মহাবিস্ফোরণের ১০-৪৩তম সে. (একের ভগ্নাংশ হারে একের পিঠে ৪৩টি শূন্য) তাপমাত্রা ছিল ১০৩২ ডিগ্রি কেলভিন (একের পিঠে ৩২টি শূন্য)। মহাবিস্ফোরণের স্থান (ঝঢ়ধপব) পরিব্যাপ্ত হচ্ছে অর্থাৎ মহাশূন্য প্রসারিত হচ্ছে। ফলে তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ৩ ডিগ্রি কেলভিন (বিশ্বের গড় তাপমাত্রা)। মহাবিশ্ব অতীতে যে হারে প্রসারিত হচ্ছিল বর্তমানে এর চেয়ে বেশি হারে প্রসারিত হচ্ছে। তাই যদি হয়, তা হলে তাপের কী হবে? আরও হ্রাস পাবে। ফলে মহাবিশ্বের তাপের মৃতু্য হবে। তিনভাবে এ ঘটনা ঘটতে পারে : (১) বিগ ক্রাঞ্চ (কৃষ্ণশক্তি বিপরীতমুখিতা), (২) অনির্দিষ্ট প্রসারতা (কসমোলজিক্যাল ধ্রম্নবক) এবং (৩) বিগ রিপ বা মহা বৃহৎ ফেটে যাওয়া (অপরিহার্যরূপে কৃষ্ণশক্তির অস্থিতিশীলতারূপে)।
বিগ ক্রাঞ্চ বা মহাচূর্ণ আর হবে না, কেননা প্রসারণ বন্ধ হয়ে সংকোচন হতে হলে ব্রহ্মান্ডের যে ভর থাকা দরকার ছিল, এর এক তৃতীয়াংশ ভর আছে। বরং বর্তমানে যে হারে অতীতের চেয়ে দ্রম্নত প্রসারিত হচ্ছে, এতে করেই ব্রহ্মান্ডের তাপের মৃতু্য হবে। তাপ নেই তো জীবন নেই। অনাদি বা অনন্তকাল ধরে ব্রহ্মান্ড কেবল প্রসারিত হচ্ছে। ব্রহ্মান্ড এখন তার শৈশবে। আরও অসংখ্য ঘটনা ঘটবে এর যবনিকাপাতের আগ পর্যন্ত। এখন থেকে ১১০ কোটি বছর পর আমাদের সূর্য এতই উত্তপ্ত হবে যে, পৃথিবীতে কোনো প্রাণ বেঁচে থাকবে না। আর সাড়ে ৭০০ কোটি বছর সূর্যের সব জ্বালানি যাবে ফুরিয়ে। বাইরের খোলসটা পড়বে খসে। ক্রমে ক্রমে এগিয়ে যাবে মৃতু্যর দিকে। সূর্যের ভবিষ্যৎ অনিবার্যভাবে আমাদের নিশ্চিত মৃতু্যতে নিমজ্জিত করবে। সূর্যের পেটে চলছে হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম তৈরির প্রক্রিয়া, এর অর্ধেকটা হাইড্রোজেন ফুরিয়ে যাবে সাড়ে ৪০০ কোটি বছরে। এর পেটের ভেতরের তাপমাত্র দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে আরও জ্বলবে ৬০০ কোটি বছর। তখন তার ঔজ্জ্বল্য হবে এখনকার দ্বিগুণ। সূর্য তার জ্বালানি হারিয়ে পরিণত হবে রেড জায়েন্ট বা লাল দৈত্যে'। এটি তখন এত বড় হবে যে, এটি চলে আসবে পৃথিবীর কাছাকাছি। গলে যাবে পৃথিবীর দেহ। কিন্তু এমনটি না ঘটে ভিন্ন কিছুও ঘটতে পারে। যেমন- সূর্যের আয়তন বাড়ার ফলে তার কিছু অংশ মহাশূন্যে ছিটকে বেরিয়ে গেল, ওর মহাকর্ষ গেল কমে, ফলে পৃথিবী সরে গিয়ে মঙ্গলগ্রহের দূরত্বে চলে গেল। কিন্তু এতে হয়ত পৃথিবীর দেহটা আপাতত রক্ষা পেল বটে কিন্তু জীবজগৎ বহু আগেই প্রচন্ড তাপের ফলে নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এদিকে মহাকাশীয় গ্রহ, নক্ষত্র এবং অন্য সব কিছুতে ভিন্ন ভিন্নরূপে মৃতু্যর যবনিকাপাত চলতে থাকবে। মহাবিশ্ব প্রসঙ্গে বই : ঞযব ভরাব ধমবং ড়ভ :যব ঁহরাবৎংব : ওহংরফব :যব ঢ়যুংরপং ড়ভ বঃবৎহরঃু- ভৎবফ ধফসধং ধহফ মৎবমড়ৎু ষধুঁযষরহ. এই বইতে মহাবিশ্বের আয়ুষ্কালকে ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে :
(১) ঢ়ৎরসড়ফরধষ বৎধ : ১০৫ বছর। এই যুগের ১০৪৩তম সে. আগে কী ঘটেছে, তা জানা যায় না। এটা মানব অবোধগণ্য, এখানে বিগ ব্যাংক শুরু। এখানে ইরম ইধহম হঁফবড়ংুহঃযবংরং হয়। এখানে তাপমাত্রা অকল্পনীয় ১০৩২ ডিগ্রি কেলভিন। চতুর্থদিকে কেবল আলোক দু্যতিময়তা। হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মতো মৌলের নিউক্লিয়াস তৈরি হয়। তৈরি হয় প্রোটন, ইলেক্ট্রন ও নিউট্রন কণা। কিন্তু ইলেক্ট্রন প্রোটনের চারপাশে ঘুরতে পারছিল না প্রচন্ড তাপের কারণে। সময় যত অতিবাহিত হতে থাকে, ততই অবস্থা পাল্টাতে থাকে, প্রোটন কণা ইলেক্ট্রনের সঙ্গে জোট বাঁধতে শুরু করে, তৈরি হয় হাইড্রোজেন পরমাণু। এই যুগের স্ফীতি বহুকাল ধরে চলেছে। (২) ঝঃবষষরভবৎড়ঁং বৎধ : ১০৬ বছর থেকে ১০১৪ বছর। বস্তুসমূহ সজ্জিত হয়েছে নক্ষত্রে, গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সি গুচ্ছে। অর্থাৎ নক্ষত্ররা জন্মাচ্ছে, আলো দিচ্ছে, নিঃশেষ হচ্ছে। এই যুগের শেষে নক্ষত্ররা শ্বেত বামন ও বাদামি বামনে পরিণত হয়। নিউক্লীয় জ্বালানি নিঃশেষ হয়ে আকাশ নিষ্প্রদীপ হবে এবং সর্বশেষ পরিণতি কৃষ্ণ বিবরে (ইষধপশ যড়ষব)। (৩) উবমবহবৎধঃব বৎধ : ১০১৫ বছর থেকে ১০৩৯ বছর। শ্বেত বামন ও বাদামি বামন নক্ষত্র থেকে খুব অল্পশক্তি নির্গত হয়। এই যুগে দিন বলে কিছু থাকবে না। থাকবে অন্তঃহীন রাত আর ঘোরতর ঠান্ডা, মাঝে মধ্যে একটু আলোর ফুলকি দেখা দেবে বটে। মৃতপ্রায় নক্ষত্রগুলোর মধ্যে ঘর্ষণে উদ্ভব ঘটবে সুপার নোভা আবার সেগুলোও বিস্ফোরিতও হবে। প্রোটনকে বলা হতো অবিনশ্বর কণা, কিন্তু না এর ক্ষয় অবশ্যম্ভাবী। শুধু ব্যাপারটা দীর্ঘমেয়াদি মাত্র। তাদের আয়ুষ্কাল ১০৩০ বছর থেকে ১০৪০ বছর। অর্থাৎ নিঃশেষ হবে প্রোটন। আর উৎপন্ন হবে গামা রশ্মি। ইষধপশ যড়ষব বৎধ : ১০৪০ বছর থেকে ১০১০০ বছর। এটি মহাবিশ্বের আয়ুষ্কালের চতুর্থ যুগ। এই যুগে পড়ে থাকবে প্রচুর কৃষ্ণ গহ্বর। তারা ভারী নক্ষত্রদের মরদেহ। তাদের ভর অত্যাধিক, তাই আকর্ষণ বলও বেশি। তাদের খাই স্বভাব একটু তীব্র। আশপাশের সবকিছু গিলে খায়। তাদের খিদে থেকে আলোও অব্যাহতি পায় না। তাদের দেহ হতে আলো প্রতিফলিত হয় না বলে টেলিস্কোপ দিয়ে তাদের সংকেত ধরা পড়ে না। বস্ন্যাকহোল সবকিছু চিরতরে গ্রাস করে ফেলে বিষয়টি পুরো সত্য নয়। বস্ন্যাকহোল থেকে অতিক্ষণ এক প্রকার বিকিরণও ঘটে। হকিং এটা অংক করে নির্ণয় করেছেন বলে এটা হকিং বিকিরণ নামে পরিচিত। বিকিরণ অত্যন্ত ক্ষীণ বলে বলবে, অনেক কাল ধরে। ক্ষীণ যতই হোক আর যত দীর্ঘকালই চলুক, বিকিরণের ফলে কিন্তু একটু একটু করে উবে যাবে বস্ন্যাকহোলের ভর। বস্ন্যাকহোলের ভর যত বেশি হোক না কেন, এর নিশ্চিহ্ন হতে ১০১০০ বছরের বেশি সময় লাগার কথা নয়। এই যুগের শেষে পড়ে থাকবে ফোটন, ইলেক্ট্রন, পটিট্রন এবং নিউট্রিনোস ইত্যাদি। (৬) ইষধপশ বৎধ বা কৃষ্ণ যুগ : ১০১০১ বছর থেকে ১০ বছর। ১২ এর মাস ১০১ থেকে বড়। এখানে এক সঙ্গে জুড়ে থাকার মতো কিছু নেই। থাকবে কিছু কণা : ইলেক্ট্রন, পজিট্রন ইত্যাদি। তারা স্রোতে ভেসে যাবে। আবার কখনো বা তৈরি করবে অস্থায়ী 'পজিট্রনিয়াম নামক অস্থায়ী পরমাণু। তারা নিজেরাই সংঘর্ষের ফলে বিলয় হবে। পড়ে থাকবে কিছু শক্তি। এরপর কী ঘটবে। এ প্রসঙ্গে পদার্থবিজ্ঞান আর এগোতে পারেনি।
যেহেতু তাপ উচ্চ তাপমাত্রা থেকে নিম্ন তাপমাত্রায় প্রবাহিত হয়, তাই কৃষ্ণ যুগের শেষে যেটুক শক্তি থাকবে, তাও আরও ছড়িয়ে পড়বে ফলে। তাপের মৃতু্য ঘটবে অনিবার্যভাবে। বিষয়টিকে তুলে ধরেন জার্মান বিজ্ঞানী ঐবৎসধহাড়হ যবষসযড়ষঃ (১৮২১-১৮৯৪), ১৮৫৪ সালে থার্মোডিনামিক্সের দ্বিতীয় সূত্রের আলোকে : ঐবধঃ ফবধঃয ড়ভ :যব ঁহরাবৎংব শিরোনামে।
অতি ক্ষুদ্র সুপার অ্যার্টম থেকে ১৫ বিলিয়ন বছর পূর্বে সৃষ্টি হওয়া মহাবিশ্বের ব্যাস ১৫৬ বিলিয়ন আলোকবর্ষ (ইৎরঃঃ, জড়নবৎঃ জড়ু, ঝঢ়ধপব পড়স. ২৪ গধু ২০০৪)। ১০১০১ বছরে মহাবিশ্বের আয়তন দাঁড়াবে বর্তমানের ১০৯১ গুণ এবং এরপর আরও বাড়বে। এত বড় মহাবিশ্বের মৃতু্য অনিবার্য হলে প্রাণের ভবিষ্যৎটা কী? আমরা বসবাস করছি স্টেলিফেরাস যুগে। স্টেলিফেরাস যুগের মধ্যেই কিন্তু প্রাণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে মনে হয়। প্রাণ নিশ্চিহ্ন হতে পারে বহুভাবে : পারমাণবিক যুদ্ধে, সংরক্ষিত বোমার ওপর উল্কাপাতের ফলে, উল্কাপাত, পরিবেশের বিপর্যয় যেমন- তাপের মৃতু্য ইত্যাদি।
