সুপারনোভা বিস্ফোরণের রহস্য উন্মোচন

প্রকাশ | ১৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি
পৃথিবী নামের আমাদের এই গ্রহের অনেক গভীরে একটি প্রকান্ড গলন্ত শাঁস বা পড়ৎব (গোলাকার মূল অংশ) রয়েছে। এটা থেকে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে চৌম্বক ক্ষেত্র, যা আমাদের পৃথিবীকে সুরক্ষিত রাখছে মহাশূন্যের সৌরঝড় থেকে। আর পৃথিবীকে সুরক্ষা প্রদানকারী এ চৌম্বক ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়ে আছে ভূপৃষ্ঠ থেকে মহাশূন্য পর্যন্ত কয়েক হাজার মাইলব্যাপী। আর পৃথিবীর যোগাযোগব্যবস্থা, বিভিন্ন প্রাণীর স্থানান্তর ও আবহাওয়ার ধরন- সবকিছুই এ চৌম্বক ক্ষেত্রের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু আশঙ্কার কথা হচ্ছে, গত ২০০ বছরে এ চৌম্বক ক্ষেত্র ১৫ শতাংশ পরিবর্তিত হয়ে গেছে। আর বিজ্ঞানীদের মতে, এ কারণে পৃথিবীর চৌম্বক মেরু সম্পূর্ণ উল্টো দিকে ঘুরে যাচ্ছে! এর অর্থ হচ্ছে পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরু তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্থানচু্যত হয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে অবস্থান নেবে। বিজ্ঞানীদের মতে, এ ঘটনাটি ইতোমধ্যেই ঘটা শুরু হয়ে গেছে; কিন্তু প্রকৃত ঘটনাটি কখন ঘটতে যাচ্ছে সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন। আর এ রকম ঘটলে পৃথিবীর বাইরে যে ওজোন স্তর আছে, সৌরঝড় তা ভেদ করে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসবে। আর মানবজাতির জন্য এর ফল হবে চরমভাবে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী। শক্তি উৎপাদন ও সঞ্চালন ব্যবস্থা বা পাওয়ার গ্রিডগুলো ভেঙে পড়বে। পরিবর্তন ঘটাবে পৃথিবীর আবহাওয়ার, বাড়িয়ে দেবে ক্যানসারের ঝুঁকি। সম্প্রতি ডেনমার্কের এক গবেষণা বলছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের নিঃসরণ যতটা না দায়ী, তার চেয়ে অনেক বেশি দায়ী হচ্ছে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তন। ২ মহাজাগতিক বিস্ফোরণ বা সুপারনোভার রহস্যাবৃত সৌন্দর্য উন্মোচনের জন্য বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এবার নাসা তার শক্তিশালী টেলিস্কোপের মাধ্যমে এ মহাজাগতিক বিস্ফোরণের মূল বিষয়গুলো অনুসন্ধানের চেষ্টা শুরু করেছে। এ টেলিস্কোপের নাম ঞযব ঘঁপষবধৎ ঝঢ়বপঃৎড়ংপড়ঢ়রপ ঞবষবংপড়ঢ়ব অৎৎধু বা ঘঁঝঞঅজ. এ টেলিস্কোপের কিছু পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কোনো নক্ষত্র বিস্ফোরিত হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে এর ভেতরে তেজস্ক্রিয় গ্যাস ও পদার্থগুলো জমা হতে শুরু করে। ঠিক যেমন পানি ফুটতে শুরু করলে বুদ্বুদ জমা হতে থাকে সে রকম। নাসা ও ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকরা মিলে এবার ঈধংংরড়ঢ়বরধ অ নামে একটি নক্ষত্রের ওপর তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন। এ নক্ষত্রটি আজ থেকে ১১ হাজার বছর আগে বিস্ফোরণের মাধ্যমে সুপারনোভায় পরিণত হয়। এর আগে বিজ্ঞানীরা ধরতে পারছিলেন না, কেন কম্পিউটারে সিমুলেশনে তৈরি সুপারনোভার সঙ্গে বাস্তবের সুপারনোভা বিস্ফোরণের কিছুটা পার্থক্য আছে। পরে দেখা গেল, টাইটেনিয়াম-৪৪ এ পার্থক্যের জন্য দায়ী। আর এটাই ধরা পড়ে ঘঁঝঞঅজ টেলিস্কোপের লেন্সে। ২০১২ সালে এ টেলিস্কোপটি তার কাজ শুরু করার পর থেকে এটাই তার সবচেয়ে বড় আবিষ্কার। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, অচিরেই সুপারনোভা বিস্ফোরণের রহস্য উন্মোচন করা যাবে, যা কিনা মহাবিশ্বে প্রাণের স্পন্দন সৃষ্টির জন্য দায়ী।