মাঠের ফুটবলে গত মৌসুমে অসাধারণ কিছু করতে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বড় দুই আসরেই ট্রফি ধরে রাখতে পারেনি তারা। তবে বাণিজ্যের খেলায় তারাই গোটা বিশ্বে সফলতম। 'ডিলোইট ফুটবল মানি লিগ'-এ সবার ওপর এই স্প্যানিশ ক্লাবই। ২০২২-২৩ মৌসুমে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় করা ফুটবল ক্লাব তারাই।
গত মৌসুমে মাঠের সাফল্যে স্বপ্নের মতো সময় কাটানো ম্যানচেস্টার সিটির আয় বেড়েছে আগের চেয়ে। তবু তারা পড়ে গেছে রিয়ালের পেছনে। ফুটবল ক্লাবগুলোর আয়েরর্ যাংকিংকে বলা হয় 'ডিলোইট মানি লিগ', যেটি করে থাকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান 'ডিলোইট।' বহুজাতিক পেশাদার সার্ভিস নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠান এটি, বিশ্বের শীর্ষ চারটি অ্যাকাউন্টিং ফার্মের একটি মনে করা হয় তাদেরকে।
ডিলোইট-এর হিসাবে ২০২২-২৩ মৌসুমে রিয়ালের মোট রাজস্ব আয় ৮৩ কোটি ১০ লাখ ইউরো। এবারের আগে সবশেষ তারা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আয় করা ক্লাব হয়েছিল ২০-১৭-১৮ মৌসুমে। আগের মৌসুমের চেয়ে ১৬ শতাংশ আয় বেড়েছে তাদের, সংখ্যায় যা প্রায় ১১ কোটি ৮০ লাখ ইউরো। মূলত খুচরা বিক্রি, স্টেডিয়ামে দর্শক বৃদ্ধি ও স্পন্সরশিপ আয়ের 'রিকোভারি' থেকে তাদের আয় বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ডিলোইট।
টানা দুই মৌসুম পর এবার শীর্ষস্থান হারিয়েছে ম্যানসিটি। তবে গত মৌসুমে ট্রেবল জয়ের ইতিহাস গড়া ক্লাবটির আয় বেড়েছে ঠিকই। ৮২ কোটি ৬০ লাখ ইউরো আয় নিয়ে তারা আছে তালিকার দুইয়ে। মাঠের ফুটবলে দুর্দান্ত সাফল্যের পথ ধরে তাদের আয় বেড়েছে টিভি সম্প্রচার ও 'কমার্শিয়াল' রাজস্ব থেকে। সব বড় ক্লাবেরই এবার আয়ের মূল উৎস ছিল এই 'কমার্শিয়াল' রাজস্ব। ২০১৫-১৬ মৌসুমের পর এই প্রথম এই খাত থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে ক্লাবগুলো (কোভিডের প্রভাব পড়া ২০১৯-২০ মৌসুম বাদ দিলে)। ক্লাবগুলোর আয়ের আরেকটি প্রধান খাত সম্প্রচার থেকে এবার আয় বেড়েছে স্রেফ ৫ শতাংশ।
৮০ কোটি ২০ লাখ আয় নিয়ে তিনে আছে পিএসজি। ৮০ কোটি আয় করে চারে বার্সেলোনা। গত মৌসুমে লা লিগা জয়ী ক্লাবটি আছে আয়ের তালিকায় চারে। আগের মৌসুমে তাদের অবস্থান ছিল সপ্তম। মাঠের ফুটবলে সাফল্য খুব একটা ধরা না দিলেও ৭৬ কোটি ৬০ লাখ ইউরো আয় করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আছে পাঁচে। তালিকায় অবস্থান অবশ্য আগের মৌসুম থেকে এক ধাপ নেমে গেছে তাদের। জার্মান ক্লাবগুলোর মধ্যে সবার ওপরে যথারীতি বায়ার্ন মিউনিখ। ৭৪ কোটি ৪০ লাখ ইউরো আয়ে তারা আছে ছয়ে। তিন থেকে এক লাফে সাতে নেমে গেছে লিভারপুল।
ডিলোইট-এর হিসাবে যা এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অবনমন। এছাড়াও আয় কমেছে আতলিতেকো মাদ্রিদ ও ওয়েস্ট হ্যামের। আট থেকে দশে আছে তিন ইংলিশ ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পার, চেলসি ও আর্সেনাল। আয়ের খেলায় শীর্ষ ২০ ক্লাবের মধ্যে ৮টি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে। আগের মৌসুমে এই সংখ্যা ছিল ১১। এবার বিশের বাইরে চলে গেছে লেস্টার সিটি, লিডস ইউনাইটেড ও এভারটন। ইতালির শীর্ষ ক্লাব জুভেন্টাস এগারো নম্বরে আছে ৪৩ কোটি ২৪ লাখ আয় নিয়ে। মানি লিগ ক্লাবগুলোর মোট রাজস্ব আয় ছিল গত মৌসুমে ১০.৫ বিলিয়ন ইউরো, যা রেকর্ড এবং আগের মৌসুমের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি।