যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে গতকাল রোববার প্রথম দিন ব্যস্ত সময় কাটালেন নাজমুল হাসান পাপন। সকালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব বুঝে নেন। বিকালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে ফেডারেশন ও ক্রীড়াঙ্গনের সর্বস্তরের মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ছোট্ট সম্মেলন কক্ষে পা ফেলার ঠাঁইও ছিল না। খানিকটা ধাক্কাধাক্কিও হয়েছে ফুল দিতে গিয়ে। বিষয়টি চোখ এড়ায়নি নতুন ক্রীড়ামন্ত্রীর। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনার সময় এটিও উলেস্নখ করেছেন, 'আজকের (রোববার) অনুষ্ঠানটি খানিকটা বিশৃঙ্খল ছিল। আমি সামনে শৃঙ্খলতার সঙ্গেই আয়োজন করব।'
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অধীনস্থ সংস্থা হলেও বিসিবির কর্মকর্তারা এদিকে আসেন-ই না। গতকাল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন মন্ত্রী হয়ে প্রথম এসেছেন, তাই বিসিবির বেশ কয়েকজন পরিচালকই উপস্থিত ছিলেন তার সঙ্গে।
যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেরও চেয়ারম্যান। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সাধারণত স্টেডিয়াম অবকাঠামো নির্মাণে ব্যস্ত থাকে। নতুন চেয়ারম্যান স্টেডিয়াম নির্মাণের চেয়ে মাঠকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন, 'ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, স্টেডিয়াম তো রয়েছে। কিন্তু মাঠ কোথায়? মাঠ না থাকলে মানুষ খেলবে কোথায়? তাই আমার কাছে স্টেডিয়ামের চেয়ে মাঠ বেশি প্রয়োজন।'
ঢাকায় মাঠ সংকটের বিষয়টি উলেস্নখ করে ক্রিকেটের সমস্যাও সামনে আনলেন মন্ত্রী, 'মিরপুর স্টেডিয়াম ছাড়া ঢাকায় সেভাবে মাঠ নেই। ফলে মিরপুরে অনেক চাপ পড়ছে এবং এজন্য উইকেটের মানও ভালো হচ্ছে না।'
স্টেডিয়াম নির্মাণ ও সংস্কার রক্ষণাবেক্ষণ যথাযথ হয় না। এই বিষয়টিও তুলে ধরেছেন ক্রীড়ামন্ত্রী, 'স্টেডিয়াম কিন্তু আমাদের অনেক রয়েছে। অনেক স্টেডিয়াম তালাবদ্ধ, খেলা হয় না, আবার অনেক স্টেডিয়াম সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়।' তাই তিনি এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করার তাগিদ অনুভব করেছেন, 'আমাদের আগে দেখতে হবে স্টেডিয়ামের সংখ্যা কত এবং এর মধ্যে সক্রিয় কয়টি। এরপর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।'
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বাজেট হাজার কোটি টাকার একটু বেশি। এর মধ্যে যুব খাতেই চলে যায় বেশির ভাগ অর্থ। ক্রীড়াঙ্গনে যে টাকা থাকে এর আবার সিংহভাগ অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রশাসনিক ব্যয়। ক্রীড়ার প্রশিক্ষণে তুলনামূলক বেশি বরাদ্দ থাকে না। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অবকাঠামো নির্মাণও প্রয়োজন বলে মনে করেন নতুন মন্ত্রী, 'প্রশিক্ষণ যেমন দরকার, তেমনি প্রয়োজন অবকাঠামো নির্মাণও। খেলোয়াড়দের জন্য ভালো এবং উন্নতমানের জায়গা দেওয়া দরকার প্রশিক্ষণ করানোর জন্য।'
প্রথম দিনই বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের খোঁজ নিয়েছেন পাপন। নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী বাফুফে প্রতিনিধিদের কাছে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক
ইমরান হোসেন তুষার বলেন, 'মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় আমাদের সভাপতির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছেন এবং পাশাপাশি দেখতে যাওয়ার ইচ্ছেও
প্রকাশ করেছেন।' পাপন সালাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা
করতে বাসায় না ফেডারেশন যাবেন সেটি অবশ্য
খোলাসা করে বলেননি।