বিদেশিদের ছাপিয়ে ব্যাটে ও বলে দেশিদের দাপট

চট্টগ্রাম যাচ্ছে বিপিএল

প্রকাশ | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিপিএলে নিজেকে এবার নতুন রূপে চিনিয়েছেন দুর্দান্ত ঢাকার নাঈম শেখ
জমে উঠেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসর। দেখতে দেখতে এরই মধ্যে পার হয়েছে ২৩ দিন। যেখানে ৪৬টি ম্যাচের মধ্যে ২৮টি শেষ হয়েছে। ঢাকার পর সিলেট ঘুরে বিপিএল আবার ফিরে আসে ঢাকায়। ঢাকার দ্বিতীয় পর্ব শেষে বিপিএলে এবার বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। আসরের শুরুতে মাঠের ক্রিকেটে ছিল না কোনো উত্তাপ। ফাঁকা ছিল গ্যালারিও। তবে ম্যাচ যত বাড়ছে লড়াই জমছে ততই। সেই সঙ্গে বাড়ছে দর্শকদের উপস্থিতি-উন্মাদনা। আগামী মঙ্গলবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্সের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে চট্টগ্রাম পর্ব। ঢাকায় লিগ পর্বের খেলা শেষে গতকালের ফ্লাইটে করে চট্টগ্রাম গেছেন ক্রিকেটাররা। তার আগে দেখে নিন অংশগ্রহণকারী ৭টি দল পয়েন্ট টেবিলের কোথায় অবস্থান করছে। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ৯টি করে ম্যাচ খেলেছে দুটি দল। তারা হলো সিলেট স্ট্রাইকার্স ও দুর্দান্ত ঢাকা। সিলেট ৯ ম্যাচে তিন জয় ও নয় হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে টেবিলের ছয়ে। অন্যদিকে দুর্দান্ত ঢাকা টানা আট হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮টি করে ম্যাচ খেলেছে তিনটি দল। তারা হলো- রংপুর রাইডার্স, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও ফরচুন বরিশাল। এছাড়া ৭টি করে ম্যাচ খেলেছে ২টি দল- খুলনা টাইগার্স ও কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স। ৮ ম্যাচে ৬ জয় ও ২ হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে রংপুর রাইডার্স। দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স। তারা ৭ ম্যাচে পাঁচ জয় ও ২ হারে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। এক ম্যাচ বেশি খেলে সমান পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এদিকে ৮ ম্যাচ থেকে ৪ হার ও সমান জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে বন্দর নগরীর দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। সিলেট পর্ব শুরুর আগে টেবিলের শীর্ষে থাকে খুলনা টাইগার্স রয়েছে পঞ্চম স্থানে। তারা ৭ ম্যাচে ৪ জয় ও ৩ হারে পেয়েছে ৮ পয়েন্ট। ৭ দলকে নিয়ে শুরু হওয়া রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির টুর্নামেন্টে ব্যাটে-বলে দাপট দেখাচ্ছেন দেশি তারকারা। পারফর্ম করলেও পুরো মৌসুম খেলছেন না বিদেশিদের অনেকেই। এজন্য এখন পর্যন্ত ব্যাটে-বলে সেরাদের তালিকা নিজেদের দখলে রেখেছেন দেশি ক্রিকেটাররা। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বিপিএল পর্বের দামামা বেজে ওঠার আগেই দেখে নেওয়া যাক ব্যাটে-বলে কারা দাপট দেখাচ্ছেন। ব্যাট হাতে সেরা পাঁচ চট্টগ্রাম পর্ব শুরু হবে ১৩ ফেব্রম্নয়ারি। এর আগে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ঢাকায় দ্বিতীয় পর্ব শেষে ব্যাট হাতে শীর্ষ পাঁচে যারা- ব্যাট হাতে শীর্ষস্থানটি দখলে রেখেছেন ৮ ম্যাচ হেরে সবার আগে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়া দুর্দান্ত ঢাকার নাঈম শেখ। এরপরই রয়েছেন রংপুরের হয়ে মাঠ মাতানো পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক বাবর আজম। শীর্ষ পাঁচের বাকি তিনজনই বাংলাদেশের। দুর্দান্ত ঢাকার নাঈম শেখ ৯ ম্যাচে ১২৭.২৭ স্ট্রাইকরেটে ২টি হাফসেঞ্চুরিতে ২৬৬ রান নিয়ে রয়েছেন রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে। তার সর্বোচ্চ ইনিংস ৬৪ রান। রংপুর রাইডার্সের বিদেশি রিক্রুট পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক বাবর আজম এবারের আসরে খেলেছেন ৬ ম্যাচ। যেখানে ১১৪.৬১ স্ট্রাইকরেটে ২টি হাফসেঞ্চুরিতে ২৫১ রান করে রান সংগ্রাহকদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন তিনি। তার সর্বোচ্চ ইনিংস ৬২ রান। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্সে খেলা বাংলাদেশি ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। তিনি ৭ ম্যাচে ১৫১.৫১ স্ট্রাইকরেটে ২৫০ রান সংগ্রহ করেছেন। যেখানে রয়েছে একটি সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি। তার সর্বোচ্চ ইনিংস অপরাজিত ১০৮ রানের। এবারের আসরে এটিই প্রথম সেঞ্চুরি। চতুর্থ স্থানে রয়েছেন ফরচুন বরিশালের বাংলাদেশি উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। তিনি ৮ ম্যাচে ১২৪.৪৭ স্ট্রাইকরেটে সংগ্রহ করেছেন ২৩৯ রান। যেখানে রয়েছে দুটি হাফসেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ রান অপরাজিত ৬৮। খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক উইকেটরক্ষক ব্যাটার এনামুল হক বিজয় রয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় পঞ্চম স্থানে। তিনি ৭ ম্যাচ খেলে ১২০ স্ট্রাইকরেটে সংগ্রহ করেছেন ২২৮ রান। তার সর্বোচ্চ ইনিংস অপরাজিত ৬৭ রান। বল হাতে সেরা পাঁচ ব্যাটিংয়ের মতোই বোলিংয়ের শীর্ষ পাঁচে জায়গা পেয়েছেন চারজন বাংলাদেশি ক্রিকেটার। তারা হলেন- শরিফুল ইসলাম, শেখ মাহেদী হাসান, তানভির ইসলাম ও সাকিব আল হাসান। একমাত্র বিদেশি হিসেবে আছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইমরান। আসর থেকে সবার আগে বিদায় নেওয়া দুর্দান্ত ঢাকার বাঁ-হাতি পেসার ও এবারের আসরে এখন পর্যন্ত একমাত্র হ্যাটট্রিক ম্যান শরিফুল ইসলাম রয়েছেন টেবিলের শীর্ষে। তিনি ৯ ম্যাচে ১৬.১৭ গড়ে ১৭ উইকেট তুলে নিয়েছেন। তার সেরা বোলিং ২৪ রানে ৪ উইকেট। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন রংপুর রাইডার্সের মাহেদী হাসান। তিনি ৮ ম্যাচে ১৩.১৬ গড়ে ১২ উইকেট শিকার করেছেন। তার সেরা বোলিং ১১ রানে ৩ উইকেট। চ্যাম্পিয়ন কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্সের স্পিনার তানভীর ইসলাম রয়েছেন টেবিলের তিনে। তিনি ৭ ম্যাচে ১২.৫৪ গড়ে ১১ উইকেট পকেটে পুরেছেন। তার সেরা বোলিং ১৩ রানে ৪ উইকেট। চতুর্থ স্থানে রয়েছেন রংপুর রাইডার্সের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি ৭ ম্যাচে ১৪.৪৫ গড়ে তুলে নিয়েছেন ১১ উইকেট। সেরা বোলিং ১৬ রানে ৩ উইকেট। একমাত্র বিদেশি হিসেবে পঞ্চম স্থান দখল করেছেন ফরচুন বরিশালের বিদেশি রিক্রুট পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইমরান। তিনি ৬ ম্যাচে ১৮.৮০ গড়ে তুলে নিয়েছেন ১০ উইকেট। তার সেরা বোলিং ২৯ রানে ৪ উইকেট।