পরিবেশের বদলের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ কী তার ভেক, ভোল তথা রূপ বদলে ফেলতে সক্ষম হবে? সেই সঙ্গে অন্যান্য প্রাণের। একটি খবরে জানা যায়, ২০৪৫ সালের পর মানুষ আর মরবে না। মানুষের চেতনা কী তখন কম্পিউটারে সন্নিবেশি, প্রতিস্থাপিত হবে? তাহলে তো সিঙ্গুলারিটির আর একটি অধ্যায় সূচিত হবে। আমাদের মতো মানব সভ্যতা উচ্চতর প্রজ্ঞার কোনো সভ্যতা যদি অন্য গ্রহে ১০ লাখ বছর আগে উদ্ভব ঘটে থাকে, তাহলে তারা হয়ত এতদিনে নিজেদের অদৃশ্য করে ফেলেছে কেবল আমরা দেখতে পাচ্ছি না মাত্র। হয়ত আমাদের আশপাশেই আছে তারা। কিংবা জিন কোড বদল করে ভিন্ন স্তরের উচ্চতর প্রজ্ঞাময় সত্তায় (প্রাণ) যাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন হবে না, তরল রক্তে চলবে অতিসূক্ষ্ণ মাত্রার কোনো শক্তির প্রভাবে।
ভিন্ন মতের বিজ্ঞানীরা এটাও বিশ্বাস করেন, ৯০ ভাগ কৃষ্ণ বস্তু যা গ্যালাক্সির চতুর্দিকে ঘিরে আছে, তারা এক সময় মহাজাগতিক প্রসারণকে বাধা দেবে, ফলে বিগ ব্যাং ও বিগ ক্রাঞ্চ পর্যায়ক্রমে চলতে থাকবে বা অর্থাৎ তাপের মৃতু্যর মধ্য দিয়ে মহাবিশ্বের অনিবার্য অবলুপ্তি ঘটবে না।
সুপার স্ট্রিং তত্ত্ব যা বিগ ব্যাংয়ের আগের যুগ ব্যাখ্যা করে। এই তত্ত্বে বিশ্ব ছিল অতিক্ষুদ্র ১০ মাত্রার বুদ্বুদ, যা ভেঙে ৬ মাত্রার বুদ্বুদের উদ্ভব হয় এবং এই ৬ মাত্রার বুদ্বুদ হঠাৎ গুটিয়ে আবার বিস্ফোরিত হয়ে ৪ মাত্রার মহাবিশ্ব গড়ে তোলে। সম্প্রতি বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের বই 'দ্য গ্রান্ড ডিজাইনে' দেখা যায় : ইউনিভার্সের ১১টি ডাইমেনসন রয়েছেন। বর্তমান ইউনিভার্সকে অতীতে নিয়ে গেলে দেখা যাবে, এর কোনো একক অতীত ছিল না, বরং বিগ ব্যাংয়ের মাধ্যমে ১০৫০০টি (একের ডানে ৫০০টি শূন্য) ইউনিভার্স তৈরি হয়েছিল। আমাদের মহাবিশ্ব সেগুলোর মধ্যে অতিসাধারণ একটি মহাবিশ্ব মাত্র। প্রশ্ন হলো- একটি মহাবিশ্ব যখন তাপের মৃতু্যর মধ্য দিয়ে উবে গিয়ে অবলুপ্ত হবে, তখন অন্য ইউনিভার্সিগুলো নিশ্চয়ই থেকে যাবে? তাহলে কী বিগ ব্যাং ও বিগ ক্রাঞ্চ চক্রাকারে অনুষ্ঠিত হয়েছে? হবে? মহাবিশ্বের কী কোনো একক সৃষ্টি মুহূর্ত নেই? আবার বস্ন্যাকহোল যখন উবে (বাধঢ়ড়ৎধঃব) যাবে তখন সিঙ্গুলারিটি তত্ত্বের কী হবে? তবে সিঙ্গুলারিটি চক্রাকারে আবর্তিত হবে?
