বিপিএলের প্রথম ধাপে টস জিতলেই যেন ম্যাচ জয়
প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া ডেস্ক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এবার ফরচুন বরিশালের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করছেন ডেভ হোয়াটমোর। একটা সময় বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়েও প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান কোচ হোয়াটমোর হাসতে হাসতে বললেন, 'আমি ভেবেছিলাম আট ম্যাচের মধ্যে এই একটা ম্যাচ ভিন্ন হবে, কিন্তু হলো না।' কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাট করা ম্যাচেও প্রায় জিতে গিয়েছিল ফরচুন বরিশাল। শেষ পর্যন্ত শুরু থেকে চলা ট্রেন্ডে কোনো ভিন্নতা হয়নি, জিতেছে কুমিলস্নাই।
বিপিএলে বরিশাল-কুমিলস্ন ম্যাচে তাও যা তুমুল লড়াই হয়েছে। বাকি সাত ম্যাচ একদম জমেনি। আগে ব্যাটিং পাওয়া দল পর্যাপ্ত রান করতে পারেনি। রান তাড়ায় যাওয়া দল মাঝেমধ্যে চাপে পড়লেও তেমন কোনো দোলাচল ছাড়াই জয় নিশ্চিত করেছে। বিপিএলের ঢাকা পর্বের প্রথম ৮ ম্যাচে সবগুলোতেই টস জয়ী দলই ম্যাচ জিতেছে। টস জিতলে প্রতিটি অধিনায়ক আগে বোলিং বেছে নিয়েছেন, এই ছক মেনেই ম্যাচ বের করে ফেলেছেন। মেহেদী হাসান মিরাজ যেমন বলছিলেন, 'আগে ব্যাটিং করলে কত রান নিরাপদ হবে তা বোঝা যায় না। রান তাড়া করা কন্ডিশনের কারণেই তাই সহজ।'
মিরপুরের উইকেটে ম্যাচ শুরুর দিকে কিছুটা আঠাল ভাব থাকে। ম্যাচে আয়ু বাড়তে উইকেট হতে থাকে সহজ। শীতের এই সময়টায় শিশির প্রতি ম্যাচেই রাখছে প্রভাব। ব্যাটিং যত পরে হচ্ছে শিশিরের সুবিধা তত ব্যাটারদের পক্ষে আসছে। ৮ ম্যাচের মধ্যে এখনো পর্যন্ত ২০০ রানের ইনিংসের দেখা মেলেনি। সর্বোচ্চ ১৮৭ রান তাড়া দেখা গেছে। দেড়শ' পেরুনো ইনিংস দেখা গেছে তিন ম্যাচে। এই তিন ম্যাচই ছিল রাতের আলোয়।
দিনের আলোয় প্রতিদিনই প্রথম ম্যাচ হচ্ছে লো স্কোরিং। এখন পর্যন্ত দিনের প্রথম ম্যাচে উদ্বোধনী ম্যাচেই বেশি রান হয়েছে। সেদিন কুমিলস্নার ১৪৩ রান টপকে যায় দুর্দান্ত ঢাকা। বাকি ম্যাচগুলোতে ১৩০ ও ১২০ এর ঘরে ঘুরেছে দলীয় পুঁজি। তবে রান কম হওয়ার দায় উইকেটকে দেননি কোন অধিনায়ক। ঢাকার অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১৩৬ রান করে ৬ উইকেটে হেরে আসার পর বলেছিলেন, 'উইকেট ১৭০ থেকে ১৭৫ রানের ছিল। আমরাই পারিনি। আমরা বাজে ব্যাট করেছি।'
একই মত মাশরাফি বিন মর্তুজার। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে কেবল ১২০ রান করতে পেরেছিল তার দল সিলেট স্ট্রাইকার্স। ওই রান তাড়ায় ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারালেও রংপুর শেষ পর্যন্ত জেতে ৪ উইকেটে। মাশরাফির মতে, 'বাজে ব্যাটিং' করেছেন তারা। উইকেট মানিয়ে নিয়ে বড় ইনিংস খেলার মতো ছিল। কিন্তু ব্যটাররাই তাদের কাজটা করতে পারেননি।
ওই ম্যাচের স্কোরকার্ড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় দুই দল মিলিয়ে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরদের মধ্যে দুই অঙ্কে যেতে পেরেছিলেন কেবল একজন। সেই নাজমুল হোসেন শান্তর ২৪ বলে ১৪ রানের ইনিংস মোটেও আকর্ষণীয় কিছু ছিল না। সিলেটের হয়ে অস্ট্রেলিয়ার বেন কাটিং ও ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল করেন সমান ৩৭ রান করে। রান তাড়ায় রংপুরের বাবর আজম ৫৬ আর আজমতুলস্নাহ ওমরজাই করেন ৪৭ রান। উইকেট মন্থর হলে, কঠিন হলে দেশীয় ব্যাটারদেরই চেনা আঙিনায় দায়িত্ব বেশি নেওয়ার কথা। তারা সেটা করতে পারেননি। বরং তাদের দক্ষতা হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ।
খেলা দেখে থাকলে অতি মন্থর উইকেটের বদনাম মিরপুরকে দেওয়া এবার কঠিন। উইকেটে বেশ ভালো বাউন্স দেখা গেছে প্রতি ম্যাচে। বল ক্যারি করছিল ভালোভাবেই। ব্যাটাররাও বলছেন, বল পড়ে থেমে যায়নি, ব্যাটে আসছিল সহজে। উইকেট যে স্পিনারদের জন্য স্বর্গ কিছু নয় সেই সাক্ষ্য দেবে পরিসংখ্যানও। এখন পর্যন্ত উইকেট শিকারে সেরা পাঁচ বোলারের তিনজনই পেসার।