রানবন্যায় চট্টগ্রামকে হারিয়ে কুমিলস্নার বিশাল জয়
প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিপিএলের চলতি আসরে প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলী। তাতেই গড়েছেন অনন্য কীর্তি। আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক তুলে নিয়েছেন তিনি। প্রথম দুই ম্যাচের ব্যর্থতা ঝেড়ে চমৎকার সেঞ্চুরি করেছেন উইল জ্যাকস। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে প্রথমে রানের পাহাড় গড়ার পর বোলারদের তোপে ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচ ৭৩ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স।
চলতি আসরে এ নিয়ে টানা তৃতীয় জয় পেল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সবমিলিয়ে আট ম্যাচে কুমিলস্নার ষষ্ঠ জয় এটি। নয় ম্যাচে চট্টগ্রাম পেল চতুর্থ পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ।
আসরের শুরু থেকে রান খরায় ভুগছিলেন লিটন দাস। অবশেষে চট্টগ্রাম পর্বে এসে হেসেছে তার ব্যাট। অধিনায়কের গড়ে দেওয়া ভিতে দাঁড়িয়ে রীতিমতো ঝড় তুলেছেন উইল জ্যাক। এই ইংলিশ ওপেনারের সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় গড়ে কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রান সংগ্রহ করে কুমিলস্না। যা বিপিএল ইতিহাসে যৌথভাবে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড। এর আগে ২০১৯ সালের বিপিএলে রংপুর রাইডার্সও ২৩৯ রান করেছিল। ভিক্টোরিয়ান্সদের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০৮ রান করেছেন জ্যাক। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন জ্যাক। ফিফটি পেয়েছেন লিটন ও মঈন আলী।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার কুমিলস্নার দেওয়া ২৪০ রান তাড়া করতে নেমে ১৬.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রানে গুঁড়িয়ে যায় চট্টগ্রামের ইনিংস। মঈন ছাড়াও এদিন বল হাতে দু্যতি ছড়িয়েছে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। দুজনই নিয়েছেন সমান ৪টি করে উইকেট। বাকি ২ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
চলমান বিপিএলে রান না হওয়ায় টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার মুখস্ত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচেও এই নিয়ম অনুসরণ করে টস জিতে কুমিলস্নাকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় স্বাগতিকরা। এই সিদ্ধান্তই কাল হয়েছে বন্দরনগরীর দলটির জন্য। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে চট্টগ্রামকে রানবন্যায় ভাসায় কুমিলস্না।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করেন চট্টগ্রামের দুই ওপেনার জশ ব্রাউন ও তানজিদ হাসান তামিম। দুজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৭ ওভার শেষে ৮০ রান তোলে দলটি। তবে ফিফটি পূরণ করতে পারেনি ওপেনারের কেউই। ২৪ বলে ৪১ রান করে তানজিদ তামিম আউট হলে ২৩ বলে ৩৬ রান করে তার দেখানো পথে হাঁটেন জশ ব্রাউন। এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি টম ব্রম্নসও। ৭ বলে ১১ রান করে রিশাদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন এই ডান হাতি ব্যাটার। ৮ বলে ১২ রান করে শাহাদত হোসেন আউট হলেও ব্যাট চালাতে থাকেন সৈকত আলী। ১১ বলে ৩৬ রান করে সৈকত আউট হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় চট্টগ্রাম। ১৩ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলেন শুভাগত হোম। এরপর শুরু হয় চট্টগ্রামের উইকেট মিছিল। কার্টিন ক্যাম্ফার (৫), শহিদুল ইসলাম (২), আল আমিন (০) এবং বিলাল খান ডাক আউট হলে ২১ বলে হাতে থাকতেই ১৬৬ রানে অলআউট হয় চট্টগ্রাম। ১৬তম ওভারে তিন বলে তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে চলতি বিপিএলের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন মঈন আলী। কুমিলস্নার হয়ে রিশাদ হোসেন ও মঈন আলী চারটি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়াও দুই উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার পেস্নতে ৬২ রান জড়ো করে লিটন দাস ও উইল জ্যাকস জুটি। দলীয় ৮৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় কুমিলস্না। ২৬ বলে হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকানো লিটন ফেরেন ব্যক্তিগত ৬০ রানে। লিটনের পরই হৃদয়কে হারায় কুমিলস্না। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন টপ-অর্ডার এই ব্যাটার। এরপর ব্রম্নক গেস্টও দ্রম্নতই ফেরেন। ফেরার আগে ১১ বলে খেলেন ১০ রানের মন্থর এক ইনিংস। তবে দলীয় রানের গতিতে উইকেটের আঁচ লাগতে দেননি জ্যাকস। চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন ইংলিশ এই ওপেনার। তাকে যোগ সঙ্গ দেন আরেক ইংলিশ সুপারস্টার মঈন আলীও।
এরপর ৫০ বলে এই ফরম্যাটে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকান জ্যাকস। শেষ পর্যন্ত ৫ চার ও ১০ ছক্কায় ৫৩ বলে ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। অন্যদিকে ২৪ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন মঈন আলী। ২ চার ও ৫ ছক্কায় এই ইনিংস সাজান আলি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে কুমিলস্নার সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৩৯ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স
২০ ওভারে ২৩৯/৩
(লিটন ৬০, জ্যাকস ১০৮*, হৃদয় ০, গেস্ট ১০, মইন ৫৩*; নিহাদউজ্জামান ০/২৭, আল আমিন ০/৬৯, বিলাল ০/৪৪, শহিদুল ২/৪৯, ক্যাম্ফার ০/২৩, সৈকত ১/২৩)।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
১৬.৩ ওভারে ১৬৬
(ব্রাউন ৩৬, তানজিদ ৪১, ব্রম্নস ১১, শাহাদাত ১২, সৈকত ৩৬, ক্যাম্ফার ৫, শুভাগত ১৯, শহিদুল ২, নিহাদউজ্জামান ০*, আল আমিন ০, বিলাল ০; মইন ৪/২৩, তানভির ০/৫৩, ফোর্ড ০/২১, মুস্তাফিজ ২/৪৬, রিশাদ ৪/২২)।
ফল
কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স ৭৩ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা
উইল জ্যাকস