রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মালিক-মিরাজ ঝড়ে খুলনাকে প্রথম হারের স্বাদ দিল বরিশাল

ক্রীড়া ডেস্ক
  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বিপিএলে শনিবার খুলনার বিপক্ষে বাউন্ডারি হাঁকানোয় শোয়েব মালিককে অভিনন্দন জানাচ্ছেন বরিশালের মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষ পর্যন্ত দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা -ওয়েবসাইট

৬ বলে প্রয়োজন ১৮ রান। দাসুন শানাকার প্রথম বলে ছক্কা মারলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বরিশালের সমর্থকদের গর্জনে কেঁপে উঠল গ্যালারি। পরের বলে এলো সিঙ্গেল। এবার শোয়েব মালিকের পালা। সময়ের দাবি মিটিয়ে উত্তাল তার ব্যাটও। বোলারের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারির পর চোখধাঁধানো শটে ছক্কায় ওড়ালেন এক্সট্রা কাভার দিয়ে। পরের বলেই ওয়াইড। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বরিশালের আনন্দময় সমাপ্তি।

তাইতো শেষদিকে জমে ওঠা ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ৫ উইকেটে হারাল ফরচুন বরিশাল। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার ১৫৬ রানের লক্ষ্য দুই বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলল তারা। গত কয়েক ম্যাচ ধরেই শেষদিকে ঝড় তোলা মিরাজ এদিন খেলেন ১৫ বলে ৩১ রানের দারুণ এক ইনিংস। শোয়োব মালিকের ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে মূল্যবান ৪১ রান। এর আগে বল হাতে ২ উইকেট নেন পাকিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। টানা চার জয়ের পর এবারের আসরে খুলনার প্রথম হার এটি। ছয় ম্যাচে বরিশাল পেল তৃতীয় জয়।

বিপিএলের চলমান আসরে এতদিন সফলতম দলটি ছিল খুলনা টাইগার্স। টানা চার ম্যাচ জিতে শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছে তারা। শনিবার অবশ্য নাটকীয় এক জয়ে খুলনাকে মৌসুমের প্রথম হারের স্বাদ দিয়েছে ফরচুন বরিশাল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আপাতদৃষ্টিতে খুলনার দিকেই ঝুঁকেছিল ম্যাচ। শেষ ৪ ওভারে বরিশালের ২৪ বলে প্রয়োজন ছিল ৫৪ রান। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ম্যাচটা দৃষ্টিসীমায় নিয়ে আসে মেহেদী হাসান মিরাজ ও শোয়েব মালিকের ঝড়ো ব্যাটিং। ১৭তম ওভারে ছয় মেরে পরিস্থিতি ভারসাম্যে রাখার চেষ্টা করেন মিরাজ।

আর ১৮তম ওভারেও একটি বাউন্ডারি মারলে সমীকরণ দাঁড়ায় ১২ বলে ৩৭। তারপর শেষ দুই ওভারে মিরাজ-মালিকের ঝড়ো ব্যাটিং জয় সুনিশ্চিত করেছে। ১৯তম ওভারে একটি করে ছয় মারেন মিরাজ-মালিক। তাতে ৬ বলে দরকার পরে আর ১৮ রান। লংকান তারকা শানাকা শেষ ওভারে রান আটকানোর মতো কোনো সুযোগই পাননি। প্রথম বলেই ছক্কা মেরে জয়ের পথটা উন্মুক্ত করেছেন মিরাজ। অফস্পিনিং অলরাউন্ডার দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নিলে পরের দুই বলে চার আর ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করেন শোয়েব মালিক। ফিক্সিং বিতর্কে নাম জড়িয়ে বিপিএল থেকে চলে যাওয়ার পর এটা ছিল পাকিস্তানি অলরাউন্ডারের প্রথম ম্যাচ।

মালিক ২৫ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন। মিরাজ ১৫ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ৩১ রানে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৩৩ বলে যোগ হয়েছে ৫৫ রান। ম্যাচ জেতানো এই জুটির আগে উলেস্নখযোগ্য ইনিংসে দলকে টেনে নেওয়ার কাজটা করেছেন তামিম (২০), সৌম্য সরকার (২৬) ও মুশফিকুর রহিম (২৭)। যদিও সেগুলো টি২০'র চাহিদা মেটাতে পারেনি।

শুরুতে টস হেরে ব্যাট করেছিল খুলনা টাইগার্স। ৮ উইকেটে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে তারা। ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের ৩৩ রান ছাড়া টপ অর্ডার থেকে সে রকম কোনো সহায়তা পায়নি খুলনা। টি-টোয়েন্টির চাহিদা মেটানো ব্যাটিংটা মিলেছে লোয়ার অর্ডারে দুই পাকিস্তানির ব্যাটে। মোহাম্মদ নওয়াজ ২৩ বলে ৪ ছক্কায় ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। ফাহিম আশরাফ ১৩ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় উপহার দেন ৩২ রানের ক্যামিও একটি ইনিংস। তাতেই ৮ উইকেটে হারানো দলটির স্কোর ১৫৫ রান পর্যন্ত গেছে।

বরিশালের হয়ে ৭ রানে দুটি উইকেট নেন তাইজুল। ২৪ রানে দুটি নেন শোয়েব মালিকও। ব্যাট-বলে অবদান রাখায় ম্যাচসেরাও ছিলেন তিনি। একটি করে নিয়েছেন মোহাম্মদ ইমরান ও আকিফ জাভেদ। খুলনার হয়ে ১৮ রানে তিনটি উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ছিলেন ডানহাতি পাকিস্তানি পেসার ফাহিম আশরাফ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৫৫/৮ (এনামুল ১২, পারভেজ ৩৩, হাবিবুর ২, জয় ১৩, আফিফ ০, শানাকা ৬, নাওয়াজ ৩৮*, নাহিদুল ৫, ফাহিম ৩২; ইমরান ১/২৫, মিরাজ ০/২২, আকিফ ১/২৭, মালিক ২/২৪, খালেদ ০/২৬, তাইজুল ২/৭, মাহমুদউলস্নাহ ০/১৮)

ফরচুন বরিশাল: ১৯.৪ ওভারে ১৫৬/৫ (তামিম ২০, শেহজাদ ০, সৌম্য ২৬, মুশফিক ২৭, মালিক ৪১*, মাহমুদউলস্নাহ ৪, মিরাজ ৩১*; নাসুম ১/২৪, নাহিদুল ১/৩০, ওয়াসিম ০/৩৬, ফাহিম ৩/১৮, নাওয়াজ ০/২৩, শানাকা ০/২৪)

ফল: ফরচুন বরিশাল ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যাচসেরা : শোয়েব মালিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে