দারুণ ছন্দে মোহামেডান-আবাহনী
প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে (বিপিএল) দারুণ ছন্দে আছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। পরপর দুই ম্যাচে জয় পেয়েছে আবাহনী। অন্যদিকে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানটি ধরে রেখেছে মোহামেডান। শনিবার গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে শেখ রাসেলকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ঢাকা আবাহনী। একই দিনে ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ম্যাচে পুলিশ ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয় পেয়েছে মোহামেডান। মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
এদিন প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে আবাহনী ও মোহামেডানের (ভিন্ন প্রতিপক্ষ) ম্যাচ দু'টিতেই বেশি আগ্রহ ছিল দর্শকদের। এই দু'টি ম্যাচই ছিল বিগ ম্যাচ। গোপালগঞ্জে ম্যাচ জুড়ে আধিপত্য ছিল ঢাকা আবাহনীরই। ৪ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ব্রান্দাও সান্তোসের বাড়িয়ে দেয় বল বক্সে পেয়ে শট নিতে গিয়েছিলেন গ্রানাডিয়ান ফরোয়ার্ড কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। তবে প্রতিপক্ষের কড়া পাহাড়ায় গোলের সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারলেও কর্ণার আদায় করে নেন। ডান প্রান্ত থেকে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার জনাথন ফার্নান্দেজের কর্ণার পেনাল্টি এরিয়া থেকে হেডে ক্লিয়ার করেন রাসেলের এক ডিফেন্ডার। ৯ মিনিটে জনাথনের শট চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। ১২ মিনিটে নিজেদের ভুলেই পিছিয়ে পড়ে শেখ রাসেল। বক্সের বাইরে ওয়াশিংটনকে থামাতে পারেননি রাসেলের ডিফেন্ডার শাহীন আহমেদ। বল পেয়ে যান ওয়াশিংটন। সতীর্থের উদ্দেশ্যে বল বাড়িয়ে দেন। নিজে শট করার সুযোগ থাকা সত্ত্ব্বেও বক্সে বল বাড়িয়ে দেন কর্নেলিয়াস। বল পেয়ে দারুণ শটে রাসেলের জাল কাঁপান জনাথন (১-০)। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ৪৫+২ বক্সের বাইরে থেকে জনাথনের ফ্রি কিক বক্সে পেয়ে পাস করে দেন ওয়াশিংটন। বল বুঝে নিয়ে বা পায়ের শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট (২-০)। ৭৪ মিনিটে একটি গোল শোধ করে অলবস্নুজরা। চন্দন রায়ের কর্ণার থেকে বল পেয়ে বক্সে জটলার মধ্যে থেকে গোল করেন রাসেলের ফরোয়ার্ড সুমন রেজা (২-১)। ৮৫ মিনিটে জনাথন শর্ট কর্ণার করে নিজেই বল নিয়ে বক্সে ক্রস করেন। পোস্টের কাছ থেকে ফাইনাল টাচে লক্ষ্যভেদ করেন কর্নেলিয়াস (৩-১)। এটি এই ম্যাচে তার দ্বিতীয় গোল। শেষ পর্যন্ত এই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় আবাহনীর।
ময়মনসিংহে মোহামেডান পুলিশ লড়াইয়ে ২৭ মিনিটে জাফর ইকবালের গোলে এগিয়ে যায় সাদা-কালোরা (১-০)। ৩৪ মিনিটে পালাসিওয়াস এর গোলে ম্যাচে সমতা আনে পুলিশ (১-১)। ৭০ মিনিটে সুলেমান দিয়াবাতের যোগান দেওয়া বল পুলিশের জালে পাঠিয়ে মোহামেডানকে আবারও এগিয়ে দেন উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার মোজাফফারভ (২-১)। ৭৮ মিনিটে সুলেমান দিয়াবাতের গোলে ৩-১ এ এগিয়ে যায় মোহামেডান। ৮৪ মিনিটে শাহেদ মিয়ার গোলে ব্যবধান কিছুটা কমায় পুলিশ (৩-২)। পয়েন্ট হারানোর সঙ্কায় পড়ে মোহামেডান। তবে এরপর আর কোনো গোল করতে পারেনি পুলিশ। যে কারণে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ে মোহামেডান।
অন্যদিকে মুন্সিগঞ্জে মুখোমুখি হয় চলতি মৌসুমের দুর্বল দুই দল চট্টগ্রাম আবাহনী ও ব্রাদার্স ইউনিয়ন। পয়েন্ট তলানির এই দুই দল এখন পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি। যদিও শনিবার ম্যাচের ৫৩ মিনিটের মধ্যে মাহবুবুর রহমান সুফিলের দুই গোল আশা জাগিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত স্কোর ধরে রাখতে পারেনি ব্রাদার্স। ১২ মিনিটে মাহবুবুর রহমান সুফিলের গোলে লিড নেয় ব্রাদার্স ইউনিয়ন (১-০)। ৫৩ মিনিটে আরও একবার চট্টগ্রাম আবাহনীর জাল কাঁপিয়ে নিজের গোলের জোড়া পূর্ণ করেন সুফিল (২-০)। দু'টি গোলেরই পেছনের নায়ক ছিলেন ব্রাদার্সের মিশরীয় মিডফিল্ডার মোস্তফা খারাবা। তবে ম্যাচের শেষ দিকে মাত্র ১ মিনিটের মধ্যেই ভাগ্য বদল করে নেয় চট্টলা। ৮০ মিনিটে হেমন্ত ভিনসেন্ট ও ৮১ মিনিটে নাসিরুদ্দিন চৌধুরীর গোলে সমতা এনে ম্যাচ শেষ করে চট্টগ্রাম আবাহনী।