সেলিমকে ঘিরে বক্সিংয়ে 'প্রথম অলিম্পিক' স্বপ্ন!
প্রকাশ | ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
দেশের বক্সিংয়ের ইতিহাস অর্ধ-শতাব্দীরও বেশি। কিন্তু এত লম্বা সময়ে কোনো অলিম্পিকেই খেলা হয়নি দেশের বক্সারদের। স্বপ্ন ছিল অনেক বক্সারেরই। অবশেষে সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছেন সেলিম হোসেন। প্যারিস অলিম্পিকের ওয়াইল্ড কার্ড পেলে প্রথম কোনো অলিম্পিক গেমসের রিংয়ে লড়বেন লাল সবুজের একজন বক্সার। এমনটা হলে দেশের বক্সিংয়ে 'আশ্চর্য' এবং 'অভাবনীয়' হবে বলেই উলেস্নখ করলেন বক্সিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম তুহিন। তার কথায়, 'সেলিম ওয়াইল্ড কার্ড পেলে দেশের বক্সিং ইতিহাসে অভাবনীয় ঘটনা ঘটবে।'
১৯৭৭ সালে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন আবদুল হালিম। ১৯৮৬ সালে সিউল এশিয়ান গেমস থেকে দেশের জন্য প্রথম পদক (ব্রোঞ্জ) এনে দেন মোশাররফ হোসেন। এরপর কালে কালে সময় গড়িয়েছে অনেক। গত ৩৭ বছরে কোনো বক্সার অলিম্পিক গেমসের টিকিট পাননি। এবার সেই সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বক্সার সেলিম হোসেন। গত বছর চীনের হাংজুর এশিয়ান গেমসে অল্পের জন্য পদক লড়াইয়ে থাকতে পারেননি বাংলাদেশের বক্সার সেলিম হোসেন। বিভিন্ন দেশের বাঘা বাঘা বক্সারদের পেছনে ফেলে ৫৭ কেজি ওজন শ্রেণিতে পঞ্চম হন তিনি। আর এতেই প্রথম কোনো অলিম্পিক গেমসে (প্যারিস অলিম্পিক) খেলার স্বপ্নে বিভোর দেশের বক্সিং। বর্তমানে সেনাবাহিনী থেকে কঙ্গোতে শান্তিরক্ষী মিশনে রয়েছেন রাজশাহী থেকে উঠে আসা ৩১ বছর বয়সি বক্সার সেলিম। সেখানে এক বছরের জন্য তিনি গৃহযুদ্ধকবলিত দেশটিতে মূলত রাস্তাঘাট মেরামত ও নির্মাণে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল ইউনিটের হয়ে কাজ করছেন। কাজের ফাঁকে বক্সিং রিংয়ে নামার জন্য নিজেকে আলাদা করে তৈরিও করছেন তিনি। সেখানে বক্সিং রিং নেই। তবে জিমে ঘাম ঝরাচ্ছেন। বক্সিংয়ের কলাকৌশল ঝালিয়ে নিচ্ছেন দেশ থেকে নেওয়া ব্যক্তিগত সরঞ্জাম দিয়েই।
এরই মধ্যে সেলিমের জন্য প্যারিস অলিম্পিকের 'ওয়াইল্ড কার্ডে'র আবেদন করা হয়েছে বলে জানান মাজহারুল ইসলাম। তার কথা, 'সেলিমকে ঘিরে আমরা প্রথমবার কোনো অলিম্পিকে খেলার স্বপ্ন দেখছি। এশিয়াডে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সই তাকে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থখ্যাত অলিম্পিকে খেলার স্বপ্ন পূরণ করে দেবে বলে আশা করি। তাই বাংলাদেশ থেকে কেবল তার নামই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) কাছে পাঠানো হয়েছে।' তিনি যোগ করেন, 'তার ওয়াইল্ড কার্ড পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলেই আমরা সব ঠিক করছি।' সেলিম বলেন, 'অলিম্পিকে খেলার আগে অন্তত তিন মাস অনুশীলনের ?সুযোগ করে দেবেন স্যাররা। তখন থাইল্যান্ডে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে পারবো। অলিম্পিকের জন্যও যেটুকু সময় পাব, নিজের পুরোটা ঢেলে দিয়ে তৈরি হয়ে যেতে পারব, সেই বিশ্বাস আমার আছে।'