ঘাম ঝরিয়ে পয়েন্ট পেল আবাহনী-মোহামেডান

প্রকাশ | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে (বিপিএল) এখন পর্যন্ত অপরাজিত দুই দল মোহামেডান ও রহমতগঞ্জ। তবে শুক্রবার ম্যাচ হারা শঙ্কাতেই পড়ে গিয়েছিল ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। সপ্তম রাউন্ডের খেলায় মুন্সীঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রায় পুরোটা পিছিয়ে থেকেও শেষদিকে এক পেনাল্টিতেই ভাগ্যবদল হয় মোহামেডানের। রহমতগঞ্জের সঙ্গে ১-১ গোলের ড্র করে অপরাজিত থাকার তকমাটা ধরে রাখতে সমর্থ হয় সাদা-কালোরা। একই দিনে রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে ঢাকা আবাহনীর সঙ্গে দারুণ লড়াই করেও ৩-২ গোলে হেরে যায় ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ৭ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা বসুন্ধরার সমান পয়েন্ট অর্জন করেছে মোহামেডান। আবাহনীর ১৩ পয়েন্ট, তারা আছে তৃতীয় স্থানে। ষষ্ঠ রাউন্ডে লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরাকে হারিয়ে দিয়ে কিংসের ঘারে নিশ্বাস ফেলছিল মোহামেডান। নিজেদের সপ্তম ম্যাচে জিতলেই কিংসকে পেছনে ফেলে টেবিলের শীর্ষে উঠে যাওয়ার সুযোগ ছিল সাদা-কালোদের। কিন্তু শুক্রবার মুন্সীগঞ্জে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে পয়েন্ট পেতেই রীতিমতো ঘাম ঝরাতে হয়েছে সাদা-কালোদের। ম্যাচের ৭ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে মেহেদীর পাসে পোস্টের কাছেই বল পেয়ে শট নিতে গিয়েছিলেন সুলেমান দিয়াবাতে, কিন্তু তিনি ফাউল করে বসেন এগিয়ে আসা রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক নাঈমকে। ১৫ মিনিটে রহমতগঞ্জের ঘানার ফরোয়ার্ড স্যামুয়েল কনির বা পায়ের শট আটকে দেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন হোসেন। ১৭ মিনিটে বক্সের কাছেই ফ্রি কিক পায় মোহামেডান। উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফ্‌ফারভের স্পট কিক আটকে যায় প্রতিপক্ষের হিউম্যান ওয়ালে। ২১ মিনিটে ঘানার ফরোয়ার্ড বুয়েটাংয়ের ডানপায়ের জোড়াল শট দারুণ দক্ষতায় আটকে দেন সুজন। ২৩ মিনিটে মোহামেডানের নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করে দেন রহমতগঞ্জের উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার তাসপুলাতভ। বল ক্লিয়ার করতে পোস্ট ছেড়ে সামনে এগিয়ে এসেছিলেন নাঈম। সুযোগ পেয়ে বল নিয়ে ফাঁকা পোস্টে পাঠাতে শট নেন মোহামেডানের অধিনায়ক মালীর ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে। তবে শেষ মুহূর্তে দৌড়ে এসে বল ক্লিয়ার করেন তাসপুলাতভ। ২৭ মিনিটে ম্যাচে লিড নেয় রহমতগঞ্জ। মাঝ মাঠ থেকে আক্রমণের শুরু। বল নিয়ে দ্রম্নতগতিতে মোহামেডানের অর্ধে ছুটে যান গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড দাউদা সিসে। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে দূরপালস্নার শটে মোহামেডানের জাল কাঁপান রহমতগঞ্জের অধিনায়ক (১-০)। ৪৭ মিনিটে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে জায়গা তৈরি করে নিয়ে বক্সে ঢুকে দারুণ শট নেন মোহামেডানের নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার ইমানুয়েল সানডে। তবে গোলরক্ষক নাঈমকে পরাস্ত করতে পারেননি। কর্নার পায় মোহামেডান। কর্নার থেকে বল পেয়ে হেড নেন মেহেদী হাসান। তবে বল চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। ৮৩ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে দাউদা সিসের কর্নারে বক্সে বল পেয়ে হেড নিয়েছিলেন স্যামুয়েল। ৮৫ মিনিটে মোহামেডানের একটি আক্রমণ আটকে দিতে গিয়ে হ্যান্ডবল হয় তাসপুলাতভের। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। মোজাফ্‌ফারভের স্পট কিক আশ্রয় নেয় রহমতগঞ্জের জালে (১-১)। সমতায় ফেরে সাদা-কালোরা। এই ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ। অন্যদিকে রাজশাহীতে দুর্বল প্রতিপক্ষ ব্রাদার্সের বিপক্ষে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে শক্তিধর ঢাকা আবাহনী। ম্যাচের ৭ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড জনাথন ফার্নান্দেজের গোলে লিড নেয় আকাশি-নীলরা (১-০)। ৩৬ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়াশিংটন সান্তোসের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আবাহনী (২-০)। এই গোলের পেছনের নায়ক ছিলেন জনাথন। ৪৮ মিনিটে গ্রানাডিয়ান ফরোয়ার্ড কর্নেলিয়াস স্টেওয়ার্টের গোলে ৩-০ তে এগিয়ে যায় আবাহনী। ৫৯ মিনিটে ইনসান হোসেনের গোলে ব্যবধান কিছুটা কমায় ব্রাদার্স (৩-১)। ইনজুরি টাইমে আরও একটি গোল করে তারা। (৯০+৩ মিনিটে) ব্রাদার্সের দ্বিতীয় গোলটি করেন রাব্বি হোসেন রাহুল (৩-২)। যদিও ম্যাচে ড্র'-এর শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল করতে পারেনি কমলা জার্সিধারীরা। তাই পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ে আবাহনী।