যায় আবাহনী।
৫৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আকাশী-নীলরা। ডান প্রান্ত থেকে ওয়াশিংটনের ক্রস বক্সে জটলার মধ্যে পেয়ে হেড নেন ব্রম্ননো রোকা। পোস্টের কাছ থেকে ফাইনাল টাচ দিয়ে গোল নিশ্চিত করেন সেন্ট ভিনসেন্টের ফরোয়ার্ড কর্নেলিয়াস স্ট্রুয়ার্ট (২-০)। ৬৮ মিনিটে একটি গোল শোধ করে মোহামেডান। নিজেদের ভুলেই গোলটি হজম করে আবাহনী। বক্সে মোহামেডানের ইমানুয়েল সানডের কাছ থেকে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ফাউল করেন হৃদয়। রেফারি হৃদয়কে হলুদ কার্ড ও মোহামেডানের পেনাল্টির নির্দেশ দেন। সুলেমান দিয়াবাতের স্পট কিক রুখে দিতে ব্যর্থ হন আবাহনীর গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন (২-১)। ৮১ মিনিটে আবাহনীর বক্সে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে হ্যান্ডবল হয় মিলাদ শেখের। আবারও পেনাল্টি পায় মোহামেডান। রেফারির সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে ডাগ আউট থেকে রেফারিকে উদ্দেশ্য করে কিছু একটা বলেন আবাহনীর ম্যানেজার কাজী নজরুল ইসলাম। রেফারি লাল কার্ড দেখান নজরুলকে। পেনাল্টি থেকে সুলেমান দিয়াবাতের স্পট কিকে আবারও কাঁপে আবাহনীর জাল (২-২)। ম্যাচে সমতা আসে। শেষ পর্যন্ত আর কোনো দলই ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। তাই ২-২ গোলের ড্র'তে শেষ হয় আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ। আবাহনী-মোহামেডানের মৌসুমের প্রথম দেখাটি হয়েছিল ফেডারেশন কাপের গ্রম্নপ পর্বে। যেখানে প্রথমে এগিয়ে গিয়েও মোহামেডানের কাছে ২-১ গোলে হেরে গিয়েছিল আবাহনী।