ভোটের লড়াইয়ে ক্রীড়াঙ্গনের তারকারা

প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বহু প্রত্যাশিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন আজ। সারা দেশের মানুষ আগামী পাঁচ বছরের জন্য সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে বেছে নেবেন তাদের জনপ্রতিনিধি। যারা নিশ্চিত করবে দেশের উন্নয়ন, দশের উন্নয়ন। ভোটের এই লড়াইয়ে লড়ছেন ক্রীড়াঙ্গনের একাধিক তারকাও। যারা একসময়ে ময়দান কাঁপিয়েছেন তারাই এখন রাজনীতির মাঠে। এ তালিকার সবার আগে নিশ্চিত ভাবেই নাম আসে মাশরাফি বিন মর্তুজার। পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালেও জাতীয় নির্বাচন করেছিলেন মাশরাফি। অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করায় তাকে আবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। নড়াইল-২ আসন থেকে মাশরাফি সংসদ নির্বাচনে এবারও লড়ছেন। মাশরাফির পথ ধরে এবার নির্বাচনে এসেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। মাগুরা-২ আসন থেকে সাকিব নির্বাচন করছেন। হয়েছেন নৌকার মাঝি। প্রথমবার রাজনীতির ময়দানে এসেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। ভোটারদের মন জয় করতে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন বাংলাদেশের সুপারস্টার। মাগুরাকে স্মার্ট সিটি বানানোর ঘোষণা দিয়ে সাকিব গিয়েছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। ভোটের প্রতিশ্রম্নতিও পেয়েছেন। মাশরাফির মতো এলাকায় সেভাবে জনপ্রিয়তা না থাকলেও নির্বাচনের মাঠে তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কেউ নেই। ফাঁকা মাঠেই সাকিব গোল দেবেন তা ধরেই নেওয়া হচ্ছে। মাশরাফি, সাকিবদের অভিভাবক বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও নির্বাচনী লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিলস্নুর রহমানের সন্তান হলেও এর মধ্যেই সফল ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন নাজমুল হাসান। কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে ২০০৯ সালে উপ-নির্বাচন দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। পরের দুই মেয়াদেও একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এবারও সেই পথেই আছেন তিনি। রাজনৈতিক মাঠে তাকে টক্কর দেওয়ার মতো নেই কেউ। বিসিবির আরেক পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবার নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মৌলভীবাজার-২ আসনে। ক্রিকেট ছেড়ে এবার ফুটবলে আসা যাক। যেখানে রয়েছে একাধিক পরিচিত নাম। জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী খুলনা-৪ আসনে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হলেও শেষ কয়েক বছরে তার নির্বাচনী এলাকায় তেমন উলেস্নখযোগ্য কাজ না হওয়ায় নতুন মুখের দিকে বেশি ঝুঁকছেন ভোটাররা। ২০১৮ সালে আব্দুস সালাম মুর্শেদী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তাকে জিততে হলে হারাতে হবে ৯ প্রার্থীকে। সাবেক জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল এবার নির্বাচন করছেন মানিকগঞ্জ-২ আসনে। বিসিবির সাবেক পরিচালক ও আওয়ামী লীগের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদককে লড়তে হচ্ছে শেষ দুইবারের সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজের সঙ্গে। এছাড়া তার আপন চাচাত ভাই শিল্পপতি দেওয়ান জাহিদ আহমেদও আছেন নির্বাচনের মাঠে। ফুটবল মাঠের আরেক সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় নেত্রকোনা-২ আসন থেকে নির্বাচনে লড়ছেন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও পরেরবার নৌকার টিকিট পাননি। এবারও পাননি। তবে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করে তিনি টেক্কা দিচ্ছেন নৌকার মাঝি আশরাফ আলী খান খসরুকে। বাফুফের চারবারের সহ-সভাপতি ও আবাহনীর ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর ইনচার্জ কাজী নাবিল আহমেদ নৌকার প্রতীক নিয়ে লড়ছেন যশোর-৩ আসনে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও একাধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে তার লড়াই হলেও জয়ের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী কাজী নাবিল। ফুটবল ফেডারেশনের আরেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিক নোয়াখালী-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। সক্রিয় রাজনীতিতে এবারই প্রথম নাম লিখিয়েছেন তিনি। ক্রীড়াঙ্গনের বেশিরভাগই এখন নির্বাচনমুখী। সরাসরি নির্বাচন না করলেও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে ক্রীড়া সংগঠকদের বেশিরভাগ ব্যস্ত নির্বাচনী প্রচারণায়। এছাড়া খেলোয়াড়দের অনেককেই দেখা যাচ্ছে প্রিয় প্রার্থীর জন্য রাজনৈতিক ময়দানে মাঠে নামতে, ভোট চাইতে। আর একটি দিনের অপেক্ষা। কার মুখের হাসি কতটা চওড়া হয় সেটাই দেখার।