রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে রংপুরের বিশাল জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
বিপিএলে মিরপুরে মঙ্গলবার ঢাকার বিপক্ষে ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল ছিলেন সাকিব আল হাসান -সংগৃহীত

চলমান বিপিএলে নিজেকে রানে ফেরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন সাকিব আল হাসান। কঠোর পরিশ্রমের ফলও পেয়েছেন। সিলেট পর্ব শেষে দুইদিন বিরতি দিয়ে আবারও ঢাকা পর্বের খেলা মাঠে গড়িয়েছে। মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত ঢাকাকে হারিয়ে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে রংপুর রাইডার্স। এই ম্যাচ দিয়ে নিজের চেনা রূপে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে ৩৪ রান সংগ্রহের পর ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তাতে ম্যাচসেরা পুরস্কারও পেয়েছেন।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৫ রান করে রংপুর। রান তাড়ায় নেমে ১১৫ রানের বেশি করতে পারেনি ঢাকা। সাত ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে রয়েছে রংপুর। ৬ ম্যাচে কেবল এক জয় নিয়ে সবার শেষে ঢাকা।

টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে এদিন দারুণ শুরু পায় রংপুর রাইডার্স। পাওয়ার পেস্নর ছয় ওভারেই তারা তোলে ৫০ রান। রনি তালুকদারের সঙ্গে বাবর আজমের উদ্বোধনে জুটিটি ভাঙে অষ্টম ওভারে এসে। ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ বলে ৩৯ রান করে সাজঘরে ফেরত যান রনি, আরাফাত সানির বলে তিনি এলবিডবিস্নউ হওয়ার পর ভাঙে ৬৭ রানের জুটি।

অনেকদিন ধরে চোখের সমস্যায় ভোগা সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং নিয়ে ছিল নানা রকম অনিশ্চয়তা। কিন্তু ঢাকার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে কিছুটা হলেও ভালো দেখা গেছে তাকে। শুরুতে টাইমিংয়ে কিছুটা ঝামেলা হলেও পরে তিনটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। ২০ বলে ৩৪ রান করে স্স্নগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে দাঁড়ানো নাঈম শেখের কাছে ক্যাচ দেন মোসাদ্দেক হোসেনের বলে। ওই ওভারের প্রথম বলে ৪৩ বলে ৪৭ রান করা বাবরকেও আউট করেছিলেন তিনি।

মাঝে এসে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত খেলা আজমতউলস্নাহ ওমরজাই। ৭ বলে ৩ রান করে সাব্বির হোসেনের বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন তিনি। রংপুরের ইনিংসের ইতি টানেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও মোহাম্মদ নবী। ১০ বলে ১ চার ও সমান ছক্কায় ১৬ রান করেন সোহান, ৩ ছক্কায় ১৬ বলে ২৯ রান করেন নবি। মাঝে কিছুটা ভুগলেও শেষ ওভারে ২০ রান এনে দিয়ে রংপুরের সংগ্রহকে বড় করেন তারা।

রান তাড়ায় নেমে প্রথম ওভারে কেবল দুই রান পায় ঢাকা। পরের ওভারেই তারা হারিয়ে ফেলে অভিষিক্ত ওপেনার সাব্বির হোসেনের উইকেট। ৫ বলে ১ রান করা এই ব্যাটারের দুর্দান্ত ক্যাচ নেন শামীম হোসেন। মেহেদী হাসানের বলে স্স্নগ সুইপ করলে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ নেন শামীম। পরে তিনি বাউন্ডারির বাইরে গেলেও বল ভেতরে রাখেন।

উইকেট হারানোর ওই শুরুর পর কখনোই ম্যাচে ফিরতে পারেনি ঢাকা। হাসান মাহমুদ, সালমান ইরশাদ, মেহেদী হাসানের তোপের মুখে নাঈম শেখ ছাড়া আর কোনো টপ-অর্ডার ব্যাটারই প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। ৩ চার ও সমান ছক্কায় ৩১ বলে ৪৪ রান করে আউট হন নাঈম। এরপর অষ্টম উইকেটে গিয়ে ছোট একটা ?জুটি গড়েছিলেন তাসকিন আহমেদ ও ইরফান শুক্কুর। ১৩ বলে ২৭ রানের ওই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। তার বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ২ ছক্কায় ৮ বলে ১৫ রান করা তাসকিন। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়া ইরফান ২৫ বলে ২১ রান করে রানআউট হন।

রংপুরের হয়ে দারুণ বল করেন সাকিব আল হাসান। ৪ ওভারে স্রেফ ১৬ রান খরচায় তিনি নেন ৩ উইকেট। দু'টি করে উইকেট শিকার করেন মাহেদি হাসান, সালমান ইরশাদ ও হাসান মাহমুদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৭৫/৪ (রনি ৩৯, বাবর ৪৭, সাকিব ৩৪, ওমরজাই ৩, নুরুল ১৬*, নাবি ২৯*; শরিফুল ০/৩৫, তাসকিন ০/৪৩, সানি ১/২৬, গুলবাদিন ০/১১, মোসাদ্দেক ২/৩০, চতুরাঙ্গা ০/২৩, সাব্বির ১/৫)।

দুর্দান্ত ঢাকা: ১৮ ওভারে ১১৫ (নাঈম ২, সাব্বির ১, সাইম ২, রস ২, গুলবাদিন ১৩, মোসাদ্দেক ১, ইরফান ২১, চতুরাঙ্গা ৮, তাসকিন ১৫, শরিফুল ০, সানি ২*; ওমরজাই ০/১৯, মেহেদি ২/২২, সাকিব ৩/১৬, নবি ০/১৮, ইরশাদ ২/১৭, হাসান ২/২০)।

ফল: রংপুর রাইডার্স ৬০ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা: সাকিব আল হাসান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে