রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

খুলনাকে হারিয়ে পেস্ন-অফের আশা জিইয়ে রাখল সিলেট

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
বিপিএলে শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন সিলেটের খেলোয়াড়রা -ওয়েবসাইট

বিপিএলে টানা পাঁচ হারে লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়া সিলেট স্ট্রাইকার্স ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেষদিকে এসে। টানা দুই জয়ে পেস্ন-অফের আশা টিকে রইল তাদের। শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫৩ রান সংগ্রহ করে খুলনা টাইগার্স। জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে হ্যারি টেক্টরের ৬১ রানের দারুণ ইনিংসে ভর করে ৬ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে সিলেট।

হঠাৎ কী হলো খুলনা টাইগার্সের? এবারের বিপিএলে প্রথম চার ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে উড়তে থাকা এনামুল হক বিজয়ের দলটি হেরেই চলেছে। টানা তৃতীয় হারের স্বাদ পেয়েছে তারা। অন্যদিকে প্রথম সাত ম্যাচে মাত্র একটি জয় পাওয়া সিলেট স্ট্রাইকার্স টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তুলে নিয়ে পেস্ন-অফের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে।

মিরপুরের উইকেটে দেড়শ পেরোলে জয়ের পালস্নাই ভারী থাকে যে কোনো দলের। সিলেটের বিপক্ষে লড়াইয়েও এগিয়ে ছিল খুলনা। কিন্তু এক ক্যাচ মিসেই বদলে যায় ম্যাচের ভাগ্য। সিলেট ওপেনার টেক্টর শুরুতে বেশ লড়াই করছিলেন। প্রথম ৭ বলে খুলতে পারেননি রানের খাতা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সুমন খানের বলে স্কয়ার লেগে রুবেলের হাতে সহজ ক্যাচ তুলেন টেক্টর। কিন্তু দুইবারের চেষ্টাতেও তা তালুবন্দি করতে পারেননি এবারের বিপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বাগেরহাট এক্সপ্রেস। দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করে টেক্টরের ইনিংসই গড়ে দেয় ম্যাচে পার্থক্য।

বাঁচা-মরার লড়াইয়ে খুলনার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না সিলেটের। চরম নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয় তুলে নিয়ে পেস্ন-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখল তারা। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের জন্য ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন হ্যারি টেক্টর।

আসরে টিকে থাকতে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ১৩ রানেই উইকেট হারায় বন্দরনগরীর দলটি। ১৩ রানে ফেরেন ওপেনার সামিত প্যাটেল। এরপর দ্রম্নতই ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান। এই দুই ব্যাটার ফেরার পর হ্যারি টেক্টরকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। তবে খানিকটা আগ্রাসী ইঙ্গিত দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মিঠুনও। মার্ক দেয়ালের বলে আউট হওয়ার আগে খেলেন ২৪ রানের এক ইনিংস।

দলপতি ফিরলেও জয়ের আশা ঠিকই জিইয়ে রাখেন টেক্টর। নিজের ফিফটি তুলে নিয়ে দলের জয়ের পথ আরও সহজ করেন আইরিশ এই ব্যাটার। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ বলে ৬১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর বাকি কাজটা সারেন রায়ান বার্ল। তার ১৬ বলে ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৬ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সিলেট।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৯ রানেই ধাক্কা খায় খুলনা। ১০ বলে ১২ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওপেনার লুইস। এরপর তিনে নেমে দলের হাল ধরেন আফিফ হোসেন ধ্রম্নব। তবে দলীয় ৫০ পার হওয়ার পরই ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ৩ বাউন্ডারিতে ১৬ বলে খেলেন ২৪ রানের কার্যকরী এক ইনিংস।

চারে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়ও। ৬ বলে ১ রানে টপ-অর্ডার এই ব্যাটার ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে খুলনা। সেখানে একপ্রান্ত আগলে রেখে চাপ সামাল দেন দলপতি বিজয়। দলপতির সঙ্গে ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নেন তরুণ হাবিবুর রহমান সোহান।

সাবধানী ব্যাটিংয়ে দ্রম্নতই চলতি আসরের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন বিজয়। অর্ধশতক হাঁকালেও কিছুটা ধীরগতির ইনিংস সাজান তিনি। তবে খুলনার সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেন সোহান। উইকেটে খানিকটা থিতু হয়েই বেনি হাওয়েলের এক ওভারে জোড়া ছক্কা হাঁকান হাবিবুর। তানজিমের করা পরের ওভারে আরও দুটি বাউন্ডারির মালিক বনে যান তিনি।

শেষ পর্যন্ত এই দুই ব্যাটারের ৯৯ রানের জুটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান সংগ্রহ করে খুলনা। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৮ বলে বিজয় ৬৭ এবং ৩টি করে চার-ছক্কায় ৩০ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন সোহান। সিলেটের হয়ে সামিত প্যাটেল, সানজামুল ইসলাম ও বেনি হাওয়েল একটি করে উইকেট শিকার করেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৫৩/৪ (এনামুল ৬৭*, লুইস ১২, আফিফ ২৪, জয় ১, সোহান ৪৩; সানজামুল ১/১৬, তানজিম ১/২৬, সামিত ১/২২, টেক্টর ০/৮, রেজাউর ০/৪৫, হাওয়েল ১/২৭, বার্ল ০/৭)।

সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৯ ওভারে ১৫৯/৫ (টেক্টর ৬১, সামিত ১৩, শান্ত ১৮, জাকির ০, মিঠুন ২৪, বার্ল ৩২*; নাহিদুল ১/১১, সুমন ১/৩৬, ডেয়াল ৩/১৮, রাজিথা ০/২৯, নাসুম ০/২৬, রুবেল ০/৩৬)।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে