টানা পাঁচ ম্যাচ হেরেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে শেষ পর্যন্ত পেস্ন-অফে জায়গা নিশ্চিত করা হলো না বর্তমান রানার-আপদের। চলতি আসরের ৩৫তম ম্যাচে ফরচুন বরিশালের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল সিলেট। কাইল মেয়ার্সের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ও মুশফিকের ঝড়ো ফিফটিতে জয় তুলে নিয়েছে বরিশাল। বিপর্যয়ের মধ্যে বেনি হাওয়েল ও আরিফুল হকের রেকর্ড গড়া জুটির পরও হার এড়াতে পারেনি সিলেট।
কাইল মেয়ার্স টেস্ট অভিষেকে ইতিহাস গড়া ডাবল সেঞ্চুরিতে অবিস্মরণীয় এক জয় তিনি এনে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার এবার সেই একই প্রাঙ্গণে রাঙালেন বিপিএল অভিষেক। তার ঝড়ো ব্যাটিং আর সুইং বোলিংয়ের যুগলবন্দিতে পেস্ন-অফের আশা আরেকটু উজ্জ্বল করল বরিশাল। ব্যাট হাতে ৪৮ রান এবং ৪ ওভারে ১২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন কাইল মেয়ার্স। তার প্রথম ওভারটি ছিল ডাবল উইকেট মেডেন।
শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে সিলেটকে ১৮৪ রানের লক্ষ্য দেয় ফরচুন বরিশাল। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান তুলতে পারে সিলেট। এতে ১৮ রানে হেরে সুপার ফোর থেকে ছিটকে গেল মিথুন-শান্তরা। অন্যদিকে এই জয়ে সুপার ফোরের সমীকরণ কিছুটা সহজ করল তামিম-মুশফিকরা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বিভীষিকার মতো ভেঙে পড়ে সিলেটের ব্যাটিং লাইন-আপ। রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন হ্যারি টেক্টর ও জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
ব্যাট হাতে নেমে জাকির হাসানও সুবিধা করতে পারেননি। এরপর অ্যাঞ্জেলো পেরেরা, মোহাম্মদ মিঠুন, রায়ান বার্লও ব্যর্থ হলে বেনি হাওয়েল ও আরিফুল হকের কাঁধে পড়ে সিলেটকে টেনে তোলার দায়িত্ব। চাপের মুখে দুজনেই হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান। তবে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে তা যথেষ্ট ছিল না।
শেষ পর্যন্ত ৩২ বলে ৫৩ রানে হাওয়েল এবং ৩১ বলে ৫৭ রানে সাজঘরে ফেরেন আরিফুল। আর ২ উইকেট হাতে রেখে ১৮ রানের পরাজয়ে শেষ হয় সিলেটের এবারের বিপিএল শিরোপার স্বপ্ন।
এর আগে টস জিতে আহমেদ শেহজাদের সঙ্গে ইনিংস গোড়াপত্তনে নামেন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিলেও দলীয় ২৩ রানের মাথায় ফেরেন পাকিস্তানি ওপেনার। ১১ বলে ১৭ রানে তানজিমের শিকার হয়ে বিদায় নেন শেহজাদ। এর কিছু সময় পর তামিমও সাজঘরে ফেরেন। তানজিমের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরার আগে ৩ বাউন্ডারিতে ১৮ বলে ১৯ রানের ইনিংস সাজান টাইগার এই ওপেনার।
এরপর সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন কাইল মেয়ার্স। তবে হ্যারি টেক্টরের বলে মাত্র ৮ রানেই ইতি ঘটে সৌম্যর ইনিংসের। দারুণ ক্যাচ লুফে নিয়ে সৌম্যকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তানজিম।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে মুশফিকুর রহিম ও কাইল মেয়ার্সের ব্যাটে বাড়তে থাকে বরিশালের রানের চাকা। দুজনে মিলে গড়েন ৮৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। এরপর সমান তিনটি করে চার-ছক্কায় ৩১ বলে ৪৮ রান করে বিদায় নেন মেয়ার্স। অন্যপ্রান্তে ঠিকই ফিফটির দেখা পান মুশি। তবে ব্যক্তিগত ৫০ পেরিয়ে তিনিও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। সাজঘরে ফেরার আগে তিনটি করে চার-ছক্কায় ৫২ রানের ইনিংস সাজান উইকেটকিপার এই ব্যাটার। শেষদিকে মিরাজের ১৫ ও রিয়াদের অপরাজিত ১২ রানে ভর করে ৬ উইকেটে ১৮৩ রানের সংগ্রহ পায় বরিশাল।