সন্ধ্যা তারা

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

আবু হেনা মোস্তফা কামাল
সূর্য তখনো সন্ধ্যার আকাশে হেলে পড়ে নাই, দুই জোড়া পা হেঁটে চলেছিল ধুলো উড়া পথে। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্তির,আস্তরণ ভর করে আসছিল ধীরে ধীরে, যেমন করে উঁইপোকা মাটির ঢিবি তৈরি করে বাঁশের বেড়ায়। আমাদের এই পথের শুরু সকালের সূর্য দেখে দেখে, ধুলোর উপরে ঘাস, তাকে ঘিরে শিশির জমে যে জলের ফোঁটা তৈরি হয় তারাও যেন এক একটা সূর্য হয়ে চোখের ভেতর আলোর রং ছড়িয়ে পথের দিশা দেখিয়ে দিত। মহিপুরের তিস্তা পেড়িয়ে আমরা যখন শুকনো তপ্ত বালুতে গা শুকাচ্ছিলাম তখন শিক্ষিত শয়তান রাস্তা পেড়িয়ে রমজান মাস চলে এসেছিল। আমাদের গল্পের শুরুটা এমন করেই। এরপর আমরা হেঁটেছি, শুধু হেঁটেছি উঁইপোকায় ভরে যাওয়া পায়ের ওপর ভর করে। হাঁটতে হাঁটতে পথের পাশে সন্ধ্যার আবিরমাখা সূর্যকে হারিয়ে যেতে দেখেছি অন্ধকারের ভেতর। তোমার চোখে তখন আকাশের নয়নতারার জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের বিশাল মেলা। আমার চোখ আটকে ছিল চাঁদের পাশে মিটিমিটি জ্বলতে থাকা সন্ধ্যা তারায়। মানুষ মরে গেলে তারা হয়ে জ্বলে অন্ধকারের আকাশ গঙ্গায়। আমি চুপটি মেরে বসে থাকি চাঁদের পাশের ওই তারাটি হয়ে। তারাও একদিন মরে যায়। মানুষ মরে গেলে তারা হয়, তারা মরে গেলে কি হয় আমার জানা নেই। কখনো যদি তুমি জেনে ফেল তারার পুনর্জন্মের নাম ও অবস্থান জানিয়ে দিও ঘুড়ির লেজে চিঠি উড়িয়ে। আকাশ থেকে এখনো মহিপুর দেখি, দেখি শিক্ষিত শয়তান রাস্তা। সেই রাস্তায় শুধু তোমাকে আমাকে খুঁজে পাই না আর। উঁইপোকায় এখন মাটির ঢিবি বানায় রাস্তায় মরে যাওয়া গাছের গুঁড়িটায়। আমি স্থির হয়ে মিটমিট করে জ্বলছি শুধু চাঁদের পাশের ওই সন্ধ্যা তারাটা হয়ে।