শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

মিরপুর স্টেডিয়ামের চুক্তির মেয়াদ শেষ!

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশের হোম অব ক্রিকেট শেরেবাংলা স্টেডিয়াম -ফাইল ফটো

বাংলাদেশের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব ক্রীড়া স্থাপনার মালিকানা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি)। মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ক্রিকেট বোর্ড লম্বা সময় ধরে এনএসসি'র কাছ থেকে চুক্তির মাধ্যমে বরাদ্দ নিয়ে ব্যবহার করছে। ওই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে।

২ জুন ২০০৮ সালে এনএসসি ও বিসিবি'র মধ্যে শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ব্যবহার নিয়ে চুক্তি সম্পাদিত হয়। ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষে নিজামউদ্দিন চৌধুরি সুজন (বর্তমান সিইও-তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পক্ষে তৎকালীন পরিচালক প্রশাসন এবিএম আব্দুল ফাতাহ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাক্ষী হিসেবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আইন কর্মকর্তা কবিরুল হাসান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম এবং বিসিবি'র পক্ষে বিসিবি সভাপতির পিএস তৌহিদ মাহমুদ স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর ২০০৮ সাল হলেও চুক্তির কার্যকারিতা দেখানো হয়েছে ১৮ অক্টোবর ২০০৬ সাল থেকে ১৫ বছর। ফলে ২০২১ সালের অক্টোবরে চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। চুক্তিপত্রে দুই পক্ষের সমঝোতায় পুনরায় নবায়নের বিষয়টি উলেস্নখ ছিল। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও দুই পক্ষের কেউই নতুন চুক্তি সম্পাদনে কার্যত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

ক্রিকেট বোর্ডকে শুধু শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ১৫ বছরের চুক্তিতে ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করলেও অন্য পাঁচটি স্টেডিয়ামের বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা উলেস্নখ করেনি এনএসসি। ওই ৫ স্টেডিয়াম হলো- নারায়ণগঞ্জের ফতুলস্না ওসমান আলী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম শহীদ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম (এখন জহুর আহমেদ চৌধুরী), খুলনা মতিউর রহমান স্টেডিয়াম (শেখ আবু নাসের), রাজশাহী শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী স্টেডিয়াম, বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। ২০০৬ সালের এক চিঠিতে এই পাঁচটি স্টেডিয়াম ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়ে সব দায়িত্ব ও ব্যয়ভার ক্রিকেট বোর্ডের ওপর অর্পণ করেছিল এনএসসি।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সর্বোচ্চ সংস্থা হিসেবে ফেডারেশনগুলোর তদারকির অধিকার রাখে। শেরেবাংলা স্টেডিয়াম নিয়ে চুক্তির মেয়াদ দুই বছর আগে শেষ হলেও এনএসসি'র পক্ষ থেকে বিসিবি'কে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়নি।

অন্যদিকে বিসিবি বাংলাদেশের অন্যতম পেশাদার ক্রীড়া সংস্থা হলেও তারাও নতুন চুক্তি না করেই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যদিও দুই পক্ষ মৌখিকভাবে এই বিষয়ে আলোচনা করেছে। এখন অবশ্য দুই পক্ষই দ্রম্নত সময়ের মধ্যে পুনরায় আনুষ্ঠানিক চুক্তির ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।

ফুটবল ফেডারেশন বাদে বাকি সব ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত ২ জন থাকেন। ফেডারেশন ও এনএসসির মধ্যে যোগসূত্রের জন্যই এই পন্থা। ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত ২ জন পরিচালক রয়েছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত পরিচালকরাও চুক্তি উত্তীর্ণের বিষয়টি অবগত নন।

ক্রীড়া স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণ ও ফেডারেশনগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। সরকারি এই সংস্থা ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে শেরেবাংলা স্টেডিয়াম নিয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে গেলেও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ও মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম ব্যবহার নিয়ে ফুটবল ও হকি ফেডারেশনের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তি করেনি। অন্য সব ফেডারেশনের মতো আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও ছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কমপেস্নক্সের মধ্যে। ২০০০ পরবর্তী সময়ে ক্রিকেট বোর্ড গুলশানের নাভানা টাওয়ারে অফিস নেয়। এরপর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকেও বোর্ডের অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে