জয়ে শুরু শেখ জামালের
প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে গোল খরায় ভুগছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। তবে ফেডারেশনকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে শুরুর ম্যাচটাই তারা জিতেছে বড় ব্যবধানে। মঙ্গলবার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাতে 'এ' গ্রম্নপের ম্যাচে শেখ জামাল ৪-১ গোলে হারিয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে। এর মধ্যে তিনটি গোলই এসেছে জামালের স্থানীয় দুই ফুটলার ফাহিম ও সাজ্জাদের পা থেকে। জোড়া গোল করেন ফাহিম। নিঃসন্দেহেই এই জয় পরবর্তী ম্যাচগুলোতে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বাড়িয়ে দিবে। একই দিনে মুন্সীগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে গ্রম্নপ 'সি'র ম্যাচে শেখ রাসেলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টে টিকে থাকলো ফর্টিস এফসি।
স্বাধীনতাকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স মোটেই ভালো হচ্ছিল না শেখ জামালের। লিগে এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচ খেলে একটি মাত্র ম্যাচ জিতেছে জামাল। ব্যর্থতার দায়ভারটা ফরোয়ার্ড লাইনের উপরই বেশি বর্তায়। তবে ফেডারেশনকাপে দারুণভাবে জ্বলে উঠলেন জামালের ফরোয়ার্ডরা। বিশেষ করে স্থানীয় ফুটবলারদের অসাধারণ নৈপুণ্য মুগ্ধ করেছে দেশের ফুটবল দর্শকদের। তিনটি গোল যেমন করেছেন স্থানীয় দুই ফুটবলার। তেমনি তিনটি গোলের পেছনের নায়কই জামালের দেশীয় ফুটবলাররাই। এর মধ্যে প্রথম দুই গোলের যোগানদাতা ডিফেন্ডার জয়নাল আবেদিন।
কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের শুরু থেকেই দেখা মিলেছে ভিন্ন এক শেখ জামালের। ২ মিনিটে বক্সের ডান প্রান্ত থেকে জামালের ফরোয়ার্ড সাজ্জাদ হোসেনের কাটব্যাক প্রতিহত হয় রহমতগঞ্জের রক্ষণে। ১৩ মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের বাড়িয়ে দেওয়া বল পেয়েছিলেন জামালের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার হিগর লেটে। তবে তাকে গোলের সুযোগ সৃষ্টি করতে দেননি প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের ১৮ মিনিটে বক্সের বেশ কাছেই ফ্রি কিক পায় রহমতগঞ্জ। শোয়েব মিয়ার বা পায়ের কিক পেনাল্টি এরিয়ায় পড়লেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তার সতীর্থরা। তবে পরের মিনিটে এগিয়ে যায় শেখ জামাল। বা প্রান্ত থেকে জয়নাল আবেদিনের দূরপালস্নার ক্রস বক্সে জটলার মধ্যে থেকে দারুণ হেডে লক্ষ্যভেদ করেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড অগাস্টিন ডিম্বা (১-০)। ২৩ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে শোয়েবের কর্নার বক্সে ক্লিয়ার করেন শেখ জামালের উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার খোলমাতভ। ৩০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া হয় জামালের। বক্সের বাইরে থেকে তাজউদ্দিনের বাড়িয়ে দেওয়া বল প্রায় ফাঁকা পোস্টে পেয়েও বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। গ্যালারিতে যখন সমালোচনার ঝড়, ঠিক তখনই তার দারুণ জবাব দিলেন ফাহিম। ৩২ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে জয়নাল আবেদিনের ক্রসে দূর থেকে উড়ে আসা বল ডান পোস্টের কাছ থেকে ডান পায়ের আলতো ছোঁয়াতে বল জালে পাঠান ফাহিম (২-০)। (৪৫+১) বা প্রান্ত থেকে হিগর লেটের স্পট কিক অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে।
৫৪ মিনিটে ফাহিমের কর্নার বক্সে পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি ডিম্বা। ৬০ মিনিটে ইনডাইরেক্ট ফ্রি কিক পায় রহমতগঞ্জ। দাউদা সিসে জামালের হিউম্যান ওয়ালের উপর দিয়ে বল কার্ভ করে জালে পাঠাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ৬৫ মিনিটে পেনাল্টি এরিয়ার একটু সামনেই ফ্রি কিক পায় জামাল। হিগর লেটের স্পট কিক জালে জড়ায়নি। পরের মিনিটে বা প্রান্ত থেকে সতীর্থের দারুণ পাসে পোস্টের কাছে বল পেয়েও গোল আদায় করে নেয়ার নিশ্চিত সুযোগ হাতছাড়া করেন রহমতগঞ্জের রাজন হাওলাদার। ৮৬ মিনিটে আরও একটি গোল আদায় করে নেয় ধানমন্ডির ক্লাবটি। বা প্রান্ত থেকে শাকিল আহমেদের কাটব্যাকে দারুণ দক্ষতায় ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন সাজ্জাদ (৩-০)। ইনজুরি টাইমে (৯০+২) মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় রহমতগঞ্জ। প্রতিপক্ষের এক ফুটবলারকে নিজেদের বক্সে ফেলে দেন মানিক। রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। দাওদা সিসের স্পট কিক আশ্রয় নেয় জামালের জালে (৩-১)। (৯০+৪) মিনিটে বক্সের বা প্রান্ত থেকে ডান পায়ের শটে গোল করে নিজের গোলের জোড়া পূর্ণ করে নেন জামালের ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদ ফাহিম (৪-১)। আর এই গোলেই শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত হয় জামালের।