বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

সাড়ে ৩৩ কোটি টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় চট্টগ্রাম বারের ৮ হাজার আইনজীবী

আইন ও বিচার ডেস্ক
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সাড়ে ৩৩ কোটি টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় চট্টগ্রাম বারের ৮ হাজার আইনজীবী
সাড়ে ৩৩ কোটি টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় চট্টগ্রাম বারের ৮ হাজার আইনজীবী

১৩১ বছর আগে ১৭ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি। এখন এর সদস্যসংখ্যা ৮ হাজারের মতো। বেসরকারি ব্যাংকে রাখা সমিতির ফিক্সড ডিপোজিটের (এফডিআর) টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সদস্যরা।

বিশেষ করে এফডিআরের ৩৩ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৮৩২ টাকার মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যাংকগুলোতে আছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। এ নিয়ে সাধারণ আইনজীবীরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ।

ব্যাংকিং সেক্টরে সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে অন্য গ্রাহকদের মতো আইনজীবীদের মধ্যেও আতঙ্ক ভর করেছে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা এফডিআরের সব টাকা সোনালী ব্যাংকে (কোর্টহিল শাখা) সরিয়ে না আনলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন সাধারণ আইনজীবীরা।

এই অবস্থায় আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির এক সভায় বেসরকারি ব্যাংকে থাকা এফডিআরের টাকা সোনালী ব্যাংকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক। তবে সেটা কবে নাগাদ সম্ভব হবে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি।

আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে ৫৪ দফায় বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকে টাকা রাখা হয়। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই সব ব্যাংকের এফডিআর হিসাবে রাখা টাকার স্থিতি দাঁড়ায় ৩৩ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৮৩২ টাকা।

এর মধ্যে ২৪ কোটি ৭২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৩২ টাকার এফডিআর রয়েছে এবি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকের মতো সবল ব্যাংকগুলোতে। আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, এসআইবিএল, ইউনিয়ন ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ও গেস্নাবাল ব্যাংকের মতো দুর্বল ব্যাংকগুলোতে রয়েছে ৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

জানা যায়, ব্যাংকে টাকা রাখার ক্ষেত্রে সমিতির নির্বাচিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত তিন সাধারণ সম্পাদকের সময়েই সবচেয়ে বেশি টাকা রাখা হয়েছে। আর বিএনপি-সমর্থিত দুই সাধারণ সম্পাদকের সময়ে রাখা হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

তিনবার সমিতির সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী আওয়ামী লীগ সমর্থিত অ্যাডভোকেট এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন বলেন, 'আমি দায়িত্ব পালনকালে সব ব্যাংক ভালো অবস্থানে ছিল। সমিতির নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে সদস্যদের লাভের কথা চিন্তা করেই এফডিআরগুলো করা হয়।'

বিএনপি সমর্থিত বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক বলেন, 'আমাদের সময় এফডিআর বেশি হয়নি। তা ছাড়া দুর্বল কোনো ব্যাংকে এফডিআর করা হয়নি।' তবে ব্যাংকে চলা অস্থিরতা অচিরেই কেটে যাবে বলে আশা করছেন এ আইনজীবী নেতা।

আইনজীবী সমিতির সদস্যরা জানান, ২০১৩ সালের ১৯ আগস্ট সাধারণ সভার মাধ্যমে সব ব্যাংকে থাকা এফডিআর চট্টগ্রাম কোর্টহিল এলাকার সোনালী ব্যাংকে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত না হয়ে উল্টো এফডিআর করা হয়েছে বেসরকারি ব্যাংকে। এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ আইনজীবীরা।

সাধারণ আইনজীবীদের ক্ষোভ যৌক্তিক উলেস্নখ করে সমিতির সাবেক সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মঈনুদ্দিন বলেন, সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোনালী ব্যাংকে এফডিআর করলে আজকের মতো টাকা না পাওয়ার অবস্থা তৈরি হতো না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে