বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

ব্যক্তিগত সাফল্যে উদ্ভাসিত তাসকিন-শরিফুলরা

ঢাকার বিদায়ে বিদেশি ক্রিকেটারের আক্ষেপ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার অ্যাডাম রসিংটন

ভরাডুবির মধ্যে দিয়ে চলমান বিপিএলে যাত্রা শেষ করেছে দুর্দান্ত ঢাকা। আসরের রাউন্ড রবিন পর্বের ১২ ম্যাচের মধ্যে খালেদ মাহমুদ সুজনের শিষ্যরা মোটে একটিতে জিতেছে। টানা ১১ হারে বিপিএলে লজ্জার রেকর্ড। প্রথম দল হিসেবে টুর্নামেন্টের সব খেলাই শেষ তাদের। আসরের শেষ ম্যাচেও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে ১০ রানে হেরেছে তারা। সবার আগে আসর শেষ করায় আক্ষেপ ঝরেছে ঢাকার বিদেশি ক্রিকেটার অ্যাডাম রসিংটনের কণ্ঠে।

টুর্নামেন্টের শিরোপাধারী কুমিলস্নার ভিক্টোরিয়ান্সকে মাটিতে নামিয়ে দারুণ জয় পায় তাসকিন, শরিফুল, মোসাদ্দেক, নাঈমদের দুর্দান্ত ঢাকা। কিন্তু এরপর যা ঘটেছে তা স্রেফ হতশ্রী, অপ্রত্যাশিত। অথচ ঢাকার এই বিপিএল সফর ছিল অনেক 'প্রথমে' ঘেরা। টুর্নামেন্টে এর আগে কোনো দল টানা ১১ ম্যাচে হারেনি। হারের বিব্রতকর রেকর্ডে তারা শীর্ষে। টুর্নামেন্টের প্রথম দল হিসেবে তারাই বিদায় নেয় সবার আগে। টুর্নামেন্টের প্রথম দল তারাই যারা অধিনায়ক পরিবর্তন করে।

তবে বিস্ময়কর ব্যাপার, টুর্নামেন্টের শেষদিকে এসে ব্যক্তিগত সাফল্যে সবার ওপরে আছেন ঢাকার তারকারাই। আসরের সেরা পাঁচ রানসংগ্রাহকের তালিকায় দুজন আছেন ঢাকার তারকা। আর সেরা বোলারের তালিকাতেও আছেন দুজন। মোট ১২ বিদেশিকে দলে টানলেও মোটাদাগে সকলেই ছিলেন ব্যর্থ। যার ফলে ঢাকাও বিদায় নিয়েছে আগেভাগেই।

এখন পর্যন্ত এবারের আসরের ব্যাট হাতে সবচেয়ে বেশি রান ঢাকার অস্ট্রেলিয়ান তারকা অ্যালেক্স রসের। ১১ ম্যাচ খেলে দুর্দান্ত ঢাকার এই ব্যাটার করেছেন ৩৫২ রান। গড়ে ৩৯.১১ রান এসেছে প্রতি ম্যাচে। স্ট্রাইকরেটও নেহাত মন্দ না। ১৩৫ এর কাছাকাছি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন। ফিফটি আছে ৪টি। দলের বাকিদের সঙ্গ পেলে ঢাকাকেও হয়তো জেতাতে পারতেন কয়েকটি ম্যাচে।

৯ ইনিংসে ৩৪১ রান করা তাওহিদ হৃদয় আছেন এরপরেই। গড় বা স্ট্রাইকরেটে আসরের বাকিদের চেয়ে ঢের এগিয়ে তিনি। ১৬০ স্ট্রাইকরেট আর ৪৮.৭১ গড় জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারকে রেখেছে টুর্নামেন্ট সেরার দৌড়ে। এরপরেই আছেন ঢাকার আরেক ব্যাটার নাইম শেখ। দীর্ঘদিন রানখরায় থাকা নাইম এবারের বিপিএলে উপহার দিয়েছেন দারুণ কিছু ইনিংস।

১২ ম্যাচে ৩১০ রান করা নাইম শেখ ব্যাট করেছেন ১১৯.৬৯ স্ট্রাইকরেটে। খুব একটা মন্দ বলা যায় না বিপিএলের মানদন্ডে। তবে ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপ নিশ্চিতভাবেই পোড়াবে তাকে।

বোলারদের তালিকায় শীর্ষে ঢাকার শরিফুল ইসলাম। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সেরার তালিকায় ভালোভাবেই টিকে আছেন তিনিও। ২২ উইকেট নিয়ে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে শরিফুল। এরপরেই আছেন রংপুরের দুই স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান এবং সাকিব আল হাসান। মেহেদির উইকেট ১৫টি। আর সাকিবের উইকেট ১৩টি। সাকিবের সমান উইকেট পেলেও ম্যাচ বেশি খেলেছেন ঢাকার অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ। ১৩ উইকেট নিয়ে তিনি আছেন তালিকার চতুর্থ স্থানে।

ঢাকার হয়ে খেলার জন্য শেষদিকে এসেছিলেন বিদেশি ক্রিকেটার অ্যাডাম রসিংটন। সবার আগে নিজেদের যাত্রা শেষ হওয়ায় আক্ষেপ ঝরল তার কণ্ঠে। রসিংটন বলেন, 'ক্রিকেট খেলার জন্য এটা দারুণ পরিবেশ। এখানে ভক্তরাও দারুণ। ব্যক্তিগতভাবে বলব আরও রান করে দলের জন্য অবদান রাখতে পারলে ভালো হতো। ৩ ম্যাচ খেললাম ৩ ধরনের কন্ডিশনে। এখানে বড় বিষয় হচ্ছে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া।'

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে গত শনিবার শেষ ম্যাচ খেলেছে ঢাকা। যেখানে ৬ বল মোকাবিলায় মাত্র ১ রান করে আউট হন রসিংটন। নিজের আউট হওয়া বল নিয়ে ইংল্যান্ড ক্রিকেটার বলেন, 'অন্য কোনোদিন হয়তো এটা চার হয়ে যেত এবং রানরেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রান তোলার চেষ্টা করতাম আমি। তবে যা হয়েছে সত্যি খুবই হতাশাজনক। ৩ ম্যাচেই দলের জন্য আরও অবদান রাখতে পারলে ভালো হতো। ভালো লাগত দলকে কিছু ম্যাচ জেতাতে পারলেও।'

ম্যাচ হারের জন্য নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোকে দায়ী করেন রসিংটন, 'আসলে আমরা বেশ দ্রম্নত উইকেট হারিয়েছি। পরে আমরা রানরেট থেকে পিছিয়ে পড়লাম। মাঝে কিছুটা ইনিংস পুনর্গঠনের চেষ্টা করেছি, তবে ততক্ষণে রানরেট বেড়ে গেছে। এরপর আমরা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারিয়েছি নিয়মিত। শেষদিকে রানরেট বেড়ে ১২-১৩ হয়ে যাচ্ছিল। তখন বিষয়টা বেশ কঠিন হয়ে যায়। নতুন ব্যাটাররা ক্রিজে আসে। এটাই আসলে হারের কারণ।'

দলের ব্যর্থতার জন্য তাসকিন আহমেদ কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন পুরো দলকেই, 'এটা তো টিম গেম। দুজন-চারজন কোনো না কোনো জায়গায় খারাপ খেলেই ফেলছে। নাম নিব না। কারণ এটা টিম গেম। আজ এ খারাপ করেছে, কাল ও। একদিন আমি। এভাবে আমরা খারাপ করেছি। জেতা ম্যাচগুলো দুর্বলতার কারণে হেরে গেছি। এটা অবশ্যই ভালো অনুভূতি নয়। ব্যাটিং বা বোলিং কোন জায়গায় হেরেই যাচ্ছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে