রহমতগঞ্জকে হারের তিক্ত স্বাদ দিল বসুন্ধরা
প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
টানা সাত ম্যাচে ড্র, নেই কোনো হার! এবারের লিগে একমাত্র রহমতগঞ্জেরই ছিল এমন রেকর্ড। শুক্রবার কিংস অ্যারেনাতে ম্যাচের প্রথমার্ধও শেষ হয়েছিল ১-১ এর সমতায়। তাই টানা অষ্টম ড্রটি কি করবে রহমতগঞ্জ? দর্শকদের মনে এমন প্রশ্ন জেগেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে পেরে উঠেনি জায়ান্ট কিলার খ্যাত পুরান ঢাকার দলটি। আবাহনী-মোহামেডানের মতো দলের কাছ থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিলেও লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শক্তিধর বসুন্ধরা কিংসের কাছে শুক্রবার রহমতগঞ্জ হেরে যায় ৪-১ গোলের ব্যবধানে। দিনের অন্য ম্যাচে রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে পুলিশ ফুটবল ক্লাবকে ২-১ গোলে হারায় ফর্টিস এফসি। ৮ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বসুন্ধরা।
৭টি ম্যাচে ড্র করে অপরাজিত ছিল রহমতগঞ্জ। এই ম্যাচের আগে যেমন কোনো দল তাদের হারাতে পারেনি, তেমনি কোনো ম্যাচে জয়ও পায়নি রহমতগঞ্জ। অবশেষে হারের তিক্ত স্বাদটি নিতেই হলো লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের কাছ থেকে। এখন লিগে একমাত্র অপরাজিত দল মোহামেডান।
শুক্রবার বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে ছিল একটু ভিন্নতা। খেলোয়াড়দের জার্সির নাম ও নাম্বারগুলো ছিল বাংলাতে লেখা। সামনের অংশে শহীদ মিনারের ছবি ও বাংলা বর্ণমালা। মূলত ভাষা আন্দোলনের মাস, ২১ শে ফেব্রম্নয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতি সম্মান জানাতেই বসুন্ধরা এ ধরনের উদ্যোগ নেয়। ১০ মিনিটে কিংস অ্যারেনাকে স্তব্ধ করে দিয়ে ম্যাচে লিড নেয় জায়ান্ট কিলার খ্যাত রহমতগঞ্জ। বা প্রান্ত থেকে সুশান্ত ত্রিপুরার ডান পায়ের ফ্রি কিক বক্সে জটলার মধ্যে থেকে মাথা ছুইয়ে কিংসের জালে পাঠান ঘানার ফরোয়ার্ড এমেস্ট বুয়েটাং (১-০)। গোল হজমের পর আক্রমণের ধার বাড়ায় বসুন্ধরা। একের পর এক আক্রমণ সামাল দিতে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডারদের। ১৭ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে রবিনহোর কর্নার বক্সে ক্লিয়ার হয়। ১৮ মিনিটে ফ্রি কিক পায় কিংস। ডান প্রান্ত থেকে মিগেল দামাসেনোর ফ্রি কিক ফিরিয়ে দেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার। ১৯ মিনিটে বল নিয়ে দ্রম্নত গতিতে বক্সে ঢুকে পড়েন রাকিব। সুশান্ত ত্রিপুরার বাধার মুখে ঠিকভাবে শট নিতে পারেননি। বল ক্লিয়ার করেন নাঈম। ১৯ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে বসুন্ধরার কর্নারও এসে থেমেছে রহমতগঞ্জের বক্সে। ২২ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে বক্সে ক্রস করেন রবিনহো, বক্সের বা প্রান্তে লাফিয়ে উঠে হেড নেন রাকিব। বল বার ঘেষে চলে যায় বাইরে। ২৩ মিনিটে রাকিবের আরও একটি হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে চেষ্টা অব্যাহত রাখেন রাকিব এবং গোলও পান। ২৬ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে রবসন রবিনহোর ক্রস বক্সে ক্লিয়ার করেন সুশান্ত ত্রিপুরা। তবে পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। বক্সের মাথায় বল পেয়ে মাসুক মিয়া জনি বক্সের ডান প্রান্তে বল পাঠান। বল বুঝে নিয়ে ডান পায়ের শটে রহমতগঞ্জের জালে পাঠিয়ে দেন রাকিব (১-১)। সমতায় ফিরে বসুন্ধরা। ৪৪ মিনিটে রবিনহোর স্পট কিকে আলতো ছোয়া দিয়েছিলেন মিগেল। তবে পোস্টে রাখতে পারেননি। প্রথমার্ধ শেষ হয়েছে সমতাতেই।
৫৫ মিনিটে লিডে ফিরে বসুন্ধরা। বক্সের বেশ কাছেই ফ্রি কিক পায় বসুন্ধরা। মিগেল ও রবিনহো দু'জনই বলের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে ছিলেন। বুঝার উপায় ছিল না শটটি আসলে কে নেবেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনা সেরে শট নেন মিগেল। বা পায়ের শটে রহমতগঞ্জের রক্ষণ দেয়াল টপকে গোলরক্ষকক নাঈমকে পরাস্ত করেন মিগেল দামাসেনো (২-১)। ৮৯ মিনিটে কিংসের বিশ্বনাথ ঘোষের শট অল্পের জন্য খুঁজে পায়নি জাল। ইনজুরি টাইমে (৯০+৩ মিনিটে) তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে মিগেল বল বাড়িয়ে দেন সতীর্থের উদ্দেশ্যে। বা পোস্টের কাছ থেকে বলে ফাইনাল টাচ দিয়ে গোল আদায় করে নেন ডরিয়েলটন (৩-১)। ৯০+৬ মিনিটে পেনাল্টি পায় বসুন্ধরা। মিগেলকে বক্সে ফাউল করেন নাঈম। রবিনহোর স্পট কিকে চতুর্থ গোলটি পায় বসুন্ধরা (৪-১)। শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানেই জয় পায় বসুন্ধরা।
রাজশাহীতে পুলিশ-ফর্টিসের লড়াইয়ের প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য থেকেই। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর ৬ মিনিটের মধ্যে লিড নেয় ফর্টিস। ৫১ মিনিটে গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড পা ওমর বাবুর গোল করে ফর্টিসকে এগিয়ে দেন (১-০)। ৮০ মিনিটে গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন পুলিশের ভেনিজুয়েলার ফরোয়ার্ড অ্যাডওয়ার্ড মরিলেস্না (১-১)। ইনজুরি টাইমে (৯০+৪ মিনিটে) ইউক্রেনের মিডফিল্ডার ভালেরির গোলে আবারও এগিয়ে যায় ফর্টিস (২-১)। ম্যাচে ফেরার আর সুযোগ হয়নি পুলিশের। তাই ২-১ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।