'দ্য গ্রান্ড ডিজাইন' অনুযায়ী প্রত্যেক মহাবিশ্বের রয়েছে পৃথক পৃথক রীতিনীতি, পৃথক পৃথক ডাইমেনশন। এটি বুঝতে হলে ভাবুন, পাশাপাশি অনেক খেলার মাঠ, একেক মাঠে বলের সাইজ একেক রকম, মাঠের সাইজ আলাদা, রীতিনীতি আলাদা তেমনি এক বিশ্বের প্রোটন, ইলেক্ট্রন এত ছোট যে, খালি চোখে দেখা যায় না, অন্য বিশ্বের ইলেক্ট্রন হয়ত টেনিস বলের সমান, যার যার বিশ্বের গ্র্যাভিটিও আলাদা, আলাদা এই যে রীতিনীতি, এগুলো প্রকৃতির নিয়মের অপরিহার্য পরিণতি। গ্র্যাভিটি প্রকৃতি নিজেই তৈরি করে নিতে পারে। হকিং বলছেন, এখানে মহাশক্তির কোনো কলাকৌশল নেই।
গরপযরড় শধশঁ তার ারংরড়হ বইতে বলেছেন, মহাকাশীয় সভ্যতা হতে পারে : (১) নমুনা ও সভ্যতা : এখানকার জীবরা গ্রহের সব শক্তির নিয়ন্ত্রক। তারা আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, গ্রহের কেন্দ্র থেকে শক্তি উত্তোলন করতে পারে, সমুদ্র মন্থন করতে পারে, তাদের এত বেশি শক্তির প্রয়োজন যে, তারা গ্রহের সব সুপ্ত শক্তি কাজে লাগাতে পারে ইত্যাদি।
নমুনা ও সভ্যতা : এই সভ্যতার অধিপতিরা নক্ষত্র শক্তির নিয়ন্ত্রক। তাদের শক্তির প্রয়োজন এত বেশি যে, তারা গ্রহের শক্তিকে নিঃশেষ করে তাদের নক্ষত্র থেকেও শক্তি আহরণ করে। উুংড়হ ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, তারা তাদের উপনিবেশ নক্ষত্রের চারপাশে বিশাল গোলার্ধব্যাপী গড়ে তুলবে এবং নক্ষত্রের উৎপাদিত সবটুকু শক্তি কাজে লাগাতে পারবে। নমুনা ওওও সভ্যতা : এর অধিপতিরা নক্ষত্রের সবটুকু শক্তি নিঃশেষ করে দেয়। তারা প্রতিবেশী নক্ষত্রগুলোয়, নক্ষত্র গুচ্ছে পৌঁছে যায় এবং এমনকি তারা গ্যালাক্সীয় সভ্যতা গড়ে তোলে।
নমুনা ওও সভ্যতার অধিপতিরা তাদের বিশ্বের আয়ুষ্কাল পর্যন্ত অমরত্ব লাভ করে। তাদের শক্তির প্রয়োজন নমুনা ও সভ্যতার চেয়ে ১০ বিলিয়ন গুণ বেশি।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, মহাকাশীয় কোনো সভ্যতা নমুনা ওঠ মর্যাদায় পৌঁছে যাবে। তারা বিজ্ঞানের চতুর্থ স্তম্ভ মহাশূন্য সময়কে (ঝঢ়ধপব :রসব) নিপুণভাবে পরিচালনা করতে সমর্থ হবে। তারা লুপহোল, ওর্মহোলকে (ড়িৎসযড়ষব : ১০-৩৫স রহ ফরধসবঃবৎ) প্রশস্ত করতে সমর্থ হবে, যার মাধ্যমে বিশ্বগুলোর মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগে সমর্থ হবে। তারা বিশ্বের মৃতু্য থেকে মুক্ত হওয়ার সামর্থ রাখে।
ছঁধহঃঁস মানে হলো- খুব ক্ষুদ্র আর পড়ংসড়রড়মু মানে হলো- খুব বৃহৎ ব্রহ্মান্ডের মাহত্ম এখানে যে, এই দুই-এর কোনোটি প্রমাণসাপেক্ষ হলেও দর্শনযোগ্য নয়। কিন্তু তারা গুণময়।
মহাবিশ্বের প্রারম্ভে কিছু ছিল না : সময় না, স্থান না, বস্তু না, শক্তি না। ছঁধহঃঁস নীতি অনুসারে অনিশ্চয়তার সূত্র ধরে কিছুই না (ঘড়ঃযরহম) অস্থিতিশীল, 'কিছুই না'-এর মধ্যে ক্ষুদ্র কণা তৈরি হয়ে যায়। আর তাইতো হকিং বলছেন, শূন্যতায় কাউকে বোতাম টিপে শুরু করার দরকার পড়ে না। বিশ্ব তৈরি হয়েছে শূন্য শক্তি খরচ করে। বিশ্বে যত ম্যাটার এন্টিম্যাটার ও ফোটন আছে এবং এতে রয়েছে ধনাত্মক শক্তি এবং তার সিকি পরিমাণ ঋণাত্মক শক্তি রয়েছে গ্র্যাভিটিতে আর তার ফলে বিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ শূন্য। শূন্য থেকে সবকিছু নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছে। বই : ঠরংরড়হ-নু গরপযরড় কধশঁ :
যদি দুটি ধাতব চার্জহীন পেস্নট শূন্যে (ংঢ়ধপব) সমান্তরাল দূরত্বে রাখা হয় তখন ওই শূন্যস্থান (াধপঁঁস) শূন্য (বসঢ়ঃু) থাকবে না, সেখানে ইলেক্ট্রন ও প্রতি ইলেক্ট্রনের সৃষ্টি বিলয় হতে থাকবে। একে বলা হয় 'ঈধংরসরৎ বভভবপঃ'-এটা হলো চার্জহীন পেস্নটের আকর্ষণ। একে বিকশিত করে টাইম মেশিনের জন্য প্রাথমিক শক্তি উদ্ভব করা সম্ভব। ঐবরংবহনবৎম-এর অনিশ্চয়তার নীতি অনুসারে ইলেক্ট্রন একই সময় শক্তির বিভিন্ন স্তরে থাকে এবং ইলেক্ট্রন বিভিন্ন কক্ষপথে ঘুরে বেড়ায়। অর্থাৎ ইলেক্ট্রন বিভিন্ন 'সমান্তরাল অবস্থায় থাকতে পারে। মহাবিশ্বকে য়ঁধহঃরুব করতে পারলে একই সময় মহাবিশ্ব বিভিন্ন 'সমান্তরাল মহাবিশ্বাসে' অবস্থান করবে এবং এভাবে সঁষঃরাবৎংব উদ্ভব ঘটবে।
এই যে এত সমস্যা, যা প্রধানত পদার্থবিজ্ঞানের অন্তর্গত, এর সমাধান কোনো আধ্যাত্মিক মহাপুরুষ করে দেবেন বলে মনে হয় না। এর সমাধান লেখাপড়া জানা, কঠোর পরিশ্রমী মানব দরদি ও প্রজ্ঞাবান মানুষকেই করতে হবে। সেই মানুষের আরেকটি বিশেষ গুণ থাকতে হবে লক্ষ্যের প্রতি এক রৈখিক, ধ্যানী। বিজ্ঞানীরা প্রকৃতির সাধারণ নিয়মেই ধ্যানী। কিন্তু যারা বিজ্ঞানী হওয়ার চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য ধ্যানের প্রশিক্ষণ ভীষণ ফল বয়ে আনবে নিশ্চয়ই।
সম্প্রতি জার্মান প্রাণিতত্ত্ববিদরা দক্ষিণ আমেরিকায় বিশাল এক গিনিপিগের কঙ্কাল পেয়েছেন। এটির ওজন ছিল ৭০০ কিলোগ্রামের ওপর। এর নামও রাখা হয়েছে শিল্পীর নামে। এর দৈর্ঘ্য ছিল তিন মি. যেন একটা ষাঁড়। গোইয়া গিনিপিগ জীবিত ছিল ৩০ লাখ বছর আগে। ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তুলুন অতীত জ্ঞান ফিরে পাবেন, এমনকি অনাগত ভবিষ্যৎ সমস্যার সমাধান সূত্র খুঁজে পাবেন। চিত্রকর দান্তে এমন এক নরকের ছবি এঁকেছিলেন, যেখানে শুধু ঢোকা যায়, কিন্তু বেরোনো যায় না। এটি তো মিলে যায় বস্ন্যাকহোলের সঙ্গে। পিথাগোরাস বললেন, আলো ও বিদু্যৎ শূন্য স্থানের ভেতর দিয়ে তরঙ্গের আকারে সঞ্চালিত হয়। কিন্তু তিনি বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দিতে পারতেন না। এ জন্য তাকে অতীন্দ্রিয়বাদী বিজ্ঞানী বলা হতো। আলোর তরঙ্গ ধর্ম কিন্তু আজ প্রমাণিত। জড় জগতের সঙ্গে মানুষের চেতনার সংযোগ রয়েছে। আর এ কারণেই উচ্চতর প্রযুক্তি ছাড়াই পিথাগোরাস তা সম্ভব করে ফেলেছিলেন। শুধু বৈজ্ঞানিক সমস্যাই নয়, অতীত-ভবিষ্যতের সব সমস্যার সমাধান মানুষ তার নিজের মধ্যে খুঁজে পাবেন। 'যা আছে ভান্ডে তা আছে বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে।' চিন্তা শূন্য হউন, শূন্য মনে একটি সমস্যা চাপিয়ে দিন সমাধান বেড়িয়ে আসবে। ব্রহ্মান্ডের প্রতিটি দ্রব্য-অদ্রব্যের সঙ্গে আমরা নানা তরঙ্গ দ্বারা যুক্ত। যুক্ত বলেই ধ্যানে নিজেকে ও বিশ্বকে খুঁজে পাবেন।