বিপিএল থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্সের
রাজস্ব ভাগাভাগি না হলে আমরা আগামী বিপিএলে থাকব না। কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স টিকিট রাইটস, গ্রাউন্ড রাইটস ও মিডিয়া রাইটসের একটা অংশ চায়
প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া ডেস্ক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ছয়বার অংশ নিয়ে চারবার শিরোপা জিতে সবচেয়ে সফল দল কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স। বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে পেশাদারিত্বের ঘাটতি থাকলেও ভিক্টোরিয়ান্সকে এসব ব্যাপারে বরাবরই দেখা গেছে গোছানো। প্রতি আসরেই বড় বড় তারকার সমাবেশ দেখা যায় দলটিতে। ভালো দল করে সফল হলেও চরম হতাশা ঘিরে ধরেছে কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্সের স্বত্ব্বাধিকারী নাফিসা কামালকে। বিসিবির কোনো বাণ্যিজিক মডেল না থাকা, রাজস্বের আয় ভাগ না করায় আগামী বছর থেকে আর বিপিএলে না থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি।
বিপিএলের রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে অনেক আগ থেকেই সরব কুমিলস্নার মালিক নাফিসা কামাল। ২০১৯ সালে ক্রিকবাজকে তিনি বলেছিলেন, রাজস্ব ভাগাভাগির একটা মডেল বিপিএলে থাকা উচিত কিন্তু চার বছরেও সেটা আলোচনার মুখ দেখেনি। ২০২২ সালে গভর্নিং কাউন্সিল জানিয়ে দেয়, রাজস্ব ভাগাভাগির কোনো মডেলে আগ্রহী নন তারা। নাফিসা কামাল স্পষ্ট করেই বলেছেন, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল বর্তমানে যে কাঠামো মেনে চলছে, তাতে টুর্নামেন্টে তাদের পক্ষে থাকাটা কঠিন হয়ে পড়বে।
২০১৯ সালেও ক্রিকবাজকে তিনি বলেছিলেন, রাজস্ব ভাগাভাগির একটা মডেল বিপিএলে থাকা উচিত। কিন্তু চার বছরেও সেটা আলোচনার মুখ দেখেনি। ২০২২ সালে গভর্নিং কাউন্সিল জানিয়ে দেয়, রাজস্ব ভাগাভাগির কোনো মডেলে আগ্রহী নন তারা। নাফিসা কামাল নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, 'হঁ্যা, এটা শতভাগ সত্য। রাজস্ব ভাগাভাগি না হলে আমরা আগামী বিপিএলে থাকব না। কুমিলস্না ভিক্টোরিয়ান্স টিকিট রাইটস, গ্রাউন্ড রাইটস ও মিডিয়া রাইটসের একটা অংশ চায়।'
ব্রডকাস্টিংয়ের রাজস্বতে পিছিয়ে থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি, 'আমরা কত আগে বিপিএল শুরু করেছি। অথচ এত বিশাল জনসংখ্যা নিয়েও আমরা ব্রডকাস্টিংয়ে অনেক পিছিয়ে। বিসিবি যদি আমাদের টিকিট রাইটসের ৫০ শতাংশও দেয়, তাহলে একটি টিকিটও অবিক্রীত থাকবে না। কিন্তু বিসিবি সেই রাইটস আমাদের দেয় না। মিডিয়া, গ্রাউন্ড রাইটসের বেলাতেও একই পন্থা অনুসরণ করা হচ্ছে।'
পরিকল্পনাগত ত্রম্নটির কথাও উলেস্নখ করেছেন নাফিসা কামাল। তিনি বলেন, 'কাগজে-কলমে যেভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট চলা উচিত। সেটা আমাদের বিপিএলে প্রযোজ্য নয়। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের যেসব রাইটস পাওয়া উচিত, আমাদের সেটা পাওয়া হয় না।' বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের খরচ করা অর্থ সাধারণত উঠে আসে না। দেশের বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা থেকে বিনোয়োগ করে থাকেন বলে শোনা যায়। তবে সেটি মানতে নারাজ নাফিসা। তিনি বলছেন তাদের আয় ও ব্যয়ের হিসাব সমান।
নাফিসা বলেন, 'শুধু ভালোবাসা থেকে এটা সম্ভব নয়। এটা আপনারা সবসময় বলেন যে, 'আউট অব লাভ' আমরা করছি। ভালোবাসার জায়গা থেকে আমরা করছি কাজটুকু, অনেক বেশি পরিশ্রম করছি, চেষ্টা করছি। যেটা বাকি দলগুলো করছে না। কিন্তু স্পন্সর তো আমাদের পেতে হয়, আর্থিক দিক ঠিক রাখতে হয়। আমাদের টাকাটা তো আনতে হবে। নিজেদের পকেট থেকে তো পুরো বিপিএল চালাতে পারব না। এটা খুব মিথ্যা হবে যদি আমি বলি যে, আমাদের পকেট থেকে পুরো বিপিএল চালাচ্ছি। এটা সম্ভবই নয়।'
এ সময় ফ্র্যাঞ্চাইজিদের যথেষ্ট সম্মানও দেওয়া হয় না বলে উলেস্নখ করেন নাফিসা। তার কথা, ফ্র্যাঞ্চাইজিরা টুর্নামেন্টের বড় স্টেকহোল্ডার। অথচ তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে আয়োজকরা বৈঠকের উদ্যোগ নেননি কখনো, 'আমি আসলে ভুলে গেছি তারা আমাদের সঙ্গে সর্বশেষ কবে বৈঠক করেছে। এই বছর তাদের বলেছিলাম একটা বৈঠকের আয়োজন করতে। যাতে সামনা-সামনি বসা যায়। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। গত বছরও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বৈঠক করতে চেয়েছিলাম।'