শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১
হঠাৎ শীতের তীব্রতা

রাজধানীতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ

গত দেড় মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখের বেশি মানুষ প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার চিকিৎসা নিচ্ছেন
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। স্বজনরা রোগী নিয়ে ছুটছেন হাসপাতালে। ছবিটি শুক্রবার ঢাকা শিশু হাসপাতাল থেকে তোলা - নাজমুল ইসলাম

হঠাৎ শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এমনকি শুক্রবার বন্ধের দিনেও মহানগরের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগগুলোতে দেখা গেছে রোগীর ভিড়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার বহির্বিভাগে রোগী দেখা বন্ধ থাকায় জরুরি বিভাগে রোগীর চাপ বেড়েছে। সাধারণত ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে জরুরি বিভাগে আগে এত রোগী দেখা যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে গড়ে সারাদেশে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া এবং শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের মতো শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হয়ে তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম দেশব্যাপী রোগীদের তথ্যের রেকর্ড রাখে। তাদের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত দেড় মাসে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখের বেশি মানুষ। এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট এবং ডায়রিয়ায় ২৫ জন মারা গেছেন। এছাড়াও ১৫ নভেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত ডায়রিয়া প্রধান শীতকালীন অসুস্থতা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ রোগে মোট এক লাখ ৪৭ হাজার ৬৫১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে ৫২ হাজার ৪৫৬ জন তীব্র শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে ভুগেছেন। এসব রোগীর মধ্যে ২৩ জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে এবং দুইজন ডায়রিয়ায় আক্রায় হয়ে মারা গেছেন।

এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে শিশুদের আক্রান্তের হার। যাদের বেশিরভাগই শ্বাসতন্তের জটিলতা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছে। তাই শিশুদের প্রতি বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পেডিয়াট্রিক রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, শীতকালীন রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা এখন অনেক বেশি। মূলত জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিসহ শীতকালীন ডায়রিয়ারজনিত সমস্য নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন।

তিনি বলেন, এ অবস্থায় শিশুকে সুস্থ রাখতে শীতের কাপড় পরাতে হবে, মাথা ঢেকে রাখতে হবে, শিশুর মাথায় ঠান্ডা লাগানো যাবে না এবং বাড়ির বাইরে শিশুদের নিয়ে অহেতুক ঘোরাঘুরি করা যাবে না। এছাড়াও ছয় মাসের কম বয়সি শিশুদের ঘন ঘন স্তনপান করানোর পাশাপাশি এর বেশি বয়সিদের বুকের দুধ ছাড়াও মৌসুমি সবজি, ফল খাওয়ানোর পরামর্শ দেন এ বিশেষজ্ঞ। অন্যদিকে শিশুর নাক পরিষ্কার রাখাসহ ফার্মেসি থেকে শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো না খাওয়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হওয়ার বড় ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে শিশু বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি। যাদের বেশিরভাগই অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের হার বেশি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে